• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
logo

আজ অযোধ্যা মামলার রায়, ১৬ হাজার সৈন্য মোতায়েন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, আরটিভি অনলাইন

  ০৯ নভেম্বর ২০১৯, ০৮:৪৭
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট
ছবি সংগৃহীত

অযোধ্যা মামলার রায় আজ শনিবার ঘোষণা করবে সুপ্রিম কোর্ট। শুক্রবার রাতে সুপ্রিম কোর্ট জানান, প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ আজ শনিবার স্থানীয় সকাল সাড়ে ১০টায় স্পর্শকাতর মামলাটির রায় ঘোষণা করবে।

উত্তরপ্রদেশের মুখ্যসচিব রাজেন্দ্রকুমার তিওয়ারি ও পুলিশের ডিজি ওমপ্রকাশ সিংহকে শুক্রবার দুপুরে নিজের চেম্বারে ডেকে পাঠিয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। অযোধ্যাসহ রাজ্যের নিরাপত্তার আগাম কী ব্যবস্থা করা হয়েছে, তা নিয়ে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনের দুই শীর্ষ কর্মকর্তার কথা হয়। তখনও স্পষ্ট ছিল না, কবে অযোধ্যা মামলার রায়।

রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ বিতর্কিত জমি মামলার রায়ের জন্য অযোধ্যাকে ইতোমধ্যেই নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে। উত্তরপ্রদেশে আগেই চার হাজার আধাসেনা পাঠিয়েছে কেন্দ্র। আর কেবল অযোধ্যা জেলাতেই মোতায়েন করা হয়েছে ১২ হাজার পুলিশ।

এছাড়া দিল্লি, মুম্বাইসহ সারা দেশের ৭৮টি বড় রেল স্টেশনের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। আজ উত্তরপ্রদেশের সব স্কুল-কলেজও বন্ধ রাখা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ বৃহস্পতিবারই প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে প্রশাসন এবং পুলিশের শীর্ষ কর্মকর্তাদের সঙ্গে নিরাপত্তা প্রস্তুতি নিয়ে বৈঠক করেন। লখনৌ এবং অযোধ্যায় দুটি হেলিকপ্টার মোতায়েন রাখার সিদ্ধান্ত হয়।

আর শুক্রবার রাত থেকেই পুরো উত্তরপ্রদেশে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বুধবার মন্ত্রী পরিষদের বৈঠকে নির্দেশ দিয়েছেন, অযোধ্যায় রায় নিয়ে কোনও অগোছালো মন্তব্য করা চলবে না।

নিরাপত্তা জোরদার করা হচ্ছে অন্য রাজ্যেও। কলকাতার পুলিশ কমিশনার সব থানার ওসিকে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সতর্ক থাকার নির্দেশ পাঠিয়েছেন। উত্তরাখণ্ড, দিল্লি, মধ্যপ্রদেশ ও জম্মুর স্কুল-কলেজও শনিবার বন্ধ রাখা হচ্ছে। প্রধান বিচারপতিসহ অযোধ্যা বেঞ্চের পাঁচ বিচারপতির জন্য বাড়তি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

তবে শনিবারই যে রায় ঘোষণা হবে, তা কেউ ভাবেননি। প্রধান বিচারপতি গগৈ অবসর নেবেন ১৭ নভেম্বর। আগামী সপ্তাহে সোম ও মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টে ছুটি। ফলে ধরে নেয়া হয়েছিল, বুধ থেকে শুক্রবারের মধ্যে কোনও দিন রায় ঘোষণা হবে। কারণ ওই তিনটিই কর্মদিবস বাকি ছিল। এদিকে শনিবার ছুটির দিনে সুপ্রিম কোর্টের এমন রায় ঘোষণা প্রায় নজিরবিহীন। আচমকা শনিবার রায় ঘোষণার সিদ্ধান্ত আসলে অশান্তি তৈরির পরিকল্পনা করার আগেই তা রোখার চেষ্টা বলে মনে করা হচ্ছে।

রামমন্দির নির্মাণ বিজেপির ইশতেহারে থাকলেও মোদি সরকারের অবস্থান ছিল, আদালতই শেষ কথা বলবে। কংগ্রেস ও অন্য বিরোধী দলগুলোও আদালতের রায়ে আস্থা রাখার কথা বলেছে। ৬ আগস্ট থেকে টানা ৪০ দিন ধরে অযোধ্যা মামলার শুনানির পরে ১৬ অক্টোবর রায় সংরক্ষিত রেখেছিল সুপ্রিম কোর্ট। ১৯৭৩ সালের কেশবানন্দ ভারতীর মামলার পর আর কোনও মামলায় এতো দীর্ঘদিন সাংবিধানিক বেঞ্চে শুনানি হয়নি।

অযোধ্যার রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদের ২.৭৭ একর বিতর্কিত জমি আইনি লড়াইয়ের সূত্রপাত ১৯৫০ সালে। রামলালার ভক্ত গোপাল সিংহ বিশারদ বাবরি মসজিদকেই রামের জন্মভূমি দাবি করে সেখানে পুজোর অধিকার চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন। তার আগেই বাবরি মসজিদে রামলালার মূর্তি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। পরমহংস রামচন্দ্র দাস ওখানেই পুজোর দাবি করে মামলা করেন।

১৯৬১ সালে উত্তরপ্রদেশের সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড জমির অধিকার চেয়ে আদালতে যায়। ‘রামলালা বিরাজমান’ নিজেও মামলার পক্ষ হয়ে ওঠেন। দেবতার হয়ে তার ‘সখা’, এলাহাবাদ হাইকোর্টের সাবেক বিচারপতি দেবকীনন্দন আগরওয়ালের প্রধান দাবি, রামের জন্মভূমিই দেবতার চরিত্র পেয়েছে।

তবে ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বাবরি মসজিদ ধ্বংসের পর সব মামলাই এলাহাবাদ হাইকোর্টে চলে আসে। ২০১০ সালে এলাহাবাদ হাইকোর্ট রায় দিয়েছিল, সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড, নির্মোহী আখাড়া, রামলালার মধ্যে জমি সমান ভাগে করে দেয়া হোক। এর ফলে হিন্দুরা পায় জমির তিন ভাগের দুই ভাগ। মুসলিমরা এক ভাগ। এর বিরুদ্ধে সব পক্ষই সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে। রামলালা বিরাজমানের আইনজীবীরা দাবি করেন, রামের জন্মভূমি দেবতা-স্বরূপ। তার ভাগ হয় না।

মন্তব্য করুন

daraz
  • আন্তর্জাতিক এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh