• ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
logo

বড় ভূমিকম্পের পর উদ্ধার কাজে প্রস্তুত নয় বাংলাদেশ

শরিয়ত খান, আরটিভি

  ৩১ মার্চ ২০১৮, ১৬:২৮
ফাইল ছবি

ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগ মোকাবেলায় এখনো পুরোপুরি প্রস্তুত নয় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স। এমনটিই মনে করেন, বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, ফায়ার সার্ভিসে আধুনিক যন্ত্রপাতি থাকলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় কম। কর্মীরাও বড় দুর্যোগ মোকাবেলায় দক্ষ নয়।

তবে ফায়ার সার্ভিসকে আরও আধুনিক করে গড়ে তোলার কথা জানিয়েছেন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহম্মেদ খান।

২০১৩ সালে রানা প্লাজা ধস হয়। মাত্র নয়তলা ভবনের ধ্বংসাবশেষ সরাতে সেনাবাহিনী, র‌্যাব, পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীদের লাগে প্রায় ২০ দিন। এতে ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা নিয়ে ওঠে প্রশ্ন।

--------------------------------------------------------
আরও পড়ুন: যেকোনো দেশের চেয়ে বাংলাদেশে ভূমিকম্পে হতাহতের আশঙ্কা বেশি
--------------------------------------------------------

২০১৫ সালে ফায়ার সার্ভিসে যোগ হয় আধুনিক যন্ত্রপাতি। চীন থেকে আনা হয় ২১ হাজার লিটার ধারণক্ষমতার ওয়াটার টেন্ডারসহ ধ্বংসাবশেষ সরানোর নানা যন্ত্র। তারপরও ২০১৬ সালে রাজধানীর ‘বসুন্ধরা সিটি কমপ্লেক্সে’র একটি ফ্লোরের একাংশের আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের ২৯টি ইউনিটের সময় লাগে ১০ ঘণ্টারও বেশি। আর ২০১৭ সালের ৩ জানুয়ারি গুলশানের ডিসিসি মার্কেটে আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের ২২টি ইউনিট, নৌবাহিনী, রোভার স্কাউট, রেড ক্রিসেন্টের কর্মীদের লাগে প্রায় ১৬ ঘণ্টা।

এসব ঘটনায় সক্ষমতার পাশাপাশি ফের প্রশ্ন ওঠে বাহিনীর দক্ষতা নিয়ে। এরপর থেকে ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তাদের দক্ষতা বাড়াতে দেশ-বিদেশে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়। যোগ করা হয় আরও কিছু সরঞ্জাম।

ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহম্মেদ খান বলেন, আমরা কষ্ট করে হলেও উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছি। উদ্ধার অভিযান চালানোর জন্য আমাদের হালকা এবং ভারি সব ধরনের যন্ত্রপাতি আছে। অভিযানের পাশাপাশি প্রশিক্ষণ দেয়া হচ্ছে।

এদিকে ফায়ার সার্ভিসের পাশাপাশি, স্থানীয় জনপ্রশাসনের মাধ্যমে দেশের প্রতিটি এলাকায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও স্বেচ্ছাসেবক দল গঠনের কথা জানিয়েছেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. রিয়াজ আহম্মেদ।

নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. ইশরাত ইসলাম বলছেন, একটি দুর্ঘটনা মোকাবেলায় যেখানে ফায়ার সার্ভিসকে হিমশিম খেতে হয়, সেখানে ভূমিকম্পে এক সঙ্গে অনেকগুলো বাড়ি ভেঙে পড়লে কী হবে, তা ভেবেই আতঙ্কিত হতে হয়। আমাদের ফায়ার সার্ভিসের উদ্ধার করা সামর্থ্য সীমিত।

এদিকে বাংলাদেশে আট মাত্রার ভূমিকম্প হলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হবে রাজধানী ঢাকাসহ চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহসহ বড় শহরগুলোর। বিশেষজ্ঞদের মতে বড় ধরনের ভূমিকম্প হলে রাজধানীতেই ভেঙে পড়বে এক তৃতীয়াংশ স্থাপনা। বিশেষ করে পুরান ঢাকা হয়ে যাবে ধ্বংসস্তূপ। তারা বলছেন, ঢাকার বেশিরভাগ স্থাপনাই ভূমিকম্প সহায়ক নয়।

ঢাকায় যে হারে গড়ে উঠছে আবাসন তার বেশিরভাগই মানা হচ্ছে না বিল্ডিং কোড বা অন্যান্য নিয়ম-নীতি। আর ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকার ৩৫ ভাগ নরম মাটি হওয়ায় ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছে দ্বিগুণ।

২০০৯ সালের এক গবেষণায় দেখা গেছে, ৭ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্প হলেই ঢাকা শহরের অন্তত ৭২ হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হবে, যা কিনা মেরামতের অযোগ্য হয়ে পড়বে। আর সারা দেশে সে সংখ্যা গিয়ে দাঁড়াবে প্রায় তিন লাখ।

মার্কিন ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ ডেভিড ওয়াল্ড এক জরিপের ফলাফল বিশ্লেষণ করে জানিয়েছেন, ৭ দশমিক ৯ মাত্রার ভূমিকম্পের প্রভাব একেক দেশে একেকরকম হবে। এই মাত্রার ভূমিকম্প যুক্তরাষ্ট্রে হলে যদি ১০ থেকে ৩০ জন মারা যায়, পাকিস্তান, ভারত, ইরান ও চীনে তা হতে পারে ১০ হাজারের বেশি। তার মতে, এই পার্থক্যের মূলে আছে অপরিকল্পিত নগরায়ণ।

ডেভিড ওয়াল্ড তার জরিপে বাংলাদেশের উল্লেখ না করলেও, এখানকার পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে বলে মনে করছেন নগরবিদরা। কারণ বাংলাদেশের বড় বড় শহরগুলো গড়েই উঠছে অপরিকল্পিতভাবে।

আরও পড়ুন:

এসএস

মন্তব্য করুন

daraz
  • এক্সক্লুসিভ এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
রোববার যেসব এলাকায় ব্যাংক বন্ধ থাকবে 
মিয়ানমার থেকে দেশে ফিরলেন ১৭৩ বাংলাদেশি
তাপপ্রবাহে ‘অতি উচ্চঝুঁকিতে’ বাংলাদেশের শিশুরা: ইউনিসেফ
বাংলাদেশ সিরিজের দল ঘোষণা জিম্বাবুয়ের
X
Fresh