ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে হাই অ্যালার্ট জারি
ছাত্র-জনতার গণআন্দোলনের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ ছেড়ে দেশ ত্যাগ করেছেন শেখ হাসিনা। তাকে বহনকারী হেলিকপ্টার এরই মধ্যে ভারতে পৌঁছেছে।
এ পরিস্থিতিতে হাই অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে ভারত-বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সীমান্তে। নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে এরই মধ্যে কলকাতায় পৌঁছেছেন ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ডিজি।
সূত্র জানিয়েছে, শেখ হাসিনা ভারতের আসার সঙ্গে সঙ্গে তার যাবতীয় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে বিএসএফ সদস্যদের ওপর। শেখ হাসিনার নিরাপত্তার প্রধান দায়িত্বও থাকবে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর ওপর। অবশ্য ভারতীয় সেনাবাহিনীর সদস্যরাও মোতায়েন থাকবেন।
পাশাপাশি, সীমান্ত পেরিয়ে অনুপ্রবেশ যেন না ঘটে, সেজন্য অতিরিক্ত বিএসএফ সদস্যদের মোতায়েন করা হয়েছে। আপাতত সীমান্তে আমদানি-রপ্তানি বন্ধ রয়েছে।
মন্তব্য করুন
ভারত সবসময় বাংলাদেশের অগ্রগতির শুভাকাঙ্ক্ষী: মোদি
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দেশটির স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দিল্লির রেড ফোর্ট থেকে ভাষণ দিয়েছেন। ভাষণে তিনি বাংলাদেশ প্রসঙ্গে বলেছেন, ভারতীয়রা চায় বাংলাদেশে হিন্দু ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হোক। ভারত চায় তার প্রতিবেশী দেশগুলো সমৃদ্ধি ও শান্তির পথে হাঁটুক। ভারত সবসময় বাংলাদেশের অগ্রগতির শুভাকাঙ্ক্ষী থাকবে।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
নরেন্দ্র মোদি বলেন, বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত ভারতের ১৪০ কোটি মানুষ। বাংলাদেশে যা কিছু ঘটেছে তা নিয়ে প্রতিবেশী দেশ হিসেবে আমরা তাদের উদ্বেগের বিষয়টি বুঝতে পারি। আমি আশা করছি দ্রুত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।
বাংলাদেশের হিন্দু সম্প্রদায়কে নিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। এর আগে বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর তিনি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানান।
শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর তিন দিন বাংলাদেশে কার্যত কোনো সরকার ছিল না। তখন ঢাকাসহ সারাদেশে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলার অভিযোগ ওঠে।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত জাতীয় নির্বাচনে জয় নিয়ে টানা চতুর্থ মেয়াদে ক্ষমতায় আসেন শেখ হাসিনা। তবে কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে জুন মাসে শুরু হওয়া ছাত্র বিক্ষোভ জুলাইয়ের শেষ ও আগস্টের শুরুর দিকে গণঅভ্যুত্থানে রূপ নেয়। এতে সরকার গঠনের মাত্র সাত মাস পরই ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য হয় শেখ হাসিনা সরকার, পরবর্তীতে রাষ্ট্রপতি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ বিলুপ্ত ঘোষণা করেন।
