ধর্ষণ ও হত্যার দায়ে চার পাকিস্তানির শিরশ্ছেদ
ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় সৌদি আরবে চার পাকিস্তানিকে শিরশ্ছেদ করা হয়েছে। স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার এই দণ্ড কার্যকর করা হয় বলে জানিয়েছে সৌদি আরবের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। খবর সৌদি গেজেটের।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- লিয়াকত হোসেন, সাজেদ আলী, মোহাম্মদ তাকিব ও ফয়সাল মুনির।
সৌদি আরবের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা এসপিএ জানিয়েছে , চার পাকিস্তানির বিরুদ্ধে সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে এক নারীকে ধর্ষণ ও হত্যা এবং তার কিশোর ছেলেকে বলাৎকারের অভিযোগ ছিল। এছাড়া চার ব্যক্তির বিরুদ্ধে ওই নারীর বাসা থেকে স্বর্ণালংকার ও নগদ অর্থ চুরির অভিযোগও প্রমাণিত হয়েছে।
২০১৮ সালে এ পর্যন্ত সৌদি আরবে ২০ জনকে বিভিন্ন অপরাধে শিরশ্ছেদ করা হয়েছে। ২০১৭ সালে সৌদি আরবে ১৪১ জনকে শিরশ্ছেদ করা হয়েছিল।
এ
মন্তব্য করুন
জাহাজের ধাক্কায় যানবাহনসহ মাঝ নদীতে ভেঙে পড়ল সেতু
যুক্তরাষ্ট্রের বাল্টিমোরে জাহাজের ধাক্কায় মাঝ নদীতে ভেঙে পড়েছে একটি সেতু।
স্থানীয় সময় সোমবার (২৫ মার্চ) রাত দেড়টার দিকে প্যাটাপসকো নদীর ওপর অবস্থিত ‘ফ্রান্সিস স্কট কি’ নামের সেতুটিতে একটি পণ্যবাহী জাহাজের ধাক্কা লাগে। এ সময় সেতুটি দিয়ে পারাপাররত বেশ কয়েকটি যানবাহন পড়ে যায় মাঝ নদীতে। এখন পর্যন্ত হতাহতের সংখ্যা জানা না গেলেও ঘটনাটিকে ‘উন্নয়নশীল গণহত্যা’ বলে অভিহিত করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ।
বাল্টিমোর সিটি ফায়ার ডিপার্টমেন্টের কমিউনিকেশন ডিরেক্টর চিফ কেভিন কার্টরাইটের বরাত দিয়ে বিবিসি ও স্কাই নিউজসহ মার্কিন বিভিন্ন গণমাধ্যম এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। এছাড়া দুর্ঘটনার বেশ কয়েকটি ফুটেজও প্রকাশ পেয়েছে ইতোমধ্যে।
ফুটেজে দেখা যাচ্ছে, ১.৬ মাইল দীর্ঘ ‘ফ্রান্সিস স্কট কি’ সেতুটির একটি বড় অংশ স্থানীয় সময় দেড়টায় সংঘর্ষের পর হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ে নদীতে। এ সময় সেতু থেকে এক সঙ্গে বেশ কয়েকটি যানবাহনও পড়ে যেতে দেখা যায়।
বাল্টিমোর সিটি ফায়ার ডিপার্টমেন্টের কমিউনিকেশন ডিরেক্টর চিফ কেভিন কার্টরাইট বলেছেন, এই মুহূর্তে আমাদের মূল লক্ষ্য হচ্ছে নিখোঁজ লোকদের উদ্ধার করা।১০টি নৌযান উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে ঘটনাস্থলে।
তিনি বলেন, কতজন মানুষ পানিতে পড়ে গেছে সে সম্পর্কে সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি। তবে ডুবে যাওয়াদের উদ্ধারের জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালাচ্ছি।
এদিকে ম্যারিল্যান্ড ট্রান্সপোস্ট কর্তৃপক্ষ তাদের এক এক্স পোস্টে জানিয়েছে, ঘটনার পরপরই সেতুটির উভয় দিকের সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে সেতুর নিচ দিয়ে নৌযান চলাচলও। প্যাটাপসকো নদীর সব ধরনের জাহাজ, স্টিমার ও নৌকাকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে অন্যপথে।
এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছেন বাল্টিমোর শহরের মেয়র ব্রেন্ডন এম স্কট। দুর্ঘটনায় নিখোঁজদের জন্য সবার কাছে দোয়া প্রার্থনা করেছেন তিনি।
জানা গেছে, দালি নামে পরিচিত সিঙ্গাপুরের পতাকাবাহী কনটেইনার জাহাজটি বাল্টিমোর বন্দর হয়ে শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে যাচ্ছিলো। কিন্তু পথিমধ্যে সেতুটির সঙ্গে ধাক্কা খেয়ে সেখানেই আটকে গেছে জাহাজটি।
দুর্ঘটনা কবলিত ১.৬ মাইল দৈর্ঘ্যের সেতুটি নির্মিত হয়েছিল ১৯৭৭ সালে। ন্যাশনাল স্টিল ব্রিজ অ্যালায়েন্স অনুসারে, বিশ্বের দীর্ঘতম ট্রাস ব্রিজগুলোর মধ্যে একটি এটি।
নিজের ডেকে আনা পুলিশের গুলিতে প্রাণ গেল বাংলাদেশি তরুণের
যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী বাংলাদেশি তরুণ উইন রোজারিও। সাহায্য চেয়ে কল করেছিলেন পুলিশকে; ফোনে বলেছিলেন যে তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন। কিন্তু, পুলিশ আসতেই উল্টে যায় পরিস্থিতি। নিজের ডেকে আনা পুলিশের গুলিতেই প্রাণ যায় ১৯ বছর বয়সী তরুণের।
ঘটনাটি ঘটেছে নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্যের ওজোন পার্কে, ১০১তম অ্যাভিনিউয়ের ১০৩তম স্ট্রিটের অবস্থিত ফ্রান্সিস রোজারিওর বাড়িতে; স্থানীয় সময় বুধবার (২৭ মার্চ) দুপুর দেড়টার দিকে।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজের প্রতিবেদন অনুসারে পুলিশ জানিয়েছে, বুধবার দুপুরের দিকে ৯১১ নম্বর থেকে ফোন আসে তাদের কাছে। ফোনের অপর প্রান্ত থেকে উইন রোজারিও নামে ওই তরুণ জানান, তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন।
এরপর ওজোন পার্কের ১০১তম অ্যাভিনিউয়ের ১০৩তম স্ট্রিটের বাড়িটিতে দুপুর দেড়টার দিকে যায় পুলিশ। বাড়িটির দ্বিতীয় তলায় উঠে ভেতরে উইন রোজারিওকে দেখতে পায় তারা। এ সময় তাকে হেফাজতে নেওয়ার চেষ্টা করেন পুলিশ সদস্যরা। এ অবস্থায় ওই তরুণ নিজের হাতে থাকা কাঁচি নিয়ে তাদের দিকে তেড়ে এলে সরাসরি গুলি করা হয় তাকে। পরে জ্যামাইকা হাসপাতালে নেওয়া হলে উইনকে মৃত ঘোষণা করেন সেখানকার চিকিৎসক।
এ ঘটনায় নিহতের বাবা পুলিশের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনলেও পুলিশের দাবি, উইন রোজারিও মাদকাসক্ত এবং মানসিক বিকারগ্রস্ত ছিলেন। আত্মরক্ষার্তেই গুলি করতে বাধ্য হয়েছেন তাদের সদস্যরা।
নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের চিফ অব পেট্রোল জন চেল জানান, বাংলাদেশি ওই তরুণ নিজের হাতে থাকা কাঁচি নিয়ে তেড়ে আসছিলেন পুলিশ সদস্যদের দিকে। এ কারণে তাকে গুলি করা হয়েছে।
উইনকে কয়টি গুলি করেছে পুলিশ সেটি এখনও জানা যায়নি। তবে জন চেল জানিয়েছেন, পুরো ঘটনাটি শরীরে থাকা ক্যামেরায় রেকর্ড আছে। বিষয়টি পর্যালোচনা করা হবে এবং বিশদভাবে তদন্ত করে দেখা হবে।
এদিকে নিহত তরুণের বাবা ফ্রান্সিস রোজারিওর প্রশ্ন, ‘আমার ছেলে নিজেই যেহেতু বলেছে সে একজন মানসিক ভারসাম্যহীন, তাহলে কেন গুলি করে মারতে হলো তাকে?’
