পাইলট থেকে ডেলিভারি বয়
করোনাভাইরাস মহামারিতে বিশ্বজুড়ে এখনও তাণ্ডব লীলা অব্যাহত রেখেছে। তবে এই ভাইরাসে শুধু জীবনই যে গেছে, তা নয়। চাকরি হারিয়ে বেকার হয়েছে বহু মানুষ। কেউ কেউ বেঁচে থাকার জন্য বিকল্প পথ বেছে নিলেও অনেককেই পথে বসতে হয়েছে।
করোনায় যেসব খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে, তা হচ্ছে বিমান খাত। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে করোনার কারণে দেউলিয়া হয়ে গেছে বিভিন্ন বিমান সংস্থা। রাতারাতি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বেকায়দায় পড়েছে খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।
তেমনই একজন হচ্ছেন প্যাট্রিক পাওয়েলজাক। তিনি গোটুস্কাই নামের একটি বিমান সংস্থায় কাজ করতেন। কিন্তু করোনার কারণে বন্ধ হয়ে যায় বিমান সংস্থাটি। চাকরি হারান প্যাট্রিক। বদলে যায় তার জীবনযাত্রা।
স্লোভেকিয়ার এই কোম্পানিতে ২০১৮ সালে ফার্স্ট অফিসার হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন প্যাটিক। পোল্যান্ডের নাগরিক প্যাট্রিক বার্সেলোনায় বাস করতেন। তিনি স্পেনে কর দিতে চেয়েছিলেন। যাতে সেখানকার ব্যাংক থেকে টাকা নিয়ে একটি অ্যাপার্টমেন্ট কিনতে পারেন।
তবে করোনার ধাক্কায় তার প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ব্যাংককে লোন পাওয়ার রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। ৩৩ বছর বয়সী দুই সন্তানের বাবা প্যাট্রিক বলেন, এমন একটা অবস্থায় দাঁড়ায় যখন আমরা টাকা গুণে খরচ করা শুরু করি। কিন্তু তারপরও দেখি যে টাকা আছে তাতে সংসার চলবে না।
প্যাট্রিক ভেবেছিলেন ফ্লাইট ইন্সট্রাক্টরের লাইসেন্স ব্যবহার করে ভবিষ্যতে তিনি যেকোনো পরিস্থিতি থেকে বেঁচে যাবেন। প্যাট্রিক বলেন, যদি কোনও কারণে চাকরি হারাই, তখন আমি ফ্লাইট ইন্সট্রাক্টর হিসেবে কাজ করতে পারবো ভেবেছিলাম। কিন্তু গত বছরের আগ পর্যন্ত এটা ভালো পরিকল্পনা ছিল।
- আরো পড়ুন...
- আরও সুন্দরী হতে চাওয়াই কাল হলো, নাক কেটে খেসারত দিলেন অভিনেত্রী!
- লটারি পদ্ধতিতেই ভিসার ব্যবস্থা চালু থাকছে যুক্তরাষ্ট্রে
- হুতিদের সন্ত্রাসী তালিকা থেকে বাদ দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র
- মালয়েশিয়ান চিকিৎসকদের দাবি করোনায় আক্রান্ত হওয়ার অধিক ঝুঁকিতে ধূমপায়ীরা
তবে স্পেন বা কার্গো এয়ালাইন্স সেক্টরের বিমান খাতের স্কুলগুলোতে চাকরি পেতে ব্যর্থ হন প্যাট্রিক। তিনি বলেন, আমি বাগানের মালি, মেকানিক, ইংলিশ শিক্ষক, সেলস ম্যানেজার, প্রজেক্ট ম্যানেজার, ক্লিনার হিসেবে আবেদন করেছি। আমি নিচ থেকে উপরে যাচ্ছিলাম।
শেষপর্যন্ত অ্যামাজনে ডেলিভারি বয় হিসেবে চাকরি পান প্যাট্রিক। তবে সপ্তাহে সর্বোচ্চ ১৫ ঘণ্টা কাজ করতে পারবেন বলা হয় তাকে। এজন্য ঘণ্টা প্রতি ১৪ ইউরো পাবেন। তবে কর এবং জ্বালানি তেলের দাম দিয়ে লাভ থাকে মাত্র ৫ ইউরো।
পরে তিনি একজন মিস্টির কারখানায় একজন মেকানিক হিসেবে রাতের শিফটে কাজ শুরু করেন। দিনে অ্যামাজনের ডেলিভারি বয় আর রাতে মেকানিক। পরে এসব কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার পর তার একজন বন্ধু নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে খণ্ড কাজ শুরু করার প্রস্তাব দেন।
এখন দেয়াল নির্মাণ, রঙ করা, পানির কাজ, বিদ্যুৎ এবং এয়ার কন্ডিশনিংসহ সব ধরনের কাজ করেন প্যাট্রিক। তবে এগুলো ছাড়াও ডেলিভারি বয়ের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন প্যাট্রিক। কিন্তু বেকারত্বের এই জীবন তার সঞ্জীবনী সুধা শুষে নিচ্ছে বলে জানান তিনি।
এ
মন্তব্য করুন