করোনায় বাঁচলেও কালো ছত্রাকে পঙ্গু হয়ে যাচ্ছেন অনেক ভারতীয়
প্রাণঘাতী করোনায় বেঁচে ফিরলেও তারই জেরে জটিল রোগে পঙ্গু হয়ে যাচ্ছেন অনেক ভারতীয় নাগরিক। বিশেষ করে যাদের আগে থেকেই ডায়াবেটিস আছে তাদের ক্ষেত্রে এমনটা হচ্ছে।
এর ফলে অধিকাংশেরই চিরস্থায়ীভাবে পঙ্গু হয়ে যেতে হচ্ছে। এতে মৃত্যুর হার প্রায় ৫০ শতাংশ। রোগটিকে বলা হয় ‘ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বা কালো ছত্রাক’।
রোববার (৯ মে) এক প্রতিবেদনে বিবিসি জানায়, মুম্বাইতে তিন সপ্তাহ আগে করোনা থেকে সেরে ওঠেন ২৫ বছর বয়সী এক তরুণী। সে এখন ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে সংক্রমিত। শনিবার সকালে তার চিকিৎসা করেন চক্ষু বিশেষজ্ঞ ডা. অক্ষয় নায়ার। রোগীর নাকের মধ্যে একটি নল ঢুকিয়ে শ্লৈষ্মিক সংক্রমণে আক্রান্ত টিস্যুগুলো সরিয়ে ফেলেন। যা একটি বিরল তবে বিপজ্জনক ছত্রাকের সংক্রমণ। এই সংক্রমণ নাখ, চোখ ও কখনো কখনো মস্তিস্ককে প্রভাবিত করে।
প্রায় তিন ঘণ্টার দীর্ঘ অপারেশনের মধ্য দিয়ে তরুণীর চোখ সরিয়ে ফেলেন ডা. অক্ষয় নায়ার। তিনি বলেন, জীবন বাঁচানোর জন্যই তার চোখটি সরিয়ে ফেলতে হবে। কারণ, রোগটি এভাবেই কাজ করে।
শ্লেষ্মাশক্তি বা ব্ল্যাক ফাঙ্গাস খুবই বিরল একটি সংক্রমণ। এটি শ্লেষ্মা ছাঁচের সংস্পর্শের ফলে ঘটে; যা সাধারণত মাটি, গাছপালা, সার, ক্ষয়িষ্ণু ফল এবং শাকসবজিতে দেখা যায়। এটি সাইনাস, মস্তিষ্ক এবং ফুসফুসকে প্রভাবিত করে।
ডা. নায়ার বলেন, এটি সর্বত্র বিদ্যমান এবং মাটি ও বায়ু এমনকি স্বাস্থ্যকর মানুষের নাক এবং শ্লেষ্মেও পাওয়া যায়। মুম্বাইয়ের তিনটি হাসপাতালে কাজ করছেন তিনি।
নায়ার বলেন, গত এপ্রিল মাসে শহরটিতে এমন ৪০ জন রোগী দেখেছেন, যারা ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে সংক্রমিত। তাদের মধ্যে কিছু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত এবং সম্প্রতি করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন। অপারেশনের মাধ্যমে সাতজনের চোখ ফেলে দিতে হয়েছে।
এ ছাড়া গত ডিসেম্বর থেকে ফেব্রুয়ারির মধ্যে মুম্বাই, বেঙ্গালুরু, হায়দ্রাবাদ, দিল্লি এবং পুনেতে এমন আরো ৫৮ জন রোগী পাওয়া গেছে। অধিকাংশই করোনা থেকে সুস্থ হওয়ার ১২-১৫ দিনের মধ্যে সংক্রমিত হয়েছেন। সূত্র : বিবিসি
টিএস
মন্তব্য করুন