• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

পাকিস্তানি পণ্যের ওপর ২০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ ভারতের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ১৪:৩৫

কাশ্মীরের পুলওয়ামা হামলার পর পাকিস্তানের ওপর বেজায় নাখোশ ভারত বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়া শুরু করেছে। পাকিস্তানের ‘মোস্ট ফেভারড নেশন (এমএফএন)’ বা সবচেয়ে সুবিধাপ্রাপ্ত দেশ-এর তকমা কেড়ে নিয়েছিল ভারত। এবার দেশটি থেকে আমদানিকৃত সব জিনিসের ওপর ২০০ শতাংশ আবগারি শুল্ক চাপিয়ে দিল ভারত। ফলে বাণিজ্যিকভাবে ইমরান খানের দেশ আরও বেকায়দায় পড়লো বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

১৪ ফেব্রুয়ারি পুলওয়ামায় সেনা কনভয়ে হামলা চালায় পাকিস্তানের মদদপুষ্ট জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-ই-মোহাম্মদ। সেই হামলায় নিহত হয়েছেন ৪৯ জন জওয়ান। পাকিস্তানকে ‘উচিত শিক্ষা’ দিতে প্রথমেই বাণিজ্যিকভাবে একঘরে করার সিদ্ধান্ত নেয় নরেন্দ্র মোদির সরকার।

একই সঙ্গে পাকিস্তানকে যাতে আন্তর্জাতিক মহল থেকে একেবারে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া যায়, কূটনৈতিক স্তরে সেই প্রক্রিয়াও শুরু করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেয় কেন্দ্র। পাকিস্তানকে আন্তর্জাতিক মহল থেকে বিচ্ছিন্ন করার প্রথম ধাপটা ছিল এমএফএন-এর তকমা প্রত্যাহার এবং দ্বিতীয় ধাপটা কী হবে শনিবারেই ঘোষণা করে দিয়েছিল কেন্দ্র।

কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি এক টুইটে জানান, পুলওয়ামার ঘটনার পর পাকিস্তানের এমএফএন তকমা প্রত্যাহার করে নিয়েছে ভারত। এবার সে দেশ থেকে আমদানিকৃত জিনিসের ওপর আবগারি শুল্ক বাড়িয়ে ২০০ শতাংশ করা হলো।

এমএফএন স্ট্যাটাস কী?

ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশন (ডব্লিউটিও)-র সদস্য দেশগুলোর মধ্যে আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে কোনও দেশ অন্য একটি দেশকে এই এমএফএন স্টেটাস দিতে পারে। এর ফলে বৈষম্যহীন বাণিজ্যের সমস্ত রকম সুযোগ পায় এমএফএন স্ট্যাটাসপ্রাপ্ত দেশটি।

এমএফএন স্ট্যাটাসপ্রাপ্ত দেশকে বৈদেশিক বাণিজ্যে ছাড়, অতিরিক্ত কিছু সুবিধা, শুল্ক হ্রাস ইত্যাদি সুযোগ-সুবিধা দিতে হয়। জেনারেল এগ্রিমেন্ট অন ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফস বা গ্যাট চুক্তির প্রথম ধারাতেই এটা নিশ্চিত করা হয়েছে। এছাড়া ডব্লিউটিও-র সদস্য দেশ হিসেবে অন্য দেশগুলো আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের যে সুযোগ-সুবিধা পায় সেগুলোও পেয়ে থাকে এই এমএফএন স্ট্যাটাস প্রাপ্ত দেশ।

কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, এমএফএম তকমা তুলে নিয়ে অর্থনৈতিক ভাবে পাকিস্তানকে অনেকটা দুর্বল করে দেয়া যাবে। কারণ এই তকমা তুলে নেয়া মানে দুই দেশের মধ্যে যে বার্ষিক বাণিজ্য কমে গিয়ে ২০০ কোটি ডলারে দাঁড়াবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটাই হবে পাকিস্তানের জন্য বড় ধাক্কা।

পুলওয়ামার হামলায় ইতোমধ্যেই পাকিস্তানকে কঠোর বার্তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। একই সঙ্গে এ ব্যাপারে ভারত যা পদক্ষেপ করবে তাতে পূর্ণ সমর্থন দেয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে ট্রাম্পের দেশ। হামলার তীব্র নিন্দা করেছে বিভিন্ন দেশ। জঙ্গিদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে আন্তর্জাতিক মহল থেকেও চাপ বাড়তে শুরু করেছে পাকিস্তানের ওপর। ফলে বাণিজ্যিক, অর্থনৈতিক এবং কূটনৈতিকভাবে সাঁড়াশি চাপে পড়েছে পাকিস্তান।

পাকিস্তান ইতোমধ্যেই ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স (এফএটিএফ)-এর ধূসর তালিকায় রয়েছে। এফএটিএফ হল একটি ইন্টার গভর্নমেন্টাল বডি। যারা জঙ্গিদের অর্থ সরবরাহ আটকানোর কাজ করে থাকে। কিন্তু পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বার বারই অভিযোগ উঠেছে তারা জঙ্গিদের অর্থ দিয়ে সাহায্য করে।

যদি এফএটিএফ-এর কালো তালিকায় পাকিস্তানের নাম উঠে যায় তাহলে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল, বিশ্ব ব্যাংক, এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন-এর মতো সংস্থাগুলোর কাছ থেকে সহযোগিতাও বন্ধ হওয়ার উপক্রম হবে। ধূসর তালিকা নয়, এফএটিএফ-এর কালো তালিকাতে পাকিস্তানকে ফেলা হোক, এটাই এখন চাইছে ভারত।

মন্তব্য করুন

daraz
  • আন্তর্জাতিক এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ৩০০ ফুট খাদে বাস, নিহত ১০  
ভারতের নির্বাচন কেন্দ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে যে মন্তব্য করল জাতিসংঘ
ভারতীয় পণ্য বয়কট নিয়ে কথা বললেন আব্দুল মোমেন
বিএনপি নেতাদের স্ত্রীরা ভারতীয় শাড়ি তেমন কেনেন না : রিজভী
X
Fresh