• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

রোহিঙ্গা ইস্যুতে ব্যর্থ ব্রিটিশ পররাষ্ট্রনীতি : পার্লামেন্ট প্রতিবেদন

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১২ ডিসেম্বর ২০১৭, ১৯:৩২

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের এক প্রতিবেদনে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমার সেনাবাহিনীর চালানো নির্যাতনকে জাতিগত নিধন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এ ইস্যুতে ব্রিটেনের পররাষ্ট্র বিভাগ যথার্থ ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হয়েছে বলেও ওই প্রতিবেদনে মন্তব্য করা হয়।

ব্রিটিশ পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সের পররাষ্ট্রবিষয়ক সংসদীয় কমিটি এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। ‘রাখাইন রাজ্যে সংঘাত এবং ব্রিটেনের ভূমিকা’ শীর্ষক প্রতিবেদনটি গতকাল সোমবার প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের ঘটনা মানবতাবিরোধী অপরাধের পর্যায়ে পড়ে এবং এটি গণহত্যারও শামিল।

ব্রিটিশ সরকারের কড়া সমালোচনা করে প্রতিবেদনে বলা হয়, রোহিঙ্গা ইস্যুতে ব্রিটেন তার নিজস্ব মানদণ্ড অনুযায়ী যথার্থ ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হয়েছে। এ সংঘাতকে সংজ্ঞায়িত করার ক্ষেত্রে ব্রিটিশ সরকারের বক্তব্যগুলো চরমভাবে বিভ্রান্তিকর ছিল বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয়, যেকোনো সংঘাতের যথাযথ সংজ্ঞা নির্ধারণ জরুরি। কেননা, এটি সুরক্ষার দায়দায়িত্বকে সামনে নিয়ে আসে এবং রাষ্ট্রগুলোকে ভূমিকা পালনে বাধ্য করে।

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের পরিস্থিতি এবং ব্রিটেনের পররাষ্ট্র বিভাগ এ নিয়ে কী ভূমিকা পালন করেছে, তার মূল্যায়ন করতেই এই প্রতিবেদন তৈরি করে দেশটির পররাষ্ট্র দপ্তর। ৩৭ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে দেশটির একক ভূমিকা এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে যৌথ ভূমিকার বিষয়গুলো আলাদা আলাদাভাবে মূল্যায়ন করা হয়। রোহিঙ্গা পরিস্থিতির মূল্যায়নে দ্রুত সরকারকে নিজস্ব তদন্তের পরামর্শ দেওয়া হয়।

পরিস্থিতি বিবেচনায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ভূমিকাকে ‘অপর্যাপ্ত’ আখ্যায়িত করে প্রতিবেদনে বলা হয়, জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে প্রস্তাব উত্থাপনকারী হিসেবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন আদায়ে ব্যর্থ হওয়ার দায় ব্রিটেনেরও আছে। জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে চীনের হস্তক্ষেপে প্রস্তাব পাস না হওয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে এতে বলা হয়, আঞ্চলিক মিত্র ও জোটের সঙ্গে মিলে ব্রিটেনের উচিত সমাধান খোঁজা।

প্রতিবেদনে বলা হয়, অবরোধ আরোপ যদিও কোনো উপযুক্ত পন্থা নয়। কিন্তু মিয়ানমারের কোনো সমালোচনা না করে একতরফা সম্পর্ক অব্যাহত রাখাটা ব্রিটেনের জন্য সমীচীন নয়। পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি না ঘটলে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সিনিয়র কর্মকর্তা ও ব্যবসার ওপর অবরোধ আরোপের বিষয়টি বিবেচনা করা উচিত।

রোহিঙ্গা নির্যাতনের পুরো দায় মিয়ানমার সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল মিন অং হেইংয়ের ওপর বর্তায় বলেও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে। বেসামরিক সরকারের প্রধান স্টেট কাউন্সেলর অং সাং সু চির নীরবতা সমালোচনা করে প্রতিবেদনে বলা হয়, যদিও দেশটির গণতন্ত্রে উত্তরণের পথে নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে সু চির বিকল্প নেই। কিন্তু তিনি ইতোমধ্যে নিজেকে নীতিভ্রষ্ট হিসেবে প্রমাণ করেছেন।

প্রতিবেদনে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়ে মানবিক উদাহরণ তৈরির জন্য বাংলাদেশের উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করা হয়। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন প্রসঙ্গে বলা হয়, বাস্তুহারা মানুষদের ভবিষ্যৎ নির্ধারণের কাজটি বেশ চ্যালেঞ্জের। নিরাপদ ও স্বেচ্ছায় প্রত্যাবাসনের ওপর জোর দেওয়া হয় প্রতিবেদনে।

গেলো ২৫ আগস্ট রাখাইনে সেনা অভিযান শুরু হলে ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা প্রতিবেশী বাংলাদেশে পালিয়ে আসে।

এ/এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • আন্তর্জাতিক এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে যাচ্ছেন ব্রিটিশ পার্লামেন্ট প্রতিনিধি দল
ঢাকায় আস‌ছেন ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ৪ সদস্য
X
Fresh