এ ঘটনায় মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে নিউইয়র্কের বাংলাদেশি কমিউনিটিতে।
বিয়ে করেছেন রিয়েলিটি সিরিজে খ্যাতিমান মার্কিন সংযুক্ত যমজ অ্যাবি হেনসেল
টিএলসি রিয়েলিটি সিরিজ "অ্যাবি অ্যান্ড ব্রিটানি" তে খ্যাতি অর্জনকারী মার্কিন সংযুক্ত যমজ অ্যাবি ও ব্রিটানি হেনসেল বিয়ে করেছেন। তিন বছর আগে গোপনে বিয়ে করেছেন মার্কিন সেনাবাহিনীর একজন অভিজ্ঞ জোশ বোলিংকে। যমজ অ্যাবি এবং ব্রিটানি হেনসেল আমেরিকার সবচেয়ে বিখ্যাত সংযুক্ত যমজ। খবর আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম দ্যা স্ট্যান্ডার্ডের।
সম্প্রতি, TikTok অ্যাকাউন্ট @abbyandbrittanyhensel অ্যাবির বড় দিন উদযাপন করার একটি ক্লিপ শেয়ার করেছে, ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ব্রিট এবং অ্যাবি দম্পতির একটি ছবি পোস্ট করেছে।
১৯৯০ সালে জন্মগ্রহণ করা এই যমজের দুটি মাথা, দুটি হৃদয় এবং দুটি ফুসফুস রয়েছে। তবে অন্য সবকিছু ভাগ করে নেয় তারা। প্রতিটি যমজ তার শরীরের অর্ধেক নিয়ন্ত্রণ করে, তাই তাদের আশ্চর্যজনক সমন্বয় রয়েছে। তারা গাড়ি চালাতে পারে। উভয়ই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক।
মেয়েরা ডাইসেফালিক প্যারাপাগাস, যার অর্থ তারা দুটি মাথার সাথে পাশাপাশি মিশ্রিত।
তাদের পেলভিসে দুটি মেরুদণ্ড, দুটি হৃৎপিণ্ড, দুটি অন্ননালী, দুটি পাকস্থলী, তিনটি কিডনি, দুটি পিত্তথলি, চারটি ফুসফুস- দুটি যুক্ত হয়েছে। একটি যকৃত, একটি পাঁজর, একটি ভাগ করা সংবহনতন্ত্র এবং আংশিকভাবে ভাগ করা স্নায়ুতন্ত্র। কোমর থেকে নীচে, প্রজনন অঙ্গ সহ সমস্ত অঙ্গ আলাদা।
তারা ১৯৯০ সালে একটি আংশিক-গঠিত তৃতীয় বাহু নিয়ে জন্মগ্রহণ করেছিলেন যা ১২ বছর বয়সে অপসারণ করা হয়েছিল। মেরুদণ্ডের বক্রতা সংশোধন করতে এবং তাদের শ্বাস-প্রশ্বাসে সহায়তা করার জন্য অস্ত্রোপচার করা হয়েছিল।
১৯৯৬ সালে দ্য অপরাহ উইনফ্রে শো এবং লাইফ ম্যাগাজিনের কভারে উপস্থিতির মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী মনোযোগ আকর্ষণ করে তারা। তারা মিনেসোটাতে বসবাস করতেন, ১৬ বছর বয়সে একটি টিএলসি ডকুমেন্টারিতে অভিনয় করা পর্যন্ত মিডিয়া এড়িয়ে চলেন।
তাদের বাবার নাম প্যাটি ও মা মাইক। জন্মের সময় যমজ সন্তানদের আলাদা করলে তাদের বাঁচানো যেত না। তাই অপারেশন করে তাদের আলাদা করার সিদ্ধান্ত নেননি তারা।
মসজিদুল হারাম থেকে ৪ হাজার মুসল্লি গ্রেপ্তার
রমজানের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত সৌদি আরবের মক্কা নগরীর মসজিদুল হারাম থেকে ৪ হাজারের বেশি মুসল্লিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মসজিদের ভেতর অসদাচরণের কারণে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
রোববার (৩১ মার্চ) গালফ নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলেছে, মুসল্লিরা যাতে নির্বিঘ্নে ও যথাযথ নিরাপত্তার সঙ্গে ইবাদত করতে পারেন, সেটি নিশ্চিত করার জন্য ৪ হাজার মুসল্লিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
