• ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
logo

তুরস্কের রাস্তায় জনতার ঢল

মাজহার খন্দকার

  ১৭ জুলাই ২০১৬, ১০:৩৪

ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থানের পর প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ানের সমর্থনে তুরস্কের রাস্তায় মিছিল করছে হাজারো সমর্থক। ইস্তাম্বুলসহ দেশটির বড় বড় শহরে ক্ষমতাসীন জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টির (একেপি) সমর্থকেরা অবস্থান করছে। তাদের হাতে উড়ছে তুরস্কের পতাকা। গণতন্ত্র ও এরদোয়ানের সমর্থনে তারা মিছিল করছে। খবর এএফপি, বিবিসি ও রয়টার্সের।

রয়টার্সের খবরে জানা যায়, ইস্তাম্বুল কর্তৃপক্ষ অভ্যুত্থানচেষ্টার সময় বন্ধ হয়ে যাওয়া সেতু ও রাস্তাগুলো খুলে দিয়েছে। আতাতুর্ক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আবার বিমান চলাচল শুরু হয়েছে।

শুক্রবার রাত থেকে এরদোয়ানের বিরুদ্ধে অভ্যুত্থানের চেষ্টা করে সেনাবাহিনীর একাংশ। ভারী ট্যাংক নিয়ে তারা রাস্তায় অবস্থান নেয়। এ অবস্থায় এরদোয়ান একেপির সমর্থকদের রাস্তায় নেমে আসার আহ্বান জানান। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে গণতন্ত্র রক্ষা করতে রাস্তায় নামে হাজারো সমর্থক। রাতভর চলে গুলি, সংঘর্ষ, বিস্ফোরণ। আকাশে ওড়ে যুদ্ধবিমান। গতকাল শনিবার পর্যন্ত সহিংসতায় নিহত হয় ১০৪ সেনাসহ ২৬৫। আহত হয় প্রায় দেড় হাজার মানুষ। অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তাসহ প্রায় তিন হাজার সেনাসদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজন জেনারেলও আছেন।

একপর্যায়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে সরকার। অভ্যুত্থানের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রে স্বেচ্ছানির্বাসনে থাকা তুরস্কের ধর্মীয় নেতা ফেতুল্লা গুলেনের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ তোলেন এরদোয়ান। তবে গুলেন এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এরদোয়ান গুলেনকে ফিরিয়ে এনে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানিয়েছেন।

তবে পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকায় এরদোয়ান গতকাল বিকেলের দিকে জনগণ ও নিজ দলের সমর্থকদের রাস্তায় থাকার আহ্বান জানান। সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম টুইটারে দেওয়া এক বার্তায় এরদোয়ান বলেন, ‘অভ্যুত্থানের চেষ্টা যে অবস্থাতেই থাকুক না কেন, আমাদের সারা রাত রাস্তায় থাকতে হবে। কারণ, যেকোনো মুহূর্তে আবার নতুন করে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে।’ সে আহ্বানে সাড়া দিয়ে রাতভর তুরস্কের রাস্তায় অবস্থান করেছে তাঁর সমর্থকেরা।

শনিবার আঙ্কারায় পার্লামেন্টের বিশেষ জরুরি অধিবেশন বসে। এই অভ্যুত্থানের নিন্দা করেছে তুরস্কের সব বিরোধী রাজনৈতিক দল। নিন্দা জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাসহ বিশ্বনেতারা। তুর্কি প্রধানমন্ত্রী বিনালি ইয়েলদ্রিম এই অভ্যুত্থানচেষ্টাকে সে দেশের গণতন্ত্রের জন্য কলঙ্ক বলে চিহ্নিত করেছেন।

এবারের সেনা অভ্যুত্থানচেষ্টার আগে অন্তত চারবার সামরিক অভ্যুত্থান হয়েছে তুরস্কে। এর মধ্যে ১৯৬০, ১৯৭১ ও ১৯৮০ সালে তিন দফা অভ্যুত্থানে সেনাবাহিনী সরাসরি ক্ষমতা দখল করেছিল এবং সর্বশেষ ১৯৯৭ সালে বিভিন্ন ‘প্রস্তাব’ দিয়ে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীকে ক্ষমতাচ্যুত ও তাঁর দলকে নিষিদ্ধ করে।

এরদোয়ানের দল জাস্টিস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট পার্টি (একেপি) নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ২০০৩ সাল থেকে ক্ষমতায় রয়েছে। তাঁর সঙ্গে সেনাবাহিনীর সম্পর্ক ভালো বলেই ধারণা করা হতো। তবে ভিন্নমত দমন, ইসলামপন্থী বিভিন্ন উদ্যোগ ও নিজের নির্বাহী ক্ষমতা বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়ে তিনি সেনাবাহিনীসহ অনেকের কাছে অজনপ্রিয় হয়েছেন।

মন্তব্য করুন

daraz
  • আন্তর্জাতিক এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh