মান্না দে’র সেই কফি হাউসে বাংলা বলা নিষেধ
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা কফি হাউসে বাংলায় কথা বলা যাবে না। হিন্দিতে কথা বলতে হবে। কলেজ স্ট্রিট কফি হাউসের একজন কর্মী এই কথা জানিয়েছেন বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে করা এক তরুণীর পোস্টে বিতর্ক শুরু হয়েছে। খবর ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজারের।
বৃহস্পতিবার এ নিয়ে কফি হাউসটির সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করেন কয়েকজন। এতে যোগ দেয় বাংলা ভাষার প্রচার নিয়ে কাজ করা একটি সংগঠনও। কফি হাউস কর্তৃপক্ষ অবশ্য এ দিন এই তরুণীর বিরুদ্ধে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় অভিযোগ করেছে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করা এই তরুণীর নাম ইন্দ্রাণী চক্রবর্তী। তার দাবি, বুধবার বিকেলে তারা তিন বন্ধু কফি হাউসটিতে যান। মোবাইল ফোনে চার্জ দেয়া নিয়ে কফি হাউসের এক কর্মীর সঙ্গে তাদের কথা কাটাকাটি হয়।
ইন্দ্রাণী বলেন, সপ্তাহে অন্তত একদিন আমরা কফি হাউসে যাই। আগেও অনেকবার মোবাইলে চার্জ দিয়েছি, সমস্যা হয়নি। কিন্তু বুধবার আমাদের বলা হয় চার্জ দেয়া যাবে না। কারণ জানতে চাইলে আমাদেরকে বলা হয়, মালিকের সঙ্গে কথা বলুন।
তিনি বলেন, আমরা জানি যে কফি হাউসের মালিক বলে কেউ নেই। একটি সমবায় এই কফি হাউস চালায়। পরে কথিত মালিকের সঙ্গে কথা বলতে গেলে তিনি বলে দেন, হিন্দিতে কথা বলতে হবে। কারণ তিনি বাংলা বোঝেন না।
ইন্দ্রাণী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিখেছেন, আবার হিন্দিতে চার্জ দেয়ার অনুরোধ জানাতে এই ব্যক্তি বলেন, হামনে একবার বোল দিয়া, নেহি হোগা। আব নিকলো রুমসে। ইয়ে তো বঙ্গালি হ্যায়। ইস রুমমে বাংলা নেহি চলেগা।
ইন্দ্রাণী বলেন, এরপর মান্না দে-এর প্রসঙ্গ তুলে আমরা বলি, তার গান শুনেই নতুন প্রজন্ম কফি হাউস চিনেছে। তিনিও তো বাঙালিই! তখন এই কথিত মালিক বলেন, মান্না দে কৌন হ্যায়? যিনি আমাদের তার ঘরে নিয়ে যান তিনি বলেন, জানি না। অত বকব না। এখানে বাংলা বলা যাবে না, বেরিয়ে বাংলা বলুন।
বৃহস্পতিবার কফি হাউসটির সামনে বিক্ষোভে অংশ নেয়া সংগঠনটির পক্ষে দীপাঞ্জন অনন্যা বসু বলেন, কফি হাউস বাঙালির চেতনায় একটা বিশেষ জায়গা নিয়ে আছে। এখানে বাংলায় কথা বলতে কেউ নিষেধ করছেন, এটা ভাবা যায় না!
এদিকে কফি হাউস পরিচালনা সমিতির সম্পাদক তপন পাহাড়ি বললেন, আমাদের কোনও কর্মী এমন কথা বলতে পারেন শুনে বিশ্বাস হচ্ছে না। তবু যদি বলেও থাকেন, যাকে বলা হয়েছে তিনি কফি হাউসের পরিচালনা সমিতিতে অভিযোগ জানাতে পারতেন।
তিনি বলেন, এই বিষয় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করার তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমরা তার বিরুদ্ধে আমহার্স্ট স্ট্রিট থানায় অভিযোগ করেছি। অন্যদিকে ইন্দ্রাণীর দাবি, তার সঙ্গে যে ব্যবহার করা হয়েছে, সেটাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানানো হয়েছে।
কে/পি
মন্তব্য করুন