এদিকে রমজান মাসে মসজিদুল হারামে মুসল্লিদের ভিড় অনেক বেড়েছে। ভিড় কমাতে মন্ত্রণালয় মুসল্লিদের মসজিদের পরিবর্তে হোটেলের নামাজ কক্ষে ইবাদত করতে পরামর্শ দিয়েছে। বিশেষ করে পবিত্র রমাজন মাসের শেষ দশ দিনে। কারণ, এই সময় ভিড় আরও বাড়ে।
এ ছাড়া ওমরাহ করানোর নামে বিদেশিদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে সৌদি সরকার ৩৫টি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দিয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানানো হয়।
বাংলাদেশে পণ্য বর্জনের ডাক নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাল ভারত
‘ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক’ দিয়ে দেশে গত প্রায় তিন মাস ধরে যে প্রচারণা চলছে, তা নিয়ে নিজেদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ভারত সরকার।
বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) ভারতের রাজধানী দিল্লিতে সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে এ ব্যাপারে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেন দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল।
তিনি জানান, বাংলাদেশে ভারতীয় পণ্য বর্জনের ডাক দুই দেশের সম্পর্কের গভীরতা নষ্ট করতে পারবে না। দুই দেশের সম্পর্কের ব্যাপ্তি সর্বগামী, এই সম্পর্ক এমনই থাকবে।
ব্রিফিংয়ে এক সাংবাদিক তাকে প্রশ্ন করেন, ‘বাংলাদেশে গত বেশ কিছুদিন ধরে তথাকথিত ‘ইন্ডিয়া আউট’ নামে একটি ক্যাম্পেইন চলছে, যাতে মূলত ভারতের পণ্য বয়কট করার ডাক দেওয়া হচ্ছে। সে দেশের উল্লেখযোগ্য কয়েকজন বিরোধীদলীয় নেতাও সেটাতে তাদের সমর্থন জানিয়েছেন। এই আন্দোলন নিয়ে কি আপনি কোনো মন্তব্য করতে চাইবেন? আর দ্বিতীয়ত, এর ফলে বাংলাদেশে ভারতের রপ্তানির পরিমাণে কি কোনো প্রভাব পড়ছে?’
জবাবে রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘দেখুন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার সম্পর্ক আসলে খুব শক্তিশালী ও গভীর। আমাদের দুই দেশের মধ্যে আসলে একটি কম্প্রিহেনসিভ পার্টনারশিপ আছে, যা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিস্তৃত। অর্থনীতি থেকে শুরু করে বাণিজ্য, বিনিয়োগ থেকে শুরু করে উন্নয়ন সহযোগিতা, কানেক্টিভিটি থেকে শুরু করে পিপল-টু-পিপল কনট্যাক্ট–মানবজীবনের যেকোনো ক্ষেত্রে আপনি যেকোনো একটা বিষয়ের নাম নিন, দেখবেন সেটা কিন্তু ভারত-বাংলাদেশের সামগ্রিক সম্পর্কের অংশ। আমাদের দুই দেশের অংশীদারিত্ব ঠিক এতটাই প্রাণবন্ত। আর এই ধারা আগামী দিনেও অব্যাহত থাকবে।’
সোমবার দিনেই নামবে সাময়িক রাত
আগামী ৮ এপ্রিল বিরল এক সূর্যগ্রহণের সাক্ষী হতে চলেছে বিশ্ব। এদিন সূর্যকে পুরোপুরি ঢেকে ফেলবে চাঁদ, ফলে কিছুক্ষণের জন্য দিন হবে সাময়িক রাত। তবে সব সূর্যগ্রহণের মতো একই সঙ্গে পৃথিবীর সব অঞ্চল থেকে দেখা যাবে না বিরল এ সূর্যগ্রহণ। মেক্সিকো, যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মানুষ দেখতে পারবেন এটি।
বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার বরাত দিয়ে আমেরিকান সংবাদমাধ্যম সিনেটের জানিয়েছে, উত্তর আমেরিকায় সবশেষ ১৯৭০ সালে এমন সূর্যগ্রহণ দেখা গিয়েছিল। আবার ২০৪৪ সালে পুনরায় দেখা মিলবে এ গ্রহণের। চমকপ্রদ সূর্যগ্রহণ দেখতে অধীর অপেক্ষায় রয়েছে কয়েক মিলিয়ন মানুষ, একই সঙ্গে এই সূর্যগ্রহণ দেখার অপেক্ষায় ‘আকাশবাসী’ মানুষেরাও।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশন থেকে মহাকাশচারীরা এই সূর্যগ্রহণ দেখবেন। পৃথিবী থেকে একবার দেখা যাবে এটি, তবে মহাকাশ স্টেশন থেকে এই গ্রহণ দেখা যাবে একাধিকবার। সূর্যগ্রহণ চলাকালে পৃথিবীর পৃষ্ঠজুড়ে ট্র্যাক করবে মহাকাশ স্টেশন। মহাকাশচারীরা মোট তিনবার সূর্যগ্রহণের দৃশ্য দেখতে পারবেন। প্রথমবার যখন দেখতে পাবেন তখন মহাকাশ স্টেশনটি প্রশান্ত মহাসাগরের ওপরে থাকবে। এরপর নিউজিল্যান্ড এলাকা থেকে ক্যালিফোর্নিয়া ও আইডাহোর দিকে যাওয়ার সময় দেখতে পাবেন। মহাকাশ স্টেশনটি যখন মেইন এবং নিউ ব্রান্সউইকের ওপরে অবস্থান করবে তখন পূর্ণ সূর্যগ্রহণের মুখোমুখি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
এতে আরও বলা হয়েছে, এই সূর্যগ্রহণ শুরু হবে মেক্সিকোতে। এরপর তা ধীরে ধীরে সরে আসবে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর। আমেরিকার স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে সূর্যগ্রহণ হবে। যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও কানাডা, মেক্সিকো এবং ক্যারিবীয় অঞ্চলের বিভিন্ন স্থান থেকে এ দৃশ্য দেখা যাবে। তবে সব সূর্যগ্রহণের মতো একইসঙ্গে পৃথিবীর অন্যান্য অঞ্চল থেকে এর দর্শন মিলবে না।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, খুবই বিরল এ পূর্ণ সূর্যগ্রহণের দিন সূর্যোদয় বা সূর্যাস্তের মতো আকাশ অন্ধকার হয়ে যাবে। সূর্য ও পৃথিবীর মাঝখানে চাঁদ এলে পূর্ণ সূর্যগ্রহণ হয়। সূর্যগ্রহণ দেখতে পরতে হবে বিশেষ চশমার প্রয়োজন হবে। সূর্যগ্রহণের দিকে খালি চোখে তাকালে সিংহভাগ চোখ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে।
উল্লেখ্য, চাঁদ প্রতি ১৮ মাস পর পর পৃথিবী ও সূর্যের মাঝখানে চলে আসে। নাসার তথ্য অনুসারে, ৩৭৫ দিন পরপর পূর্ণ সূর্যগ্রহণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তবে সময় বেশিও লাগতে পারে।
বিশাল তারকা বিস্ফোরণ ঘটতে চলেছে, জীবনে দেখা যাবে একবারই
আগামী সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে পৃথিবী থেকে ৩ হাজার আলোকবর্ষ দূরে একটি বিশাল বিস্ফোরণে রাতের আকাশ জ্বলে উঠবে, যা অপেশাদার জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের জীবনে একবার মহাকাশের এই বিস্ময়কর ঘটনার সাক্ষী হওয়ার সুযোগ দেবে।
শনিবার (৬ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে বিবিসি।
করোনা বোরিয়ালিস (টলেমির তালিকাভুক্ত) নক্ষত্রমণ্ডলের বাইনারি তারা সিস্টেম নর্দান ক্রাউন বা ‘উত্তর মুকুট’ সাধারণত খালি চোখে দেখা যাবে না। কিন্তু, প্রতি ৮০ বছর বা তার পরে এর দু’টি তারার মধ্যে শক্তির বিনিময় ঘটে। এটি একটি মারাত্মক আলিঙ্গনের মতো আবদ্ধ। যা পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটায়। এই বিস্ফোরণ থেকে আলোর ঝলকানি মহাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে। সেই উজ্জ্বলতা হঠাৎ করেই আমাদের রাতের আকাশে কয়েক দিনের জন্য দৃশ্যমান হয়ে ওঠে।