বাংলাদেশি কায়দায় ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করছে বিরোধীরা: মমতা
কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে চিকিৎসক ধর্ষণ-হত্যার ঘটনায় উত্তাল গোটা পশ্চিমবঙ্গ। চলছে বিক্ষোভ-আন্দোলন। এ পরিস্থিতিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, বিরোধী দলগুলো বাংলাদেশি কায়দায় বিক্ষোভ চালিয়ে তার হাত থেকে ক্ষমতা কেড়ে নিতে চাচ্ছে।
বুধবার (১৪ আগস্ট) বেহালায় প্রাক্-স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন মমতা। সেখান থেকেই আর জি করের ঘটনা এবং তার প্রতিবাদ আন্দোলন প্রসঙ্গে বেশ কিছু কথা বলেছেন তিনি।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখার সময় মমতা বলেন, মার্কসবাদী কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিআইএম) ও বিজেপি পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতা কুক্ষীগত করতে বাংলাদেশের মতো বিক্ষোভ আয়োজনের চেষ্টা চালাচ্ছে।
তিনি ‘বাংলার অপমান’ করার জন্য বিরোধী দলের সমালোচনা করেন।
মমতা বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের মদদে বিজেপি ও সিপিআইএম পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে বাংলাকে (পশ্চিমবঙ্গ) অবমাননা করার সমন্বিত উদ্যোগ হাতে নিয়েছে। বাংলাদেশে একটা ঘটনা ঘটে গেছে। অনেকে ভাবছেন, বাংলাদেশের ঘটনা টেনে এনে এখানেও ক্ষমতা দখল করবেন। কিন্তু মনে রাখবেন, আমি ক্ষমতার মায়া করি না। যতদিন বাঁচব, মানুষকে ন্যায়বিচার এনে দেব।
গত ৫ আগস্ট শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের গণবিক্ষোভের মুখে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন শেখ হাসিনা। প্রায় এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা বিক্ষোভের একপর্যায়ে পদত্যাগের পর ভারতে যান শেখ হাসিনা। এখনো সেখানেই আছেন তিনি।
ইতোমধ্যে কলকাতার হাইকোর্ট এ মামলার তদন্তভার কলকাতা পুলিশ থেকে গোয়েন্দা বিভাগ সিবিআইয়ের কাছে হস্তান্তর করেছে। এ পরিস্থিতিতে মমতা কর্মবিরতিতে থাকা চিকিৎসকদের কাজে ফেরার অনুরোধ জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, আপনাদের এখন কাজে ফিরে আসতে হবে। আমার সরকার সিবিআইকে সব ধরনের সহযোগিতা দেবে। আমরাও চাই এ বিষয়টির দ্রুত সুরাহা হোক।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, পশ্চিমবঙ্গে এক ধরনের ‘অশুভ প্রচারণা’ চলছে।
তিনি বলেন, আমরা মামলার তদন্তে যা যা করা প্রয়োজন, আমরা তার সবই করেছি। তা সত্ত্বে এক ধরনের অশুভ প্রচারণা চলছে। আপনারা আমাকে অবমাননা করতে পারেন, কিন্তু রাজ্যের অবমাননা করবেন না।
গত সপ্তাহের বৃহস্পতিবার ভোররাতে আর জি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক জুনিয়র চিকিৎসকের (৩১) ধর্ষণ-হত্যার পর ভারতজুড়ে চলছে চিকিৎসকদের ধর্মবিরতি ও গণবিক্ষোভ।
বিক্ষোভকারীদের মূল দাবি হলো দায়ীদের আটক করে দ্রুত বিচার করা এবং কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে কর্তব্যরত চিকিৎসকদের নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিশ্চিতের জন্য আইন প্রণয়ন।
