ভারতে বিষাক্ত মদ পানে ৮৬ জনের মৃত্যু
ভারতের পাঞ্জাব রাজ্যের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বিষাক্ত মদ পান করে গত কয়েকদিনে সেখানে অন্তত ৮৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে তরণ-তারাণ, অমৃতসর আর গুরদাসপুর জেলায়। ২৯ জুলাই থেকে ভেজাল মদ পানে মৃত্যুর খবর আসা শুরু হয়।
পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং বিষাক্ত মদ পানে মৃত্যুর ঘটনায় কর্তব্যে অবহেলার অভিযোগে আবগারি দপ্তরের ছয়জন আর ছয়জন পুলিশ কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছেন। বিষাক্ত মদ তৈরি ও বিক্রির সঙ্গে জড়িতদের আটক করতে শনিবার পাঞ্জাবে ১০০-র বেশি অভিযান চালায় পুলিশ। ইতোমধ্যে ২৫ জনকে গ্রেপ্তার করেছে তারা।
বুধবার রাতে অমৃতসরের মুছাল গ্রাম থেকে প্রথম মৃত্যুর খবর আসে। শুক্রবার রাতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়ায় ৩৮ জনে। শনিবার রাতে জানা যায়, বিষাক্ত মদ পান করে মৃত্যু হয়েছে আরও ৪৮ জনের। সরকারি কর্মকর্তারা এখন হিসাবও দিতে পারছেন না যে, আসলে কত মানুষ ওই মদ পান করে হাসপাতালগুলোতে ভর্তি আছে।
স্থানীয়ভাবে পাওয়া খবর থেকে ধারণা করা হচ্ছে, বিপুল পরিমাণে উৎপাদিত অবৈধ মদ রাস্তার পাশে অবস্থিত খাবারের দোকানগুলোতে বিক্রি করা হয়, যা পরে স্থানীয়দের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। রাস্তার ধারে ধাবাগুলোতে তল্লাশি চালিয়ে বিষাক্ত মদ তৈরির মূল উপাদান ‘লাহান’ জব্দ করেছে পুলিশ।
এর আগে শুক্রবারই এমন একটি খবর এসেছিল যে, ভারতের দক্ষিণাঞ্চলের রাজ্য অন্ধ্রপ্রদেশে স্যানিটাইজার পান করে ১০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ভারতের অনেক জায়গাতেই অবৈধভাবে তৈরি করা মদের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। অবৈধভাবে তৈরি মদ প্রতিষ্ঠিত ব্র্যান্ডের মদের চেয়ে তুলনামূলকভাবে অনেক কম দামের হয়ে থাকে।
অবৈধ মদ উৎপাদনকারীরা অনেক সময় মদের সঙ্গে মিথানল মিশিয়ে থাকে, যেটি অ্যালকোহলের একটি অত্যন্ত বিষাক্ত রূপ। মিথানল কম পরিমাণ গ্রহণ করলেও এর ফলে যকৃতের পচন থেকে শুরু করে অন্ধত্ব, এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।
এদিকে বিষাক্ত মদ পানে মানুষের মৃত্যু নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক বিষোদগার। বিরোধী শিরোমণি অকালি দল রাজ্যের কংগ্রেস সরকারের ওপরে দোষ দিচ্ছে। তারা বলছে, বিষাক্ত মদের ব্যবসার সঙ্গে অনেক মন্ত্রী, বিধায়ক এবং পুলিশ কর্মকর্তা জড়িত আছে। সত্য খুঁজে বের করার জন্য ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্ত না করে হাইকোর্টের বিচারপতিকে দিয়ে তদন্ত করাতে হবে বলেও দাবি তুলেছে শিরোমণি অকালি দল।
এ/পি
মন্তব্য করুন