আমানতে সুদহার বাড়াতে হবে
দিন দিন সঞ্চয়ের উৎসাহ হারাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, এক বছরের ব্যবধানে দেশের ব্যাংকগুলোতে মেয়াদি আমানতের হার কমেছে প্রায় চার শতাংশ। আর চলতি আমানত কমেছে ১৩ শতাংশ।
বিশ্লেষজ্ঞরা বলছেন, নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক দাম এবং ব্যাংকে আমানতের সুদ কম হওয়ায় এমনটি হচ্ছে।
দেশের নামকরা একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় চাকরি করেন মশিউর রহমান। মোটামুটি ভালোই বেতন পান। পরিবারের খরচ মিটিয়ে আগে ব্যাংকে কিছু রাখতে পারলেও এখন আর সম্ভব হয় না। বরং কখনো কখনো বাড়তি খরচ মেটাতে একটু একটু করে ভাঙতে হচ্ছে আগের সঞ্চয়।
----------------------------------
আরও পড়ুন: ফোরজি চালু মার্চে
----------------------------------
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দেয়া তথ্য বলছে, গত বছরের আগস্ট মাসের শেষে দেশের ব্যাংকগুলোতে মেয়াদি আমানতের পরিমাণ ছিল সাত লাখ ৮৮ হাজার কোটি টাকা। ২০১৬ সালের একই সময়ে যা ছিল সাত লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা।
তথ্য বলছে, ওই এক বছরে আমানতের প্রবৃদ্ধি কমেছে সাড়ে তিন শতাংশ। এই সময়ের মধ্যে ১৩ শতাংশ কমেছে ব্যাংকগুলোর চলতি আমানতের পরিমাণ। আর সঞ্চয়ী হিসাবের সুদের হারও কমতে কমতে ঠেকেছে তিন থেকে সাড়ে তিন শতাংশে।
বিশ্বব্যাংকের ঢাকা কার্যালয়ের মুখ্য অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, মূল্যস্ফীতি যদি ৬ শতাংশ হয়; আর সুদহার যদি ৫ শতাংশ হয়, তবে ১০০ টাকা ১০৫ টাকা হবে। কিন্তু প্রকৃত মূল্য তো ৬ টাকা কমে যাচ্ছে। কাজেই নিট তো ১ টাকা লোকসান হচ্ছে। তাহলে তো সঞ্চয় করার জন্য আর কোনো ইনসেন্টিভ থাকে না। এসব কারণেই সঞ্চয় করার প্রবণতা কমে যাচ্ছে।
ব্যাংকিং বিশেষজ্ঞরা আশঙ্কা করছেন, এভাবে চলতে থাকলে মানুষের সামাজিক সুরক্ষা এক সময় হুমকির মুখে পড়বে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন বলেন, এখানে আবার ইন্সুরেন্স নেই। কোনো সামাজিক সুরক্ষা নেই। এক্ষেত্রে বর্তমানে যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে, তা মোটেও আশাব্যঞ্জক না। এটা ভবিষ্যতে আমাদের জন্য আরো বিপদ ডেকে আনবে। বিশেষ করে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি বাড়াবে।
তাই নিত্যপণ্যের দাম কমানোর পাশাপাশি ব্যাংক আমানতে সুদের হার বাড়াতে সরকারকে তৎপর হওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা।
এসআর
মন্তব্য করুন