ভারতে মুসলিমদের কবরস্থানের জন্য ১২ কাঠা জমি দান হিন্দু বৃদ্ধার
ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদিয়ার একটি গ্রামে মুসলিমদের কবরস্থানের জন্য ১২ কাঠা জমি দান করেছেন পূর্ণিমা বন্দ্যোপাধ্যায় (৭৯) নামের এক হিন্দু নারী।
নদিয়ার পলাশিপাড়া হাসপাতালপাড়া এলাকার ঠান্ডা নামের এই গ্রামের মুসলিমদের কোনও কবরস্থান না থাকায় তিনি এই জমি দান করেন বলে জানিয়েছে দেশটির গণমাধ্যম আজকাল।
ঠান্ডা গ্রামের চাইনা বেগম বলেন, পূর্ণিমা দেবী আমার পূর্ব পরিচিত ছিলেন। একদিন গল্পের ছলে আমি তাকে বলি আমাদের গ্রামে কোনও মুসলিম মারা গেলে কবরস্থান না থাকায় বাড়ির উঠানে কবর দিতে হয়। একথা শোনার পর তিনি বলেন নদীর ওপারে আমার ১২ কাঠা জমি আছে, ওই জমি আমি মুসলিম ভাইদের দান করে দেবো।
তিনি বলেন, কয়েকদিনের মধ্যেই পূর্ণিমাদেবী কাগজপত্র তৈরি করে কবরস্থানের জন্য জমি দান করেন।
এই বিষয়ে পূর্ণিমা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, নিজে সংসার করিনি। নিজের ১২ কাঠা জমি মুসলিম ভাইদের অসুবিধার কথা জেনে বিমলা–অবিনাশ সমাধিক্ষেত্র নামে ডিড করে ওদের হাতে কাগজ তুলে দিয়েছি।
তিনি বলেন, দাসপাড়া বাসন্তী মন্দির করতে সহযোগিতা করেছি, খাঁ পাড়ায় দুর্গামন্দির করে দিয়েছি, অবশেষে নিজের মন্দিরসহ দোতালা বাড়ি এবং অবশিষ্ট পাঁচ লাখ টাকা ভারত সেবাশ্রমকে দান করে দিয়েছি।
তিনি আরও বলেন, এখন আমার সম্বল বলতে সামান্য কয়েক হাজার টাকার পেনশন। যে কয়েকদিন বাঁচবো, এই অর্থে চলে যাবে। হাসিমুখে অন্যের সেবা করার মতো আনন্দ অন্যকিছুতে আছে কিনা আমার জানা নেই।
পূর্ণিমার জন্মস্থান হুগলি জেলার শ্রীরামপুরের বল্লভপুরের ঠাকুরবাড়ি। তার বাবা অবিনাশ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং মা বিমলা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্য সরকারের সমাজকল্যাণ দপ্তরে চাকরি পাওয়ার পর পারিবারিক বিবাদের কারণে ঘর ছাড়েন পূর্ণিমা।
এরপর বিভিন্ন জেলা ঘুরে শেষমেশ পলাশিপাড়া ব্লক অফিস থেকে ২০০০ সালে অবসর নেন পূর্ণিমা। পলাশিপাড়া সেতুর পশ্চিম পাশে জলঙ্গি নদীর দক্ষিণ তীরে পাঁচ শতক জমির ওপর শিবমন্দিরসহ দোতলা বাড়ি বানিয়ে বসবাস শুরু করেন তিনি।
আরও পড়ুন :
- ট্রাম্প গণতন্ত্রের ওপর আঘাত হানতেই ব্যস্ত: হিলারি
- পাকিস্তান সীমান্তে ভারতের কাঁটাতারের নিরাপত্তাবেষ্টনী
কে/ এমকে
মন্তব্য করুন