এই ধর্ষণ ও হত্যার বিরুদ্ধে রাস্তার বিক্ষোভ গতকাল রাত ১১টা ৫৫ মিনিট থেকে ভারতের স্বাধীনতা দিবস উদযাপনের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে শুরু হয়; যা কলকাতার বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ জায়গাসহ অন্যান্য ছোট ও বড় শহরগুলোতে ছড়িয়ে পড়ে।
সূত্র: আনন্দবাজার।
বাংলাদেশের উদাহরণ টেনে যা বললেন ভারতের প্রধান বিচারপতি
ভারতের ৭৮তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বক্তব্যে স্বাধীনতার গুরুত্ব বোঝাতে বাংলাদেশের উদাহরণ টানলেন দেশটির প্রধান বিচারপতি ধনঞ্জয়া ইশান্ত চন্দ্রচূড়।
বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) দিল্লিতে সুপ্রিম কোর্ট চত্বরে দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি বলেন, স্বাধীনতা কতটা গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশের অশান্তি তার একটি স্পষ্ট উদাহরণ।
চন্দ্রচূড় বলেন, বাংলাদেশে আজ যা ঘটছে, স্বাধীনতা আমাদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ তা আমাদের পরিষ্কারভাবে মনে করিয়ে দিচ্ছে। স্বাধীনতা ও মুক্তি লাভ সহজ। কিন্তু এ বিষয়গুলো কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা আমাদের মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য অতীতের ঘটনাগুলো জানা প্রয়োজন।
ছাত্রজনতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান। পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের হাল ধরেন নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
বিক্ষোভে উত্তাল ভারতে এবার বাসের মধ্যে নাবালিকাকে দলবদ্ধ ধর্ষণ
ভারতের আরজি কর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার প্রতিবাদে ফুঁসছে গোটা দেশ। এরই মধ্যে বাসের মধ্যে দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে এক নাবালিকা।
রোববার (১৮ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে দি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
সংবাদ মাধ্যমটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত মঙ্গলবার রাতে একটি পাবলিক বাসে করে ভুক্তভোগী নাবালিকা উত্তরাখণ্ডের মোরাদাবাদ থেকে রাজধানী দেরাদুনের আন্তঃরাজ্য বাস টার্মিনালে পৌঁছায়। সেখানেই দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয় পাঞ্জাবের মেয়েটি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ধর্ষণের চারদিন পর গত শনিবার (১৭ আগস্ট) একটি মামলা নথিবদ্ধ করে তদন্তও শুরু করেছে পুলিশ। এরই মধ্যে সন্দেহভাজন একজনকে হেফাজতে নিয়েছে তারা।
প্রসঙ্গত, গত ৮ আগস্ট আরজি কর হাসপাতালে নাইট ডিউটিতে ছিলেন তরুণী চিকিৎসক। পরের দিন রাতে তিনি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সেমিনার হল থেকে তার ক্ষতবিক্ষত মরদেহ উদ্ধার হয়। তদন্তে নেমে পুলিশ সঞ্জয় রায় নামে এক সিভিক ভলান্টিয়ারকে গ্রেপ্তার করে।
গত ১৩ আগস্ট কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে এই ঘটনার তদন্তভার যায় সিবিআইয়ের হাতে। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার কর্মকর্তারা সঞ্জয় রায়কে নিজেদের হেফাজতে নিয়েছেন। ঘটনার প্রতিবাদে উত্তাল ভারত। একটানা কর্মবিরতি জারি রেখেছেন রাজ্যের একাধিক হাসপাতালের চিকিৎসক ও নার্সরা। দিল্লিসহ ভারতের নানা প্রান্তের চিকিৎসকরাও প্রতিবাদে অংশ নেন।
