শেষ বিতর্কেও পাল্টাপাল্টি অভিযোগ
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তৃতীয় ও শেষ প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কে মুখোমুখি হলেন দু’দলের প্রার্থী হিলারি ক্লিনটন ও ডোনাল্ড ট্রাম্প। এবারও বজায় রাখলেন একে অপরকে পাল্টাপাল্টি আক্রমণ। এমনকি বিতর্কের মঞ্চে একবারের জন্যও একে অপরের সঙ্গে হাত মেলালেন না। বিতর্কে উঠে আসল গর্ভপাত, অভিবাসন, অস্ত্র অধিকার, নির্বাচনে রাশিয়ার ভূমিকাসহ আরো অনেক বিষয়। তৃতীয় প্রেসিডেন্সিয়াল বিতর্কের উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো জেনে নেয়া যাক।
নির্বাচনের ফলাফল
বরাবরই নির্বাচনে কারচুপির সম্ভাবনার অভিযোগ করে আসছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিতর্কেও উঠে আসে বিষয়টি। ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচনে হেরে গেলে ফলাফল মেনে নিবেন কিনা, এ ব্যাপারে তার মনোযোগ আকর্ষণ করেন সঞ্চালক ক্রিস ওয়ালেস।
এর জবাবে ট্রাম্প জানান, এ বিষয়ে তিনি পরে কথা বলবেন। তবে হিলারিকে তিনি নজরদারিতে রাখবেন বলেও জানান।
যৌন হয়রানির অভিযোগ
যৌন হয়রানির সব অভিযোগ অস্বীকার করে ট্রাম্প বলেন, যারা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন তাদের সঙ্গে হিলারি জড়িত। এসব অভিযোগ তারই তৈরি করা। জবাবে হিলারি বলেন, ট্রাম্প সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে উদ্বুদ্ধ করছেন।
গর্ভপাত প্রসঙ্গ
গর্ভপাত নারীর একান্ত ব্যক্তিগত অধিকার বলে মন্তব্য করে হিলারি ক্লিনটন বলেন, আমি মনে করি প্রত্যেক নারীর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ও আবেগপূর্ণ সিদ্ধান্ত এটি। আর তা নেয়ার অধিকার তাদের আছে।
অপরদিকে ট্রাম্প বলেন, তিনি প্রেসিডেন্ট হলে গর্ভপাত না করার পক্ষে অবস্থান নেবেন। গর্ভপাত না করার বিষয়ে বিভিন্ন আদালতের দেয়া রায়গুলো টিকে থাকবে বলেই মত দেন তিনি।
হিলারি ‘জঘন্য’
হিলারি ধনীদের ওপর কিভাবে করের পরিমাণ বৃদ্ধি করবেন এবং ঋণের পরিমাণ কমাবেন সে বিষয়ে বক্তব্য রাখছিলেন। এসময় নিজের মাইক্রোফোনে ট্রাম্প তাকে ‘জঘন্য নারী’ বলে উঠেন। তবে সেদিকে মনোযোগ না দিয়ে নিজের পরিকল্পণার বিষয়ে বক্তব্য রাখেন ক্লিনটন।
ট্রাম্প পুতিনের পাপেট
হিলারি বলেন, ট্রাম্প পুতিনের পাপেট হিসেবে কাজ করছেন। সে সঙ্গে হিলারিকে হারাতে অনবরত পুতিনের দারস্থ হচ্ছেন।
পুতিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা অস্বীকার করে ট্রাম্প বলেন, তিনি পুতিনের ঘনিষ্ঠ নন। তবে হিলারির চেয়ে তার সঙ্গে ভালো সম্পর্ক রাশিয়ার প্রেসিডেন্টের।
আগ্নেয়াস্ত্র আইন
আগ্নেয়াস্ত্র আইনের বিপক্ষেই থাকছেন রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, এ রাষ্ট্রে সবচাইতে কঠোর অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন প্রয়োগ করা হয়েছে শিকাগোতে। অথচ সেখানেই অস্ত্র ব্যবহারে বছরে সবচাইতে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটে। আমি মনে করি অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন করে এ বিষয়ে কোন উপকার পাওয়া যাবে না।
এ ব্যাপারে হিলারি বলেন, আমাদের দেশে বন্দুক ব্যবহারের মাধ্যমে প্রতি বছর ৩৩ হাজার মানুষ মারা যাচ্ছে। আর সে কারণেই অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ আইন হওয়া উচিত।
অভিবাসন নীতি
শেষ বিতর্কেও অভিবাসী ইস্যু প্রাধান্য পেয়েছে দু’জনের কথাতেই। নির্বাচিত হলে অবৈধ অভিবাসীদের বের করে দেবার কথা এবারও জোর দিয়ে বলেছেন ট্রাম্প। তবে বরাবরের মতো হিলারি বিষয়টিতে নমনীয় মনোভাব দেখিয়ে বলেছেন, তাঁদের আমরা বিপদে ফেলতে পারি না।
ট্রাম্পের নীতি বাস্তবায়ন হলে তিন লাখ লোক চাকরি হারাবেন বলেও সতর্ক করেন হিলারি।
এফএস/এমকে
মন্তব্য করুন