টরেন্টো হামলাকারীকে হত্যার বদলে গ্রেপ্তার কেন?
উত্তরাঞ্চলীয় টরেন্টোর একটি ব্যস্ত রাস্তায় পথচারীদের ওপর গাড়ি উঠিয়ে ১০ জনকে হত্যার ঘটনায় হামলাকারী অ্যালেক মিনাসিয়ানকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। কিন্তু ওই ঘটনার সময় পুলিশ চাইলেই তাকে হত্যা করতে পারতো। অথচ এক অফিসারের ধীরস্থির আচরণের কারণে মিনাসিয়ানকে গ্রেপ্তার করা গেছে। খবর বিবিসির।
ওই হামলার এক ভিডিওতে দেখা গেছে, অ্যালেক মিনাসিয়ান একটি বস্তু ওই পুলিশ কর্মকর্তার দিকে তাক করে ‘আমাকে হত্যা’করো বলে চিৎকার দেয়।
কিন্তু ওই পুলিশ কর্মকর্তা শান্তভাবে অ্যালেক ‘গাড়ি থেকে বের’হতে বলেন। তবে মিনাসিয়ান জানায়, তার কাছে বন্দুক আছে। জবাবে ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘আমি পরোয়া করি না, তুমি গাড়ি থেকে বের হও।’
ভিডিওতে পরে দেখা গেছে, মিনাসিয়ান শুয়ে রয়েছেন এবং ওই পুলিশ কর্মকর্তা তাকে গ্রেপ্তার করছেন।
ওই পুলিশ কর্মকর্তার এ ধরনের আচরণে অনেকেই তাকে ও কানাডা পুলিশের প্রশংসা করেছে। অনেকেই এর সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন ঘটনার বৈপরীত্যও খুঁজে পেয়েছেন। যেখানে পুলিশ নিরস্ত্র ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক একজন অ্যাকাডেমিক বলেন, ওই পুলিশ কর্মকর্তার দিকে যে বস্তুটি তাক করা হয়েছিল সেটি যদি বন্দুক হয়ে থাকতো তাহলে হামলাকারীকে হত্যা করা তার ‘দায়িত্ব’র মধ্যে পড়তো।
টরেন্টো পুলিশ প্রধান মার্ক সন্ডার্স বলেছেন, ওই অফিসার ‘দারুণ কাজ’ করেছে। তিনি ‘পরিস্থিতি ও পরিবেশ’উপলব্ধি করে ‘শান্তিপূর্ণ একটি সমাধান’দিয়েছেন।
তিনি বলেন, আমাদের শহরে পুলিশদের ‘যেকোনো পরিস্থিতিতেই যতটা কম শক্তি প্রয়োগের ব্যাপারে শিক্ষা দেয়া হয়’।
টরেন্টো পুলিশ এসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট মাইক ম্যাককোরম্যাক বলেছেন, ওই কর্মকর্তা একজন ‘হিরো’এবং সে গুলি করলে সেটি অন্যায় হতো না।
তিনি বলেন, ওই কর্মকর্তা হামলাকারীকে জীবিত গ্রেপ্তার করতে পারবে এমন উপলব্ধির পর এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। আমি ওই পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলেছি। সে আমাকে বলেছে, আমি আমার দায়িত্ব পালন করেছি। আমি যা করেছি সেটি কোনো ব্যাপার না। কিন্তু দেখুন এই লোকগুলো কত অসহায়।
সোমবার স্থানীয় সময় দুপুর দেড়টার দিকে ফিঞ্চ অ্যাভিনিউ ও শেপার্ড অ্যাভিনিউয়ের মধ্যবর্তী ইয়োনগে স্ট্রিটে এক ভাড়া করা সাদা ভ্যান তুলে দিয়ে এই হামলা চালায় অ্যালেক মিনাসিয়ান। ওই গাড়িটি প্রায় দুই কিলোমিটার পর্যন্ত গাড়িটি পথচারীদের ওপর দিয়ে চালানো হয়।
ইয়োনগে স্ট্রিটের একজন দোকানদার রেজা হাশেমি বলেন, তিনি রাস্তার অপর পাশ থেকে মানুষজনের চিৎকার শুনেছেন। গাড়িটি বারবার ফুটপাতে উঠে যাচ্ছিল এবং মানুষজনকে ধাক্কা মারছিল।
এ/পি
মন্তব্য করুন