নিউজিল্যান্ডে মসজিদে হামলায় জীবিতদেরকে অনুদানের অর্থ দান ডিম বালকের
নিউজিল্যান্ডে দুটি মসজিদে হামলায় জীবিতদেরকে এক লাখ অস্ট্রেলীয় ডলার দান করলেন অস্ট্রেলিয়ার ‘ডিম বালক’ উইল কনোলি। এই অর্থ তিনি আইনি সহায়তার জন্য অনুদান হিসেবে পান।
বুধবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানায় বিবিসি বাংলা। গত মার্চে অস্ট্রেলিয়ায় চরম ডানপন্থি সিনেটর ফ্রেজার অ্যানিংয়ের মাথায় ডিম ভাঙার পর ‘ডিম বালক’ হিসেবে পরিচিতি পান ১৭ বছরের কনোলি।
গত ১৫ মার্চ নিউজিল্যান্ডের সাউথ আইল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ শহরে আল নূর এবং লিনউড মসজিদে পরপর হামলা করেন ব্রেনটন ট্যারেন্ট নামের এক ২৮ বছর বয়সী অস্ট্রেলিয়ান নাগরিক।
এতে ৫০ জন নিহত এবং ৫০ জন আহত হন। হামলার ৩৬ মিনিট পর তাকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয় স্থানীয় পুলিশ। নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আরডার্ন এটাকে সন্ত্রাসী হামলা বলে উল্লেখ করেন।
পরে তিনি দেশটির সংসদের একটি বিশেষ অধিবেশনে বলেন, মসজিদে হামলাকারীকে সর্বোচ্চ শাস্তি ভোগ করতে হবে। হামলাকারী অনেক কিছু ভাবতে পারেন কিন্তু কুখ্যাতি ছাড়া তিনি কিছুই পাননি।
এদিকে অ্যানিং এক বিবৃতিতে বলেন, নিউজিল্যান্ডে রক্তপাতের প্রকৃত কারণ হলো ইমিগ্রেশন প্রোগ্রাম। কারণ এর ফলে মুসলিম ধর্মান্ধদেরকে নিউজিল্যান্ডে বসবাসের অনুমতি দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, বিষয়টি পরিষ্কার করে বলছি, আজ মুসলিমরা হামলার শিকার হয়েছে, সাধারণত তারাই কুকর্মকারী। বিশ্বব্যাপী মুসলিমরা একটি বিশ্বাসের ভিত্তিতে মানুষ খুন করছে।
এরপর ১৬ মার্চ মেলবোর্নে এই সিনেটর যখন সংবাদ সম্মেলন করছিলেন, তখন কনোলি পেছন দিক থেকে তার সঙ্গে বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হন। এই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।
এরপর কনোলির জন্য অনলাইনে অর্থ সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়, যেন এই বালক আরও ডিম কিনতে পারে এবং তার আইনি খরচ মেটাতে পারে। পুলিশ অবশ্য তার বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ করেনি।
মঙ্গলবার কনোলি জানায়, অনলাইনে তার জন্য যে অর্থ সংগৃহীত হয়, তা তিনি নিউজিল্যান্ড চ্যারিটিকে দান করেছেন। তিনি বলেন, আশা করি এতে এই ঘটনায় জীবিতরা কিছুটা হলেও স্বস্তি পাবে।
গত মার্চ মাসে অস্ট্রেলিয়ার টেন নেটওয়ার্ককে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে কনোলি বলেন, আমি বুঝতে পারছি যে আমি যেটা করেছি, সেটা ঠিক হয়নি। কিন্তু এই ডিম মানুষকে একতাবদ্ধ করেছে।
এদিকে অ্যানিং তার মন্তব্যের জন্য জন্য ক্ষমা চাইতে অস্বীকৃতি জানান। যদিও তার ক্ষমা চাওয়ার পক্ষে ১৪ লাখ মানুষ একটি পিটিশনে সই করেন। ১৮ মে অস্ট্রেলিয়ার সিনেট নির্বাচনে হেরেছেন তিনি।
কে/এসএস
মন্তব্য করুন