ভারত-পাকিস্তানের যুদ্ধে সাড়ে ১২ কোটি মানুষ মরবে: গবেষণা
ভারত ও পাকিস্তান পরমাণু যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে সাড়ে ১২ কোটি মানুষ নিহত হবে এবং বৈশ্বিক জলবায়ু বিপর্যয় নেমে আসবে বলে এক গবেষণায় বলা হয়েছে। খবর ভারতের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার।
এই গবেষণার সহ-লেখক এবং যুক্তরাষ্ট্রের রুটগার্স ইউনিভার্সিটি-নিউ বার্নসউইকের অধ্যাপক অ্যালান রবক বলেন, এমন একটি যুদ্ধ শুধু যেখানে বোমা ফেলা হবে সেখানকার জন্য হুমকি নয়, সারা বিশ্ব এর লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত হতে পারে।
সায়েন্স অ্যাডভানস নামের এক সাময়িকীতে প্রকাশিত এই গবেষণায় বলা হয়, ২০২৫ সালে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে যুদ্ধ হতে পারে। আসন্ন এই যুদ্ধের ভয়াবহতার চিত্র তুলে ধরতে গবেষণাটি পরিচালিত হয়।
গবেষণাটিতে বলা হয়, কাশ্মীর নিয়ে ইতোমধ্যে এই দুই প্রতিবেশী দেশ বেশ কয়েকবার যুদ্ধের কাছাকাছি পৌঁছে যায়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ২০২৫ সালের আগে উভয় দেশ ৪০০ থেকে ৫০০টি পরমাণু অস্ত্র সংগ্রহ করবে।
গবেষকদের মতে, পৃথিবীর গাছপালা ১৫ থেকে ৩০ শতাংশ এবং মহাসাগরগুলোর উৎপাদনশীলতা পাঁচ থেকে ১৫ শতাংশ কমে যাবে। এসব ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে দশ বছরের বেশি সময় লেগে যেতে পারে বলেও উল্লেখ করা হয়েছে গবেষণাটিতে।
রবক বলেন, বিশ্বের নয়টি দেশের কাছে পরমাণু অস্ত্র আছে কিন্তু ভারত ও পাকিস্তান দ্রুতগতিতে তাদের অস্ত্রের পরিমাণ বাড়াচ্ছে। তাই কাশ্মীর নিয়ে এই দুই দেশ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার আগেই এর পরিণতির কথা ভাবতে হবে।
গবেষকদের মতে, ২০২৫ সালের পরমাণু অস্ত্রগুলোর বিস্ফোরণ ক্ষমতা হবে ১৫ কিলোটন। উল্লেখ করার মতো বিষয় হলো ১৯৪৫ সালে জাপানের হিরোশিমায় যুক্তরাষ্ট্রের ফেলা বোমাটির বিস্ফোরণ ক্ষমতা ছিল কয়েকশ’ কিলোটন।
তাই ভারত ও পাকিস্তান যুদ্ধে জড়িয়ে পড়লে এর প্রত্যক্ষ প্রভাবে পাঁচ থেকে সাড়ে ১২ কোটি মানুষ নিহত হবে। এছাড়া গণ-অনাহারের কারণে বিশ্বব্যাপী অসংখ্য মানুষের মৃত্যুর সম্ভাবনা আছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে গবেষণাটিতে।
রবক বলেন, কোনও যুক্তিযুক্ত পরিস্থিতিতে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করা যাবে না। কিন্তু দুর্ঘটনা বা ছিনতাই এবং বিশ্বনেতাদের আতঙ্ক বা মানসিক বিকারগ্রস্ততার ফল হিসেবে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার দেখা যেতে পারে।
রবকের মতে, দুর্ঘটনাক্রমে পারমাণবিক অস্ত্রের ব্যবহার রোধের একমাত্র উপায় হলো এগুলো ত্যাগ করা।
কে/সি
মন্তব্য করুন