ইতালিতে উদ্ধার ব্রিটিশ ব্যবসায়ীসহ পাঁচজনের মৃতদেহ
ব্রিটিশ প্রযুক্তি ব্যবসায়ী মাইক লিঞ্চের স্ত্রীর ইয়টটি ইতালির সিসিলির কাছে সোমবার ডুবে যায়৷ সেই নৌকায় ছয়জন যাত্রী ছিলেন৷ এখনও খোঁজ চলছে ইয়টে থাকা লিঞ্চের কন্যার৷ বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা একটি সামুদ্রিক ঘূর্ণিঝড় বা টর্নেডোর কবলে পড়েছিল ইয়টটি৷ দ্য বায়েসিয়ান নামের ১৮৪ ফুট উঁচু এই ইয়টের গায়ে ছিল ব্রিটিশ পতাকা৷ উদ্ধারের কাজ চালাচ্ছে ইতালিয়ান দমকল বিভাগ৷
সরকারিভাবে পরিচিতি শনাক্ত করবার জন্য উদ্ধার হওয়া মৃতদেহগুলিকে উদ্ধারকারী নৌকায় করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়৷ স্থানীয় কর্তৃপক্ষ উদ্ধার হওয়া মৃতদেহের পরিচয় সম্পর্কে কোনো তথ্য দিতে না চাইলেও, বার্তা সংস্থা রয়টার্স কর্তৃপক্ষের সূত্রের বরাত দিয়ে নিশ্চিত করেছে যে নিহতদের মধ্যে ব্রিটিশ প্রযুক্তি ব্যবসায়ী মাইক লিঞ্চও ছিলেন৷
পালেরমো শহরের পোর্তিচেলোর কাছে নোঙর করা ছিল ইয়টটি৷ ঝড়ের মুখে পড়ায় কয়েক মিনিটের মধ্যে ডুবে যায় সেটি৷ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে একটি বহুল চর্চিত জালিয়াতি মামলায় সম্প্রতি নির্দোষ সাব্যস্ত হন ৫৯ বছর বয়সী মাইক লিঞ্চ৷ তা উদযাপন করতেই এই ইয়টে নিজের বন্ধুদের দাওয়াত দেন তিনি৷ লিঞ্চ ও তার কন্যা ছাড়াও এই ইয়টে জুডি ও তার স্বামী, মর্গান স্ট্যানলির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, জনাথন ব্লুমার, আইনজীবী ক্রিস মরভিলো ও তার স্ত্রী নেদাও ছিলেন৷ লিঞ্চের স্ত্রীসহ মোট ১৫জন যাত্রী ইয়ট থেকে প্রাণ হাতে করে ফিরে আসতে সক্ষম হন৷ ইয়টে থাকা শেফ, ক্যানাডিয়ান নাগরিক রেকাল্দো টমাসের মৃতদেহ দুর্ঘটনার কয়েক ঘন্টা পর উদ্ধার হয়৷
ইয়টডুবিতেও রহস্য ও অস্পষ্টতা ইয়টের ক্যাপ্টেনসহ বাকি জীবিত যাত্রীদের ও প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ৷ এই মুহূর্তে কোনো ব্যক্তিই তদন্তাধীন নন৷ ডুবে যাওয়া দ্য বায়েসিয়ান ইয়টটিতে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু অ্যালুমিনিয়ামের মাস্তুল রয়েছে, প্রায় ২৩৬ ফুট, জানায় ইয়টটির প্রস্তুতকারী সংস্থা, পেরিনি৷ নিহত লিঞ্চকে বলা হয় যুক্তরাজ্যের বিল গেটস৷
তার সফটওয়্যার সংস্থা, অটোনমিকে ২০১১ সালে ১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দামে কিনে নেয় প্রযুক্তি সংস্থা এইচপি৷ তারপরই, অটোনমির বিরুদ্ধে জালিয়াতির মামলা দায়ের করে এইচপি, যার বিচার চলছিল এত বছর ধরে৷ জুন মাসে স্যান ফ্রান্সিসকোর একটি আদালত লিঞ্চের বিরুদ্ধে ওঠা সকল অভিযোগ খারিজ করে৷ এই মামলায় তার পক্ষে লড়েন আইনজীবী ক্রিস মরভিলো৷ জনাথন ব্লুমার ছিলেন লিঞ্চের সাক্ষী৷
ম্যাথিউ শানক যুক্তরাজ্যে মেরিটাইম সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ কাউন্সিলের চেয়ার৷ তার মতে, দ্য বায়েসিয়ান একটি উচ্চ শক্তির আবহাওয়াজনিত দুর্যোগের শিকার হয়েছে৷
