মদের নেশা পেতে গোখরার কামড় খেয়ে হাসপাতালে লালন
বিহারে মদ নিষিদ্ধ করেছে ভারত সরকার। যাদের পকেটের জোর আছে, তারাই চোরাপথে কয়েকগুণ বেশি দাম দিয়ে মদের ব্যবস্থা করেন। কিন্তু যাদের সেই উপায় নেই তারা বাধ্য হয়েই বিকল্প নেশার ব্যবস্থা করে নিয়েছেন। সেরকমই এক হতভাগ্য সুরাপ্রেমী বিহারের সমস্তিপুরের বাসিন্দা রানা তপেশ্বর সিংহ ওরফে লালন সিংহ।
এক হাজার টাকা দিয়ে সাপুড়ের কাছ থেকে তরতাজা একটা গোখরা সাপ কেনেন লালন। বাড়ির পেছনের ঝুপড়িতে প্লাস্টিকের কৌটায় ভরে রেখে দেন সেটিকে। টের পাননি কেউই।
প্রতিদিন একটা করে জ্যান্ত ব্যাঙ খেতে দিতেন পোষা গোখরাকে। ব্যাঙ না মিললে সেদ্ধ ডিম। তারপরই হাত ঢুকিয়ে দিতেন ওই কৌটায়। আলতো একটা ছোবলেই যেন এক বোতল মদের নেশা পেতেন।
সবকিছু চলছিল ঠিকঠাক। তবে গেলো রোববার হয়ে যায় হিসাবের গরমিল। বাড়ির কাজে কয়েক দিনের জন্য বাইরে ছিলেন লালন। ফেরেন সেদিন সকালে। খাবার না পেয়ে চটে ছিল গোখরাটি। কয়েক দিনে সেটির বিষথলিও ভরে উঠেছিল। নেশার ঝোঁকে তিনি সব ভুলে কৌটায় হাত ঢুকিয়ে দেন লালন। কাল ছোবল বসায় সাপটি।
মুহূর্তে মাথা ঘুরে যায় লালনের। ভেবেছিলেন, নেশাটা হয়তো একটু বেশিই হয়ে গেছে। গলা শুকিয়ে কাঠ। পেটপুরে জল খেয়ে স্নানে যান তিনি। টলমল পায়ে স্নানঘর থেকে বেরুতেই বাড়ির লোকেরা দেখেন, গ্যাঁজলা বের হচ্ছে লালনের মুখ দিয়ে। সঙ্গে সঙ্গেই তাকে নিয়ে যাওয়া হয় সমস্তিপুর হাসপাতালে।
চিকিৎসকরা বলেন, সাপে কামড়েছে লালনকে। পর পর ১৮টি ইনজেকশন দেয়া হয় তাকে।
মঙ্গলবার অনেকটা সুস্থ হন লালন। চিকিৎসকদের প্রশ্নে সব কথা জানান। হতবাক হন সবাই। ভয়ে ভয়ে বাড়ি ফিরেই কৌটাবন্দি সাপটিকে মেরে ফেলেন লালনের স্বজন।
হাসপাতালের চিকিৎসক জয়কান্ত পাসোয়ান বলেন, জীবনে এমন রোগী দেখিনি। দিনের পর দিন সাপের ছোবল খেয়ে নেশার কথা শুনে আমি তো অবাক।
এপি/সি
মন্তব্য করুন