মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের কারণে চামড়ার দাম পাননি গরীব-দুঃস্থরা
মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের কারণেই এ বছর চামড়ার দাম পাননি গরীব-দুঃস্থরা। এমন দাবি ট্যানারি মালিকদের সংগঠন বিটিএ'র। মন্দা বাজারের জন্য মালিকদের সিন্ডিকেট দায়ী-এমন অভিযোগ অস্বীকার করে সংগঠনটি বলছে, সরকার ঋণ সহায়তা দিলে মধ্যস্বত্ত্বভোগিরা কম দামে চামড়া কেনার সুযোগ পেত না। অন্যদিকে আড়তদাররা বলছেন, ট্যানারি মালিকরা বকেয়া পরিশোধ না করায় অর্থাভাবে ভালো দামে চামড়া কেনা যায়নি।
পরিসংখ্যান ব্যুরো’র তথ্যানুযায়ী, গেলো বছর ৪০ লাখ ৬১ হাজার কোরবানির গরুতে পাওয়া গিয়েছিল ১ হাজার ৭শ’ ৫৫ কোটি টাকার চামড়া।
সরকারি হিসাব বলছে, এ বছর বেড়ে প্রায় ৫১ লাখ গরু কোরবানি হয়েছে। প্রতি গরুর চামড়ায় ৫শ’ থেকে ৯শ’ টাকা কম দাম পেলে ৫১ লাখ পিসে গড়ে ৬শ’ টাকা দরে ৩শ’ কোটি টাকা কম পেয়েছে দুঃস্থ-অসহায়রা।
আন্তর্জাতিক বাজারে চাহিদা কম, এমন কারণ দেখিয়ে ঈদের আগেই ৩০ শতাংশ দাম কমিয়ে দেন চামড়া ব্যবসায়ীরা। সে দামও পাওয়া যায়নি এ বছর। পুরান ঢাকার পোস্তার আড়তদার, পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা এজন্য চামড়ার বাজারে অর্থের সংকটকে দায়ী করলেন।
তবে যতোটা বলা হয়েছিল, আন্তর্জাতিক বাজারের পরিস্থিতি ততোটা খারাপ নয়। কিছুটা কমলেও গেলো ফেব্রুয়ারি থেকে বিদেশের বাজারে চামড়ার দরে তেমন হেরফের হয়নি। তাছাড়া, বাংলাদেশের চামড়ার মান বিশ্ব বাজারে ১ নম্বর। বর্তমানে প্রতি পাউন্ড চামড়ার আন্তর্জাতিক দাম ৭০ সেন্ট। ভারতে নিম্নমানের পশুর চামড়াও দেশটির বাজারে প্রতি বর্গফুট বিক্রি হয় ৮০ থেকে ৯০ টাকা। পাকিস্তানেও চামড়ার দাম বাংলাদেশের চেয়ে বেশি।
অন্যদিকে, ট্যানারি মালিকরা নিজেরাও সরাসরি খুচরা বিক্রেতাদের কাছ থেকে চামড়া কিনতে আগ্রহী ছিলেন না। ফলে বাজারে চাহিদা ছিলো কম। এ বছর চামড়ার ঠিক করে দেয়া দামে দুঃস্থদের ঠকানো হয়েছে কিনা, এমন প্রশ্নে মালিকরা দুষলেন মধ্যস্বত্ত্বভোগীদের।
বিটিএ অর্থসংকটের কথা বললেও চামড়া কিনতে সোনালী, অগ্রণী, জনতা ও রূপালি ব্যাংক ট্যানারি মালিকদের এ বছর ৬শ'কোটি ঋণ দিয়েছে। যদিও গত পাঁচ বছরে ব্যাংকগুলোর দেয়া দু' হাজার ৪শ ৯৩ কোটি টাকার ৩২ শতাংশই খেলাপি হয়েছে। সঙ্গে আড়তদারদের বকেয়াতো আছেই।
ডিএইচ/আরএইচ
মন্তব্য করুন