তিনি বলেন, যদি এটা কোনো ওয়াটার স্পাউট বা সামুদ্রিক ঝড় হতো, যেমনটা দেখে মনে হচ্ছে, তাহলে তাকে আমি কালো রাজহাঁসের মতোই দুর্লভ ঘটনা হিসাবে বলব৷
পেরিনি সংস্থার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জিওভানি কস্টানটিনো বলেন, যে এই ইয়টটি বিশ্বের অন্যতম নিরাপদ ইয়ট ছিল, যা এক অর্থে ডুবতেই পারে না৷ তার মতে এই দুর্ঘটনার পেছনে প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাথে থাকতে পারে মানবিক ভুলের বিষয়টিও৷ টিজিওয়ান টেলিভিশন অনুষ্ঠানে বুধবার তিনি বলেন, ইয়টে পানি ভরে যাওয়ায় সেটি ডুবে যায়৷ সেই পানি কোথা থেকে এলো, সেটা তদন্তকারীরা বলবেন৷
বন্যা মোকাবিলায় বাংলাদেশের পাশে থাকতে চায় পাকিস্তান
বাংলাদেশে বন্যা মোকাবিলায় পাশে থাকতে চান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ইচ্ছার কথা জানান তিনি।
শুক্রবার (২৩ আগস্ট) দুপুরে শেহবাজ শরিফ তার এক্স অ্যাকাউন্টে এ সংক্রান্ত একটি পোস্ট দেন।
শেহবাজ শরিফ তার পোস্ট বলেছেন, কঠিন এ পরিস্থিতিতে পাকিস্তান বাংলাদেশের পাশে থাকবে।
তিনি আরও লেখেন, বাংলাদেশে বন্যায় প্রাণহানি ও ধ্বংসযজ্ঞে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। আমি বাংলাদেশের জনগণ এবং নিহতদের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাই। এই ট্র্যাজেডির মুহূর্তে বাংলাদেশের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছে পাকিস্তান।
আমি আত্মবিশ্বাসী যে, বাংলাদেশের সহনশীল জনগণ তাদের চারিত্রিক অধ্যবসায় ও দৃঢ়তা দিয়ে এই কঠিন সময়কে অতিক্রম করবে।
একইদিন, ঢাকাস্থ পাকিস্তানের হাইকমিশনার সৈয়দ আহমদ মারুফ বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। ঘণ্টাব্যাপী এ বৈঠক হয় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে।
এ সময় মির্জা ফখরুলের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী এবং শামা ওবায়েদ।
বৈঠকে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি ছাড়াও উভয় দেশের স্বার্থসংশ্লিষ্ট নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
ডুম্বুর বাঁধ নিয়ে যা জানালেন ত্রিপুরার মন্ত্রী
তিন দশকেরও বেশি সময়ের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যা হচ্ছে ভারতের উত্তরপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরায়। বৃহস্পতিবার (২২ আগস্ট) বিবিসিকে এ তথ্য জানিয়েছে ত্রিপুরা রাজ্যের এক মন্ত্রী। তিনি বলেন, আগস্ট মাসে স্বাভাবিকের থেকে ১৫১ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে।
রাজ্য প্রশাসন জানায়, বন্যায় এখন পর্যন্ত অন্তত ১২ জন মারা গেছে এবং দুইজন নিখোঁজ হয়েছে। নিহতদের মধ্যে সাতজন গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন। প্রায় ১৭ লাখ মানুষ সেখানে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রী রতন লাল নাথ বিবিসিকে জানান, গোমতী জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের অধীন ডম্বুর জলাধার গোমতী জেলায় অবস্থিত। এই জেলায় আগস্ট মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হওয়ার কথা ১৯৬.৫ মিলিমিটার, অথচ সেখানে বৃষ্টি হয়েছে ৬৫৬.৬ মিলিমিটার যা ২৩৪ শতাংশ বেশি।
