• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

রোগীদের বাঁচা মরার সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন যে ডাক্তার

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, আরটিভি নিউজ

  ০৬ মে ২০২১, ১৫:৫৮
In COVID-hit India a 26-year-old doctor decides who lives and who dies
সংগৃহীত

রোহান আগারওয়ালের বয়স ২৬ বছর। এখনও তার মেডিকেল ট্রেনিং শেষ হয়নি। কিন্তু তিনি ভারতের অন্যতম ভালো একটি হাসপাতালে চিকিৎসক হিসেবে কাজ করছেন। শুধু কাজ করছেন বললে ভুল হবে, বরং সেখানকার রোগীদের বাঁচা-মরা সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন তিনি। খবর দ্য স্টারের।

করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায় ভারতের স্বাস্থ্যখাত ভেঙে পড়েছে। এমতাবস্থায় কখনও কখনও ২৭ ঘণ্টা কাজ করতে হয় রোহানকে। নয়াদিল্লিতে যে হাসপাতালে কাজ করেন তিনি, সেখানে নাইট শিফটের দায়িত্বেও থাকতে হয় তাকে।

রোগী, আত্মীয় এবং স্টাফ সবাই জানেন হলি ফ্যামিলি হাসপাতালে যথেষ্ট বেড নেই। নেই পর্যাপ্ত অক্সিজেন বা ভেন্টিলেটর। রোহান বলেন, কে বাঁচবে আর কে মরবে সেটার সিদ্ধান্ত নেবেন ঈশ্বর। এটা আমাদের কাজ নয়, আমরা মানুষ। কিন্তু এখন আমাদের এটা করতে হচ্ছে।

গত দুই সপ্তাহ ধরে ভারতে প্রতিদিনই ৩ লাখের বেশি মানুষ আক্রান্ত হচ্ছে। রাজধানী দিল্লিতে ৫ হাজারের বেশি আইসিইউ বেড রয়েছে। তবে সেখানে কখনই ২০টির বেশি ফাঁকা থাকছে না। মানুষজন হাসপাতাল, রাস্তা বা বাসায় মারা যাচ্ছে। ২৪ ঘণ্টাই চিতা জ্বলছে।

নিজের এই ম্যারাথন শিফটের সময় নিজেও আক্রান্ত হওয়ার আতঙ্কে থাকেন রোহান। রোহান বলেন, আমি আক্রান্ত হলে কি হবে তা নিয়ে আমি চিন্তিত। কেননা আক্রান্ত হলে যেই হাসপাতালে কাজ করছেন সেখানে হয়তো তিনি নিজেই বেড পাবেন না রোহান।

রোহান এখনও করোনার টিকা নেননি। গত জানুয়ারিতে যখন মেডিকেল প্রফেশনালদের করোনার টিকা দেয়া হচ্ছিল তখন তিনি অসুস্থ ছিলেন। আর ফেব্রুয়ারিতে গিয়ে কিছুটা রিলাক্স করার সুযোগ পান তিনি। রোহান বলেন, ভাইরাস চলে গেছে এমন ভুল ধারণায় ছিলাম আমরা।

যখন সকাল ৯টায় দায়িত্ব শুরু করেন রোহান তখন তিনি দেখতে পারেন স্টাফদের সুরক্ষা ইকুইপমেন্ট খোলার স্থানে চারটি মরদেহ পড়ে রয়েছে। জরুরি রুমের অবস্থা আরও খারাপ। চারদিকে রোগী আর আত্মীয়স্বজনের ভিড়।

তাদের কেউ কেউ কাপড়ের মাস্ক পরেছে তো কেউ কেউ কিছুই পরেনি। ডাক্তার-নার্সরাও সুরক্ষা ইকুইপমেন্ট পরা বন্ধ করে দিয়েছে। কেননা এগুলো পরে কাজ করা কঠিন। হলি ফ্যামেলি দেশের সবচেয়ে ভালো হাসপাতালগুলোর মধ্যে অন্যতম।

পুরো দেশ এমনকি বিশ্বের অন্য দেশ থেকেও চিকিৎসা আসে এখানে। কিন্তু এই হাসপাতালের অবস্থা এখন সরকারি হাসপাতালের মতো। সরকারি হাসপাতালে মানুষজন যেমন এক বেডে দুইজন থাকছে বা বাইরেই মারা যাচ্ছে, এখানকার অবস্থাও অনেকটা এমন।

যেখানে হাসপাতালে ২৭৫ জন পূর্ণবয়স্ক রোগীর চিকিৎসার ব্যবস্থা রয়েছে, সেখানে এখন ৩৮৫ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন। জেনারেল এবং নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে বেড খালি নেই। কয়েক সপ্তাহ ধরেই এসব বিভাগের বাইরে বেড খালি নেই এমন নোটিশ টাঙানো রয়েছে।

ইআর বিভাগ, যেখানে সাধারণত জুনিয়র ডাক্তারদের ডিউটি দেয়া হয়, করোনার কারণে সেই সিস্টেম ভেঙ্গে পড়েছে। রোহান ইআর এ তার রাউন্ড দেয়ার আগে জেনারেল কোভিড ওয়ার্ডে রোগী দেখেন। একজন সিনিয়র সহকর্মীসহ তাদের দায়িত্বে রয়েছে ৬৫ জন রোগী।

তাই একজন রোগীকে দেখতে সর্বোচ্চ ৩-৪ মিনিট সময় পান তিনি। আর জরুরি কোনও ফোন পেলেও এই সময়টা আরও কম হয়। এভাবে নিজের ডিউটি চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি। পরিবার থেকে অনেকটাই বিচ্ছিন্ন হয়ে থাকতে হচ্ছে তাকে।

মন্তব্য করুন

daraz
  • আন্তর্জাতিক এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
বিএনপি নেতাদের স্ত্রীরা ভারতীয় শাড়ি তেমন কেনেন না : রিজভী
ভারতীয় পণ্য বর্জন আন্দোলন নিয়ে বিএনপিতে দ্বন্দ্ব!
বিএনপির ভারত বর্জন কর্মসূচির কারণ জানালেন নাছিম
ভারত থেকে ১৬৫০ টন পেঁয়াজ আসছে শুক্রবার
X
Fresh