এটি অন্তত তৃতীয়বারের মতো হবে। যে মানুষ এই ঘটনাটি প্রথম প্রত্যক্ষ করেছেন তিনি হলেন আইরিশ পলিম্যাথ জন বার্মিংহাম। ১৮৬৬ সালে তিনি এটি আবিস্কার করেন। তারপর ১৯৪৬ সালে পুনরায় সেই উজ্জ্বলতা আবির্ভূত হয়েছিল।
অ্যারিজোনা স্টেট ইউনিভার্সিটির একজন জ্যোতির্বিজ্ঞানী সুমনার স্টারফিল্ড এএফপি’কে বলেছেন, তিনি নোভার ‘আউটবার্স্ট’ দেখে খুব উত্তেজিত। সর্বোপরি, তিনি ‘ব্লেজ স্টার’ উজ্জ্বল তারকা হিসেবে পরিচিত ‘টি কোরোনেই বোরিয়ালিস’ নিয়েই কাজ করেছেন।
স্টারফিল্ড বর্তমানে একটি বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র শেষ করার জন্য তাড়াহুড়ো করছেন যা ভবিষ্যদ্বাণী করে যে, জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা পুনরাবৃত্ত নোভা সম্পর্কে জানতে পারবেন, যখনই পরবর্তী পাঁচ মাসে এটি প্রদর্শিত হবে।
স্টারফিল্ড ব্যাখ্যা করেছেন যে, মিল্কিওয়ে এবং আশেপাশের গ্যালাক্সিতে প্রায় ১০টি পুনরাবৃত্ত নোভা রয়েছে। তিনি বলেন, সাধারণ নোভা বিস্ফোরিত হয় ‘সম্ভবত প্রতি ১ লক্ষ বছরে।’ কিন্তু পুনরাবৃত্ত নোভাগুলো তাদের দুই নক্ষত্রের মধ্যে একটি অদ্ভুত সম্পর্কের কারণে মানুষের টাইমলাইনে তাদের বিস্ফোরণের পুনরাবৃত্তি করে।
একটি হল একটি শীতল মৃতপ্রায় নক্ষত্র যাকে লাল দৈত্য (রেড জায়ান্ট) বলা হয়। যেটি তার হাইড্রোজেনের মাধ্যমে জ্বলে উঠেছে এবং ব্যাপকভাবে প্রসারিত হয়েছে। এর ভাগ্য যা প্রায় পাঁচ বিলিয়ন বছরে আমাদের নিজের সূর্যের পরিণতির মতোই অপেক্ষমান। অন্যটি একটি শ্বেত বামন, একটি নক্ষত্রের মৃত্যুর পরের পর্যায়ে, সমস্ত বায়ুমন্ডল উড়িয়ে দেওয়ার পরে এবং শুধুমাত্র অবিশ্বাস্যভাবে ঘনীভূত কেন্দ্রীয় অংশটি অবশিষ্ট থাকে।
স্টারফিল্ড বলেন, তাদের আকারের বৈষম্য এতটাই বিশাল যে ‘টি কোরোনেই বোরিয়ালিস’ এর শ্বেত বামন তারাটির রেড জায়ান্ট প্রদক্ষিণ করতে ২২৭ দিন সময় লাগে।
দুটি এত কাছাকাছি যে রেড জায়ান্ট নির্গত পদার্থ শ্বেত বামন তারার পৃষ্ঠে আছড়ে পড়ে এবং সেটি টেনে নেয়।
স্টারফিল্ড বলেন,একবার মোটামুটি পৃথিবীর সমান ভর শ্বেত বামনের ওপর তৈরি হয়ে গেলে, যা প্রায় ৮০ বছর সময় নেয়। এতে একটি কিকস্টার্ট রানওয়ে থার্মোনিউক্লিয়ার প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। দ্রুত তাপ ও চাপ বৃদ্ধি পেয়ে বিষ্ফোরণ ঘটে।
একজন অবসরপ্রাপ্ত জার্মান জ্যোতির্বিজ্ঞানী যিনি নোভা নিয়ে গবেষণা করেছেন, জোয়াকিম ক্রাউটার বলেছেন, এটি একটি ‘বড় বিস্ফোরণ এবং কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে তাপমাত্রা ১০০-২০০ মিলিয়ন ডিগ্রি সেলসিয়াসে’ শেষ হয়।
ক্রাউটার এএফপি’কে বলেছেন, জমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপসহ অসংখ্য টেলিস্কোপ ক্যামেরা এখন টি করোনা বোরিয়ালিসের বিস্ফোরণের দিকে চোখ রাখছে।
ক্রাউটার বলেন, কিন্তু এই বিরল ঘটনার সাক্ষী হতে আপনার এমন উন্নত প্রযুক্তির প্রয়োজন নেই। যখনই এটি ঘটবে ‘আপনাকে কেবল বাইরে যেতে হবে এবং করোনা বোরিয়ালিসের দিকে তাকাতে হবে।
কিছু সৌভাগ্যবান আকাশ পর্যবেক্ষণকারীরা ইতোমধ্যেই সোমবার বছরের সবচেয়ে বড় জ্যোতির্বিদ্যার ঘটনার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি স্ট্রিপ জুড়ে একটি বিরল পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ ঘটবে। -বাসস।