প্রশান্ত মহাসাগর পাড়ি দিলেন অন্ধ জাপানি নাবিক
জাপানি এক অন্ধ নাবিক কোনও বিরতি ছাড়াই প্রশান্ত মহাসাগর পাড়ি দিয়েছেন। এই প্রথম কোনও দৃষ্টিহীন ব্যক্তি এমন অভিযানে অংশ নিয়েছেন এবং সফলও হয়েছেন। ৫২ বছর বয়সী মিৎসুহিরো ইওয়ামোটো একটি সাইটেড ন্যাভিগেটর বা দৃষ্টিশক্তিসম্পন্ন একজন ব্যক্তির দিক নির্দেশনার সাহায্যে ১৪ হাজার কিলোমিটার সমুদ্রপথ পাড়ি দেন। খবর বিবিসি বাংলার।
আর এজন্য তার সময় লাগে পুরো দুই মাস। এই দুই মাসের পুরোটা সময় সমুদ্রেই ছিলেন ইওয়ামোটো। কোথাও এক রাতের জন্যও যাত্রাবিরতি নেননি।
এই দীর্ঘ যাত্রার পর শনিবার সকালে তার ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের ইয়ট বা পালতোলা নৌকাটি ফুকুশিমার বন্দরে নোঙর করে। ইওয়ামোটো গত ২৪ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া থেকে যাত্রা শুরু করেন। সে সময় মার্কিনি দিক নির্দেশক ডগ স্মিথ তার সাথে ছিলেন।
তবে এবারই প্রথম নয় এর আগেও এমন একটি দুঃসাহসী অভিযাত্রায় বেরিয়ে পড়েছিলেন ইওয়ামোটো। তাও সেটা প্রায় ছয় বছর আগে ২০১৩ সালের জানুয়ারি মাসে। কিন্তু তখন সফলতার মুখ দেখেননি তিনি।
কেননা তার নৌকাটি মাঝ পথে হাঙ্গরের হামলার মুখে পড়ে। আর তাতে তার নৌকাটির ডুবে যেতে শুরু করে। পরে জাপানের সেনাসদস্যরা তাকে উদ্ধার করে।
ইয়াকি বন্দরে তার ইয়টটি ভিড়লে তিনি স্থানীয় গণমাধ্যম কোদোয়ো নিউজকে দেয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, এতদিনের চ্যালেঞ্জটি দ্বিতীয়বারের চেষ্টায় সফল হওয়াটা যেন স্বপ্ন সত্যি হওয়ার মতোই ব্যাপার। এসময় নিজেকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুখী মানুষ হিসেবেও বর্ণনা করেন তিনি।
মাত্র ১৬ বছর বয়সে দৃষ্টিশক্তি হারান ইওয়ামোটো। এমন পরিস্থিতিতেও তিনি তার সহযাত্রী স্মিথের মৌখিক পথ নির্দেশনা এবং বাতাসের গতিপথ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় উপদেশ এবং সম্ভাব্য দুর্ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় পরামর্শ মেনে ইয়টটি এক নাগাড়ে চালিয়ে যান।
জাপান ব্লাইন্ড সেইলিং অ্যাসোসিয়েশন জানিয়েছে, ইওয়ামোটোই বিশ্বের প্রথম কোনও অন্ধ ব্যক্তি যিনি কোনও বিরতি ছাড়া পুরো প্রশান্ত মহাসাগর সফলতার সাথে অতিক্রম করতে পেরেছেন।
জাপানি এই নাগরিক বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার উপকূলীয় শহর সান ডিয়েগোতে বসবাস করেন। নিজের সমুদ্র যাত্রা নিয়ে ইওয়ামোটো তার ওয়েবসাইটে লিখেছেন, আমরা এই যাত্রাটি কেবল ব্যক্তিগত অর্জনের জন্যই করিনি, বরং এর মাধ্যমে আমি একটি বার্তা দিয়েছি যে মানুষ যখন একত্রিত হয় তখন সব কিছুই সম্ভব হতে পারে।
তিনি এবং স্মিথ মূলত একটি দাতব্য সংস্থার অর্থ উপার্জনের জন্য এবং অন্ধত্ব সৃষ্টিকারী রোগ প্রতিরোধের প্রচেষ্টায় এই সমুদ্র যাত্রা করেন।
এ
মন্তব্য করুন