• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

স্কুলে ফেরাতে বাড়ি বাড়ি শিক্ষকরা, দেখলেন নবম শ্রেণির ছাত্রী সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা!

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, আরটিভি নিউজ

  ০৬ ডিসেম্বর ২০২১, ১১:৫৩
স্কুলে ফেরাতে গিয়ে শিক্ষকরা দেখলেন, নবম শ্রেণির ছাত্রী সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা!
ফাইল ছবি

কয়েক সপ্তাহ আগে ভারতে স্কুল খুলেছে। তবে অনেককেই আর আসতে না-দেখে হুগলির জাঙ্গিপাড়া ব্লকের নিলারপুর রাজা রামমোহন বিদ্যাপীঠের শিক্ষক-শিক্ষিকারা চিন্তায় পড়েছিলেন। ছাত্রছাত্রীদের ফেরাতে তারা বাড়িতেই হাজির হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। ‘অভিযানে’ নেমে শুক্রবার কয়েকটি বাড়িতে গিয়ে তারা রীতিমতো অবাক হয়ে যায়।

দেশটির মিরপুর গ্রামের ক্লাস সেভেনের টিয়া মালিক (নাম পরিবর্তিত) করোনার ছুটিতে বিয়ে করে ফেলেছে। মা-ও হয়েছে। টিয়ার মা জানালেন, মেয়ের বয়স ১৪। নাতনির এক মাস। বললেন, ‘মেয়ে যাকে ভালোবাসত, তাকেই বিয়ে করে নিয়েছে। কী করব বলুন?’ শিক্ষক বলেন, ‘স্কুলকে জানিয়েছিলেন?’ মায়ের মুখে উত্তর নেই।

সেখান থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকারা গেলেন কাশীপুরে। দেখা গেল, নাইনে পড়তেই গত পৌষে বিয়ে হয়েছে বৈশাখী মালিকের (নাম পরিবর্তিত)। পঞ্চদশী এখন সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। কাশীপুরে মামার বাড়িতে মানুষ। দিদিমা বলেন, ‘ওর বাবার মাথার সমস্যা। জেঠু-জেঠিমা ভালো পাত্র পেয়ে সম্বন্ধ করেছেন।’ শিক্ষিকা বৈশাখীকে জিজ্ঞাসা করেন, ‘পড়া ছাড়লি কেন?’ বারান্দার বাঁশ আঁকড়ে ধরে ফ্যালফেলিয়ে চেয়ে থাকে নাবালিকা।

প্রধান শিক্ষক গৌতম বালির আক্ষেপ, ‘কী অবস্থা!’ আশপাশের অনেক গ্রামের ছেলেমেয়ে ওই স্কুলে পড়ে। এই কদিনে দশম-দ্বাদশের তিনশোরও বেশি ছাত্রছাত্রীর মধ্যে সর্বাধিক উপস্থিতি ৫৬। নবম-একাদশে ২৩৪ জনের মধ্যে ৫৪। শিক্ষার্থীদের স্কুলে টেনে আনতে মাইকে প্রচার করা হয়। লাভ হয়নি। তাই, বুধবার থেকে বাড়ি বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত।

দেখা যাচ্ছে, পড়া ফেলে ছাত্র খেতমজুর হয়েছে। ধানকাটা, আলু লাগানোর কাজ করছে। কেউ গ্যারেজে কাজ করছে। মাধ্যমিকের জন্য নাইনের কয়েকজনের রেজিস্ট্রেশনের কাজ বাড়িতে বা কাজের জায়গায় গিয়ে করিয়ে নেন শিক্ষকরা। অনেকেই জানায়, ‘বড় ফোন’ (স্মার্টফোন) নেই। অনলাইন ক্লাস কাজে আসেনি।

গ্যারাজে কাজ শিখছে হরিহরপাড়ার ক্লাস নাইনের শেখ খালেক (নাম পরিবর্তিত)। দশম শ্রেণির আর এক ছাত্র হায়দরাবাদে গয়নার কাজ করতে যাবে বলে প্রস্তুত। শিক্ষকদের কথায় দুজনেই জানায়, স্কুলে যাবে। অভিভাবক প্রতিশ্রুতি দেন, ছেলেমেয়েকে স্কুলে পাঠাবেন। কেউ কেউ কথা দেন, মেয়েকে শ্বশুরবাড়ি থেকে এনে পড়ানোর চেষ্টা করবেন। এক ছাত্রীর শ্বশুরবাড়ির লোককেও এ নিয়ে ফোনে বোঝাতে দেখা যায় উদ্বিগ্ন শিক্ষককে।

এসএস/টিআই

মন্তব্য করুন

daraz
  • আন্তর্জাতিক এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
ফরিদপুরে স্কুলশিক্ষার্থী অন্তর হত্যায় ৩ জনের ফাঁসি
শনিবারও স্কুল খোলা রাখার ইঙ্গিত শিক্ষামন্ত্রীর
স্কুলের গাছ বিক্রি করে প্রধান শিক্ষক কারাগারে
স্কুলছাত্রীকে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টা মামলায় প্রধান আসামি কারাগারে
X
Fresh