• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo

কতটা ফিলিস্তিনবান্ধব হবেন ইসরায়েলের নয়া প্রধানমন্ত্রী?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, আরটিভি নিউজ

  ১৪ জুন ২০২১, ১৩:১৭
কতটা ফিলিস্তিনবান্ধব হবেন ইসরায়েলের নয়া প্রধানমন্ত্রী?
ইসরায়েলের নতুন প্রধানমন্ত্রী নাফতালি বেনেট - সংগৃহীত ছবি

দীর্ঘ ১২ বছর পর ইসরায়েলের ক্ষমতা থেকে বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে সরিয়ে নতুন প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন আরেক কট্টর ইহুদি জাতীয়তাবাদী রাজনীতিক নাফতালি বেনেট। ডান-বাম এবং মধ্যপন্থী সাতটি দলের সমন্বয়ে গঠিত নতুন একটি কোয়ালিশন সরকার রোববার বিকেলে ৬০-৫৯ ভোটে ইসরায়েলের পার্লামেন্ট নেসেটের অনুমোদন পেয়েছে। প্রায় চার ঘণ্টা ধরে এ অধিবেশন চলে।

কোয়ালিশন শরিকদের মধ্যে শুক্রবার সই হওয়া চুক্তি অনুযায়ী আগামী দুই বছর অর্থাৎ ২০২৩ সালের অগাস্ট পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী থাকবেন কট্টর জাতীয়তাবাদী দল ইয়ামিনার নেতা নাফতালি বেনেট। তারপর তাকে ক্ষমতা তুলে দিতে হবে মধ্যপন্থী রাজনীতিক ইয়ার লাপিডের হাতে, যিনি নতুন এই কোয়ালিশন তৈরির মূল হোতা ছিলেন।

বেনেট প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেবার পরপরই মার্কিন জো বাইডেন তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। নেতানিয়াহু এখন হবেন বিরোধীদলীয় নেতা। ইসরায়েলের ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর এখন দুটি প্রশ্ন সামনে চলে আসছে - নানা মত ও পথের সমন্বয়ে এই কোয়ালিশন আদৌ কত দিন টিকবে, এবং ইসরায়েল-ফিলিস্তিনি সঙ্কট নিয়ে নতুন এই সরকারের অবস্থান কী হবে?

নাফতালি বেনেতের রাজনৈতিক আদর্শ, তার বিশ্বাস, ফিলিস্তিন সঙ্কট নিয়ে তার অতীতের বক্তব্য-বিবৃতি বিবেচনা করলে ফিলিস্তিনিদের পক্ষে আশাবাদী হওয়ার কোনো কারণ আপাতদৃষ্টিতে নেই।

৪৯ বছরের নাফতালি বেনেট ছিলেন একসময় নেতানিয়াহুর খুব ঘনিষ্ঠ। তার কট্টর ডানপন্থী আদর্শ নিয়ে তার কোনো রাখঢাক নেই। বিভিন্ন সময় বড়াই করে তিনি বলেছেন নেতানিয়াহুর চেয়েও তিনি বেশি ডানপন্থী। অতি ধার্মিক ইহুদিদের মতো বেশির ভাগ সময়ে মাথায় কিপা (এক ধরণের টুপি) পরে থাকেন তিনি। উদারপন্থী ইহুদিদের সুযোগ পেলেই উপহাস করেন।

অধিকৃত পশ্চিম তীর, পূর্ব জেরুসালেম এবং সিরিয়ার কাছ থেকে দখল করা গোলান মালভূমির ওপর ইসরায়েলের স্থায়ী কর্তৃত্ব এবং সার্বভৌমত্ব কায়েমের পক্ষে তিনি। কট্টর ইহুদিদের মতো তিনি বিশ্বাস করেন, ঐতিহাসিকভাবে এসব এলাকা ইসরায়েলের এবং ওই কারণে পশ্চিম তীরকে তিনি সবসময় হিব্রু বাইবেলে বর্ণিত ‘জুদেয়া-সামারিয়া’ নামে অভিহিত করেন।

পশ্চিম তীরে ইহুদি বসতি সম্প্রসারণের কট্টর সমর্থক তিনি। একসময় তিনি ইহুদি বসতি-স্থাপনকারীদের সংগঠন ইয়েশা কাউন্সিলের প্রধান ছিলেন। তাকে মানুষ চেনে ‘বসতি-স্থাপনকারীদের নেতা’ হিসাবে। স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের ঘোর বিরোধী তিনি। বিভিন্ন সময় তিনি ফিলিস্তিন সমস্যাকে তিনি ইসরায়েলের ‘পশ্চৎদেশের ওপর বিষফোঁড়া’ বলে বর্ণনা করেছেন।

ফেব্রুয়ারি মাসে টিভিতে এক সাক্ষাৎকারে নাফটালি বেনেট বলেছিলেন, যতক্ষণ আমার হাতে কোনো ক্ষমতা এবং নিয়ন্ত্রণ থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত ইসরায়েলের এক সেন্টিমিটার জমি আমি ছাড়ব না। এমনকি ইসরায়েলে মৃত্যুদণ্ডের বিধান না থাকলেও ফিলিস্তিনি উগ্রবাদীদের ধরে মৃত্যুদণ্ড দেয়ার পক্ষপাতীও তিনি।

বেনেট যে আপসে প্রস্তুত তার কিছুটা ইঙ্গিত ইতিমধ্যেই পাওয়া গেছে। শুক্রবার কোয়ালিশনের মধ্যে চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার পর নাফতালি বেনেট বলেন, তার সরকার ইসরায়েলের সব নাগরিকের জন্য সমানভাবে কাজ করবে- ‘ধার্মিক, ধর্ম-নিরপেক্ষ, অতি-ধার্মিক, আরব- সবার জন্য সমানভাবে সরকার কাজ করবে কাজ করবে। আমার বিশ্বাস আমরা সফল হবো।’

এসব বিবেচনা করে সাধারণ ফিলিস্তিনিরা মনে করছে নতুন সরকার অন্তত মন্দের ভালো হতে পারে। তাদের জীবনমানের কিছু উন্নতি হয়তো হবে।

সূত্র : বিবিসি

টিএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • আন্তর্জাতিক এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh