• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

১০০ বছর ধরে খালি চোখে নতুন চাঁদ দেখছে যে পরিবারের সদস্যরা

  ১৩ মে ২০২১, ১৫:৩১
Saudi family of crescent sighters carrying on 100-year-old tradition
সংগৃহীত

যখন নতুন চাঁদ দেখার কথা আসে তখন সৌদি আরবের একটি পরিবার অন্য সবার চেয়ে অনেক অলোক বর্ষ এগিয়ে। ১০০ বছরের বেশি সময় ধরে আল-বারঘাশ পরিবারের সদস্যরা তাদের তীক্ষ্ণ চোখ দিয়ে প্রতি মাসের নতুন চাঁদ দেখছেন। এজন্য তারা টেলিস্কোপ বা অন্য কোনও আধুনিক যন্ত্র ব্যবহার করেন না। খবর আরব নিউজের।

এই পরিবারের সদস্যরা বংশপরম্পরায় এই ঐতিহ্য পালন করে আসছে। রিয়াদ থেকে ১৪০ কিলোমিটার উত্তরপশ্চিমে সৌদি শহর তুমেইরে বাস করে আল-বারঘাশ পরিবার। মুতেইব আল- বারঘাশ বলেন, এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে উপহার, আমরা আমাদের বাবা-মা এবং পূর্ব পুরুষদের কাছ শেখা এই জ্ঞান আমাদের বাচ্চাদের শেখাতে পারছি।

তিনি বলেন, আমার বাবা এবং তার বন্ধুরা রমজান এবং জিলহজ মাসের চাঁদ দেখার জন্য একটি ওয়াচ টাওয়ারে দাঁড়াতেন। আমাদের আবেগে পরিণত হওয়ার আগ পর্যন্ত আমার বাবা আমাকে এবং আমার ভাইয়ের এই চাঁদ দেখার বিষয়ে শিক্ষা দেন। এখন ওই টাওয়ারে একটি অবজারভেটরি প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। মানুষজন চাঁদ দেখার প্রশিক্ষণ নিতে আসে এখানে।

মুতেইব বলেন, এই প্রশিক্ষণ এবং চাঁদ দেখার বিষয়ে শিক্ষা দেয়া আমরা মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) এর কাছ থেকে পেয়েছি। তিনি আমাদের চাঁদ থেকে রোজা শুরু এবং শাওয়াল মাসের চাঁদ দেখে রোজা শেষ করার কথা বলেছেন। মুতেইবের দাদা ইব্রাহিমের ২০/২০ ভিশন ছিল। মুতেইব বলেন, আমার বাবা আব্দুলরহমান তার কাছ থেকে এই প্রতিভা উত্তরাধিকার সূত্রে পান। আমাদের পরিবারের সবাই তীক্ষ্ণ দৃষ্টিশক্তির জন্য সুপরিচিত।

তিনি বলেন, আমি এবং আমার ভাইরা সবাই চাঁদ দেখায় বিশেষজ্ঞ। মেঘলা আকাশ আর তুমেইল, হৌতাত সুদেইর এবং শাকরার আকাশে আবহাওয়া খারাপ হলেই কেবল তাদের চাঁদ দেখা কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হয়। এই তিনটি জায়গায়ই মালভূমি। তাই পরিষ্কার আকাশে চাঁদ দেখার জন্য এগুলো সবচেয়ে ভালো স্থান। তিনি বলেন, গত ১৬ বছর ধরে চাঁদ দেখতে আমরা প্রতি মাসে এই মালভূমি আরোহণ করি।

কিন্তু এখন প্রযুক্তি অনেক এগিয়েছে। তাই চাঁদ দেখা ব্যক্তিদের প্রয়োজনীয় প্রায় ফুরিয়ে গেছে। এ প্রসঙ্গে মুতেইব বলেন, নতুন এবং পুরনো পথ একে অপরের পরিপূরক। তিনি বলেন, আমাদের ছেলেদের বিজ্ঞান সম্পর্কে ধারণা পেতে এবং সঠিকভাবে বুঝতে প্রতি মাসে আমাদের সঙ্গে এই মালভূমিতে আসে। আবার ভবিষ্যতে চাঁদ দেখা হিসেবে গড়ে তুলতে আমরা তুমেইর অবজারভেটরিতে ৫ জনের বেশি ব্যক্তিকে প্রশিক্ষণ দিচ্ছি।

চাঁদ দেখার প্রক্রিয়ার ওপর অনেক গুরুত্ব দেয় সৌদি আরব। আর যারা চাঁদ দেখেন তাদের বেশ কয়েকটি ক্যাটাগরি দিয়ে বিশেষ করে চোখের মেডিকেল পরীক্ষা করে তাদের নির্ভরযোগ্যতা নিশ্চিত করে সৌদি আরবের সুপ্রিম কোর্ট। এরপর সেই ফলাফল বিচার মন্ত্রণালয়ের অধিভুক্ত একটি বিশেষ কমিটিতে জমা দেয়া হয় এবং রাজকীয় ডিক্রি দ্বারা অনুমোদিত হয়।

পরে বিচারমন্ত্রী ড. ওয়ালিদ আল-সামানি কমিটির কাজের ফলোআপ করেন। এই ব্যক্তিদের পরে সৌদির বিভিন্ন অবজারভেটরিতে নিয়ে যাওয়া হয়। আর পুরো বিষয়টা দেখভাল করে কিং আব্দুলআজিজ সিটি ফর সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (কেএসিএসটি)। এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে সরকারি বিভিন্ন সংস্থাও যুক্ত থাকে।

মন্তব্য করুন

daraz
  • আন্তর্জাতিক এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
চাঁদ দেখা গেছে, বৃহস্পতিবার ঈদ
সবার আগে যে দুই দেশে পালিত হলো ঈদ
চাঁদ দেখা যায়নি, ঈদ বৃহস্পতিবার
বৈঠকে বসেছে চাঁদ দেখা কমিটি
X
Fresh