• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
logo

সাপ আতঙ্কে দমকলে ফোনকল

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

  ১৬ নভেম্বর ২০১৭, ২১:৩৬

ফিনো পাকফিনোর অগ্নি নির্বাপণ কেন্দ্রে সবশেষ যে ফোনকলটি এসেছিল, সেটা কোনো বাসভবন বা অফিস ভবনে আগুন সম্পর্কিত ছিল না। নিজের গ্যারেজের ছাদে ঝুলে থাকা ১০ ফুট লম্বা একটি পাইথনের (ময়াল সাপ) হাত থেকে রক্ষা পেতে ফোনটি করেন এক ব্যক্তি।

কয়েক ঘণ্টার মধ্যে চ্যানাম চিসা নামের আরেক ব্যক্তি ফোন করেন তার বাথরুম থেকে একটি সবুজ রঙের সাপ সরাতে। তিনি এই বছর তৃতীয়বারের মতো দমকল বাহিনীকে ফোন করার জন্য ক্ষমা প্রার্থনাও করেন।

তিনি বলেন, আমি ২০ বছর ধরে এই বাসায় বসবাস করছি। এতো দিন আমরা এখানে কোনো সাপ দেখিনি। কিন্তু এই বছর আমরা প্রায় প্রতি মাসেই সাপ দেখতে পাচ্ছি।

ফিনো বলেন, আমরা আগুন নেভানোর চেয়ে সাপ ধরার জন্য বেশি ফোন পাই। তবে আমি মনে করি আগের চেয়ে লোকজন এখন বেশি সচেতন। আগে তারা লাঠি বা এই জাতীয় কিছু একটা দিয়ে নিজেরাই সাপ মারত। কিন্তু এখন দমকল বাহিনীকে ফোন করে।

এটি থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককের সাম্প্রতিক অবস্থা। দিন দিন সাপের সংখ্যা বাড়ায় এখানকার এক কোটি মানুষ অতিষ্ঠ। এগুলো আতঙ্কগ্রস্ত করে তুলেছে তাদের।

গ্রিনপিস সাউথইস্ট এশিয়ার কান্ট্রি ডিরেক্টর তারা বুয়াকামস্রি বললেন, সম্প্রতি ব্যাংককে বেশি মাত্রায় সাপ দেখা যাচ্ছে। কারণ এটা বন্যাপ্লাবিত জলাভূমি এবং সাপসহ বিভিন্ন উভচর প্রাণীর আবাসস্থল। বর্ষাকালে ব্যাংককের এই অপেক্ষাকৃত নিচু ভূমিতে সাপ, গিরগিটিসহ অন্যান্য সরীসৃপ প্রাণীর বসবাসের আধিক্য বেড়ে যায়।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এসব জলাভূমিতে বাসাবাড়ি তৈরি করা হয়েছে বলে উল্লেখ করেন তিনি।

জাতীয় পার্ক ও বন্যপ্রাণী বিভাগে পশু চিকিৎসক হিসেবে কাজ করা পিয়া সাইরীরাক বলেন, শহরে আবর্জনার পরিমাণ বাড়ায় সাপের সংখ্যাও বেড়ে গেছে। কারণ এসব আবর্জনায় থাকা ইঁদুর ও পাখিরা সাপের জন্য অনুকূল শিকার।

তিনি বলেন, বনেজঙ্গলে থাকা ঈগল ও বড় বড় পাখিরা সাপ খায়। এছাড়া অন্যান্য সরীসৃপ প্রাণীরা সাপের ডিম খায়। কিন্তু ব্যাংককের মতো বড় শহরে সাপ শিকার করে এমন কোনো প্রাণী নেই।

পিয়া পরিচালিত একটি বন্যপ্রাণী ক্লিনিকে একমাসে দমকল বাহিনীর কর্মীরা প্রায় ৩০০ থেকে ৪০০ সাপ উদ্ধার করে নিয়ে আসে। প্রতি সপ্তাহে তার ক্লিনিকের কর্মচারীরা শহর থেকে ধরা এসব সাপ ট্রাকে করে জঙ্গলে রেখে আসে।

শহর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্যাংককে ধরা পড়া সাপের সংখ্যা বেড়েছে। ২০১৩ সালে ১৬ হাজার সাপ ধরা পড়েছিল। কিন্তু এই সংখ্যা বেড়ে ২০১৬ সালে দাঁড়িয়েছে ২৯ হাজারে। গেলো বছর এই সংখ্যা বেড়েছে ৩০ শতাংশ হারে।

দি এনভায়রনমেন্টাল ফাউন্ডেশন ইকোলজিক্যাল অ্যালার্ট অ্যান্ড রিকভারি থাইল্যান্ডের ডিরেক্টর পেনছম সাইটাঙ বলেন, প্রতি বছর ব্যাংককে বিপুল পরিমাণ আবর্জনা জমা হয়। শহরটি আবর্জনা ব্যবস্থাপনা সিস্টেম এই বিপুল পরিমাণ আবর্জনার জন্য যথেষ্ট নয়।

এ বছরের জুলাই মাসে প্রিনপিসের এক রিপোর্টে বলা হয়, দেশটিতে দুই হাজার ৪৯০টি আবর্জনা ব্যবস্থাপনা কেন্দ্র রয়েছে। কিন্তু এগুলোর মধ্যে মাত্র ৪৬৬টি ভালোভাবে কাজ করে।

থাইল্যান্ডে কিং কোবরা, করেত ও পিট ভাইপার সবমিলিয়ে ৩০০ প্রজাতির সাপ আছে। এগুলোর ১০ শতাংশই বিষধর।

কে/এসজে

মন্তব্য করুন

daraz
  • আন্তর্জাতিক এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
নিয়োগ দেবে ইউএস-বাংলা, সাপ্তাহিক ছুটি ২ দিন
সাপ আতঙ্কে পুলিশ!
টেকনাফ সীমান্তে ফের মর্টারশেলের বিকট শব্দ, আতঙ্কে স্থানীয়রা
সাপের কামড়ে গৃহবধূর মৃত্যু
X
Fresh