গ্রেপ্তার করতে বাসায় পুলিশ, আত্মহত্যা পেরুর সাবেক প্রেসিডেন্টের
ঘুষ নেয়ার অভিযোগে পেরুর সাবেক প্রেসিডেন্ট অ্যালান গার্সিয়াকে গ্রেপ্তার করতে তার বাসায় গিয়েছিল পুলিশ। এসময় ফোন কল করার কথা বলে একটি কক্ষে গিয়ে গ্রেপ্তার এড়াতে নিজের মাথায় গুলি করে আত্মহত্যা করেন তিনি।
বুধবার প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম বিবিসি জানায়, গার্সিয়া নিজেকে গুলি করার পর তাকে দ্রুত পেরুর রাজধানী লিমার ক্যাসিমিরো উল্লোয়া হাসপাতালে নেয়া। তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেশটির বর্তমান প্রেসিডেন্ট মার্তিন ভিজকাররা।
গণমাধ্যমটি জানায়, গার্সিয়াকে হাসপাতালটিতে নেয়ার পর তার সমর্থকেরা সেখানে জড় হলে পুলিশ কর্মকর্তারা তাদেরকে সরিয়ে দেয়। দেশটির এই সাবেক প্রেসিডেন্ট বিরুদ্ধে ব্রাজিলের নির্মাণ কোম্পানি ওদেব্রেখটের কাছ থেকে ঘুষ নেয়ার দায়ে অভিযুক্ত হলে তিনি তা প্রত্যাখ্যান করেন।
পেরুর স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কার্লোস মর্যানে সাংবাদিকদেরকে বলেন, গার্সিয়াকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশ তার বাসায় পৌঁছলে তিনি ফোন কল করার কথা বলে একটি কক্ষে যান। কক্ষের ভেতরে গিয়ে তিনি দরজা বন্ধ করে দেন। কয়েক মিনিট পরে একটি গুলির শব্দ শোনা যায়।
পুলিশ কক্ষের ভেতরে গিয়ে মাথায় গুলিবিদ্ধ গার্সিয়াকে একটি চেয়ারে বসে থাকা অবস্থায় দেখতে পায় বলে উল্লেখ করেন তিনি।
গার্সিয়ার সেক্রেটারি রিকার্দো পিনেদো বলেন, এই সাবেক প্রেসিডেন্টের বাসায় চার বা পাঁচটি অস্ত্র ছিল। এগুলো সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে তাকে উপহার দেয়া হয়। এগুলোর একটির সাহায্যে তিনি নিজের মাথায় গুলি করেছেন।
পেরুর প্রেসিডেন্ট ভিজকাররা এক টুইটার পোস্টে জানান, তিনি দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্টের মৃত্যুতে মর্মাহত। এছাড়া তিনি মৃতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।
গার্সিয়া ১৯৮৫ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত পেরুর প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ২০০৬ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত দেশটির প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
তদন্তকারীদের মতে, গার্সিয়া দ্বিতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট থাকাকালে রাজধানী লিমায় একটি মেট্রো লাইন বিল্ডিং প্রজেক্ট বাবদ ওদেব্রেখটের কাছ থেকে ঘুষ নিয়েছিলেন। পেরুতে ২০০৪ সাল থেকে প্রায় ৩০ মিলিয়ন ডলার ঘুষ দেয়ার কথা স্বীকার করেছে ব্রাজিলের কোম্পানিটি।
গার্সিয়ার দাবি, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তার বিরুদ্ধে ঘুষ নেয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে। মঙ্গলবার তিনি এক টুইটে জানান, তার বিরুদ্ধে কোনও তথ্য বা প্রমাণ পাওয়া যায়নি। গত বছরের নভেম্বরে তিনি উরুগুয়ের সরকারের কাছে রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছিলেন কিন্তু পাননি।
কে/এসএস
মন্তব্য করুন