মন্ত্রী বলেন, রাজধানী আগরতলাসহ বিস্তীর্ণ এলাকা এখনও পানির নিচে। হাওড়া, খোয়াই, মুহুরী ও ঢলাইসহ রাজ্যের প্রায় সব নদীই বিপৎসীমার ওপর দিয়ে বইছে। ভারতের আবহাওয়া বিজ্ঞান দপ্তর রাজ্যের তিনটি জেলায় লাল সতর্কতা ও বাকিগুলোতে কমলা সতর্কতা জারি করেছে বলে জানান তিনি।
অপরদিকে আগাম সতর্কতা ছাড়াই ভারত ডম্বুর গেট খুলে দেওয়াই বাংলাদেশে ভয়াবহ বন্যা হয়েছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে তা নাকচ করে দিয়েছেন ত্রিপুরার বিদ্যুৎমন্ত্রী রতন লাল নাথ। তিনি বলেন, যে প্রচারটা করা হচ্ছে ডম্বুর গেট খুলে দেওয়া নিয়ে সেটা অপপ্রচার ছাড়া কিছু না।
মন্ত্রী বলেন, এ বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে যেসব জেলা তার মধ্যে আছে গোমতী। সেখানেই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ডম্বুর স্লুইস গেট খুলে দেওয়ায় বাংলাদেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ব্যাপক বন্যা হয়েছে বলে ঢাকার বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে।
তিনি বলেন, এই বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জলাধারটির সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতা ৯৪ মিটার। পানির এর বেশি হলেই নিজ থেকেই গেট দিয়ে বেরিয়ে যাবে। পানি নিচে নেমে গেলে নিজের থেকেই গেট বন্ধ হয়ে যাবে।
তিনি বলেন, পানির স্তর সর্বোচ্চ ধারণ ক্ষমতার বেশি হয়ে যেতেই জলাধারের দুটি গেট দিয়ে পানি বেরোচ্ছে। এর মধ্যে একটি গেট দিয়ে ৫০% হারে পানি বেরোচ্ছে। সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষকে আগে থেকেই মাইকিং করে সতর্ক থাকার অনুরোধও জানানো হয়েছিল।
তিনি বলেন, ১৯৯৩ সালের ২১ আগস্ট ত্রিপুরার সাব্রুমে একদিনে ২৪৭ মিলিমিটার বৃষ্টির রেকর্ড ছিল। আর এ বছর ২০ আগস্ট একদিনে বৃষ্টি হয়েছে ৩৭৫.৮ মিলিমিটার। ঠিক ৩১ বছর পরে একদিনে এত বেশি বৃষ্টি হয়েছে। পুরো মাসের হিসাব যদি দেখি, আগস্টের ২১ দিনে স্বাভাবিক বৃষ্টি হওয়ার কথা ছিল ২১৪ মিলিমিটার। সেখানে বৃষ্টিপাত হয়েছে ৫৩৮. ৭ মিলিমিটার অর্থাৎ ১৫১% বেশি। এত বেশি বৃষ্টিপাত হওয়ায় স্বাভাবিকভাবেই বড় বন্যা দেখা গেছে বলে ভাষ্য রতন লালের।
রাজধানী আগরতলা থেকে ১২০ কিলোমিটার দূরে ডম্বুর হ্রদ। সেখানে পরিবেশ সংরক্ষণ নিয়ে কাজ করা রাজ বসু বলেন, রাইমা ও সরমা দুটি ছোট নদী স্থানীয়রা যাদের ছড়া বলে। এই নদী দুইটির তীর্থমুখ হ্রদে এসে মিশেছে। মিলিত স্থান থেকেই গোমতীর উৎপত্তি। ত্রিপুরার বেশিরভাগ নদী বা ছড়ার মতোই গোমতীও স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশের দিকে বয়ে গেছে। ডম্বুর হ্রদে প্রায় ৪৮টি ছোট ছোট দ্বীপ রয়েছে। শীতকালে অনেক পরিযায়ী পাখি এখানে আসে। তাই এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন স্থলও।
তিনি আরও জানান, বর্ষাকালে ত্রিপুরা বা উত্তর পূর্বাঞ্চলের অন্যান্য এলাকায় অথবা বাংলাদেশের অভ্যন্তরের লাগোয়া এলাকাগুলোতে যে রকম ফ্লাড-প্লেইনস দেখা যায় এটিও সেরকমই একটি অঞ্চল। অনেকদিন ধরেই ধরেই এই অঞ্চল জীববৈচিত্রের জন্য বিখ্যাত।