• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

করোনায় ধনী আরও ধনী হয়েছে, এখন সেই টাকা বাঁচানোর পথ খুঁজছে তারা

  ২৬ মার্চ ২০২১, ১৫:৩৮
In 2020 the ultra-rich got richer. Now they're bracing for the backlash
সংগৃহীত

কোভিড-১৯ মহামারি হানা দেয়ার পর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর ২০২০ সালে অর্থনীতি সবচেয়ে বাজে অবস্থার মধ্য দিয়ে গেছে। তবে ধনীরা আরও ধনী হয়েছে, তাদের সম্পদের পরিমাণ অনন্য উচ্চতায় পৌঁছেছে করোনার এই সময়ে।

এখন সেই অর্থ কিভাবে নিজেদের কাছে রাখা যায়, তা নিয়ে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে আলাপ চালাচ্ছেন অনেকেই। অনেকে নিজেদের ক্ষতি পুষিয়ে নেয়ার মতো পথ খুঁজছেন। মার্কিন সংস্থা ব্লাকরকের সাবেক এক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মরিস পার্ল বলেন, এক বছর আগে জুলাই নাগাদ স্টক মার্কেটে ধস নামে। তখন আমার স্টকের দাম পড়ে যায়। কিন্তু সেটা এখন অনেকটাই বেড়ে গেছে।

তবে ধনী-গরিবের এই ফারাকটা আরও বাড়ছে। সাতজন মিলিওনিয়ার এবং বিলিওনিয়ার এবং ধনীদের ২০ জনের বেশি উপদেষ্টার সাক্ষাৎকার নিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স। তারা বলছে, কর ব্যবস্থা এখনও অনুকূলে থাকা অবস্থায় আল্ট্রা-ধনীরা তাদের সম্পদ দান, ট্রাস্টে এবং অন্য দেশ বা রাজ্যে স্থানান্তর করছে।

করের ওপর কড়াকড়ি আরোপ নিয়ে যে একটি বিল আনা হচ্ছে সে ব্যাপারে মোটামুটি সবাই নিশ্চিত। সুইজারল্যান্ড ভিত্তিক ওয়েলথ ম্যানেজার টিয়েডেমান কন্সটান্টিয়া’র সিইও রব উইবার বলেছেন, সবার জন্যই যে এই বিল আসছে তা স্পষ্ট। করের পরিমাণ বাড়ার আগে তাকে কিছু ক্লায়েন্ট ব্যবসার মতো বড় অ্যাসেট বিক্রি করে দেয়ার চিন্তাভাবনা করছেন বলেও জানান তিনি।

ওয়েলথ ম্যানেজাররা বলছেন, নির্বাচনের আগে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ধনীদের ওপর কর বাড়ানোর কথা জানিয়েছিলেন। এর ফলে এখন অনেক ধনী ব্যক্তিরা ট্রাস্ট গঠন করছেন বলে জানিয়েছে ওয়েলথ ম্যানেজাররা।

যুক্তরাষ্ট্রে এখন করমুক্ত আয় হচ্ছে ১১.৭ মিলিয়ন ডলার। তাই এসব ধনীরা তাদের অর্থ তাদের সন্তান বা অন্য আত্মীয়স্বজনের নামে স্থানান্তর করতে পারবে। তবে নির্বাচনী প্রচারণার সময় বাইডেন বলেছিলেন যে, তিনি ২০০৯ সালে করমুক্ত যে সীমা ছিল তাতে ফিরতে চান। তখন করমুক্ত আয়ের সীমা ছিল ৩.৫ মিলিয়ন ডলার।

উইলমিংটন ট্রাস্টের চিফ ওয়েলথ স্ট্র্যাটেজিস্ট আলভিনা লো বলেন, গত বছরের শেষ কোয়ার্টারে ট্রাস্ট তৈরি এবং সেখানে অর্থায়ন খুব বেড়ে যায়। আমাদের অনেক ক্লায়েন্ট নভেম্বরের নির্বাচন পর্যন্ত অপেক্ষা করে, কিন্তু নির্বাচন শেষ হওয়ার পর ট্রাস্ট গঠনের পরিমাণ বেড়ে যায়।

ফোর্বস বলছে, বিশ্বের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ বিলিওনিয়ার ২০২০ সালে অনেক সম্পদের মালিক হয়েছে। অনেকের ক্ষেত্রে এই বৃদ্ধিটা নজিরবিহীন ছিল। নীতিনির্ধারকদের কাছ থেকে লাখ লাখ ডলার রিকভারি মানি’র মাধ্যমে তাদের সম্পদ বেড়েছে। তারা বলছে, গত বছরের ডিসেম্বরের মাঝামাঝি পর্যন্ত বিশ্বে বিলিওনিয়ারের সংখ্যা ২০ শতাংশ বেড়েছে।

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ঋণ বেড়ে যাওয়া এবং সামাজিক অস্থিতিশীলতা বৃদ্ধির প্রেক্ষিতে বিলিওনিয়াররা বুঝতে পারছে যে তাদের সম্পদের ওপর নজরদারি বাড়বে। এজন্য কর কর্তৃপক্ষ তাদের সম্পদের ওপর হানা দিতে পারে বলে জানেন এসব ধনীরা। এ কারণেই ট্রাস্ট গঠন করে নিজেদের সন্তানের নামে সম্পদ স্থানান্তর করছেন তারা।

অনেকেই তাদের সম্পদ অন্য দেশে এবং এলাকায় স্থানান্তর করছে যেগুলো মেগা-ধনীদের ক্ষেত্রে আইন ততটা কড়াকড়ি নয়। এজন্য এসব ধনীদের কাছে সুইজারল্যান্ড, লুক্সেমবার্গ এবং সিঙ্গাপুরের মতো দেশগুলো বেশ জনপ্রিয়। কারণ এসব দেশে তারা খুব সহজেই নিজেদের অর্থ স্থানান্তর করতে পারছে।

লন্ডন ভিত্তিক নাগরিকত্ব এবং রেসিডেন্সি বিষয়ক উপদেষ্টা প্রতিষ্ঠান হেনলে অ্যান্ড পার্টনার্স বলছে, করোনার সময় ধনীদের অন্যত্র স্থানান্তরিত হওয়ার প্রবণতা বেড়েছে। তারা বলছে, ২০২০ সালে আমাদের যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক ক্লায়েন্টের সংখ্যা ২০৬ শতাংশ এবং ব্রাজিলের ক্লায়েন্টের সংখ্যা ১৫৬ শতাংশ বেড়েছে।

ক্লারফেল্ড সিটিজেন্স প্রাইভেট ওয়েলথের কর পরিচালক সিন্ডি ওস্ট্রাগার বলেন, তাদের অনেক আল্ট্রা-রিচ ক্লায়েন্ট নিউইয়র্ক ছেড়ে তাদের অবসরযাপনের স্থলে সরে যাচ্ছে। এর মধ্যে রয়েছে হ্যাম্পটন্সের মতো জায়গা। প্রথমে করোনার ধাক্কা সামলাতে এটা করেছিল তারা, তবে পরবর্তীতে কম ট্যাক্স দেয়ার লক্ষ্য তাদের কাছে মুখ্য হয়ে ওঠে।

ইনভেস্টমেন্ট কনসাল্টিং ফার্ম এনইপিসি’র পরিচালক ক্রিস্টি হ্যানসন বলেছেন, টেক্সাস, ফ্লোরিডা এবং ওয়াশিংটনের কম করের রাজ্যগুলোতে ব্যবসা সরিয়ে নেয়াটাও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

ইন্সটিটিউট ফর পলিসি স্টাডিজ অ্যান্ড আমেরিকানস ফর ট্যাক্স ফেয়ারনেস জানিয়েছে, করোনা শুরু হওয়ার পর থেকে চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে বিলিওনিয়ারদের সম্পদের পরিমাণ ১.৩ ট্রিলিয়ন ডলার বা প্রায় অর্ধেক বেড়েছে।

যার ফলে এসব ধনীর সম্পদের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪.২ ট্রিলিয়ন ডলার, যা ২০২০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের মোট অর্থনীতির প্রায় পাঁচ ভাগের এক ভাগ। এই অর্থের প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণ সম্পদের মালিক বাকি ৩৩ কোটি মানুষ।

মন্তব্য করুন

daraz
  • আন্তর্জাতিক এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
সংশোধনী আসছে কাবিননামায়  
‘আমাকে কেনার মতো ধনী এখনও তারা হননি’
লিপস্টিক কেনার সময় খেয়াল রাখবেন যে বিষয়গুলো
বেজোস-ইলন মাস্ক এখন বিশ্বের দ্বিতীয়-তৃতীয় ধনী, শীর্ষে কে?
X
Fresh