গান নিয়ে ছিনিমিনি, ক্ষোভে ফেটে পড়লেন কিং অব পপ জানে আলম

ছবিতে কিং অব পপ জানে আলম
জঘন্য! একজন শিল্পী, সুরকার, গীতিকার গান করেছেন। সেই গান মানুষের কাছে পৌঁছানোর মাধ্যমে জনপ্রিয়তা পেয়েছে। সেই গানগুলো তার অনুমতি ছাড়া তো অন্য কেউ গাইতেই পারে না। পৃথিবীর কোথাও এই সিস্টেম নাই। এটা ডাকাতির পর্যায়ে পড়ে। কোনোভাবেই এই বিষয়টি মেনে নেওয়ার মতো না। আমার বিখ্যাত গান ‘একটি গন্ধমের লাগিয়া’, ‘ইস্কুল খুইলাসে রে মওলা’, ‘দয়াল বাবা কেবলা কাবা’, ‘গ্রামের নওজোয়ান’ একটি গানও যদি কেউ অবৈধভাবে রেকর্ড করে আমি ওদের বিরুদ্ধে সঙ্গে সঙ্গে মামলা করবো।

ফিরোজ সাই, আজম খান, ফেরদৌস ওয়াহিদ এবং আপনার গান যারা গাইছেন তা শুনে আপনার অভিমত কী? জবাবে কিংবদন্তি এই শিল্পী বলেন, ওরা তো চর্চা করে শিল্পী হয়নি। দুই একটি রিয়েলিটি শোতে নাম লিখে, কিছু সিনিয়র শিল্পীর গান মুখস্থ করে মনে করেছে শিল্পী হয়ে গেছে। অথচ সঙ্গীত হলো একটি সমুদ্র। এখানে শিখে আসতে হবে। আর এই শিক্ষার কোনো শেষ নাই। শিল্পী হতে হলে সাধনা লাগে। শিল্পী হতে অনেক পরিশ্রম করতে হয়। তারপরে একজন শিল্পী হয়। কিন্তু এরা মনে করেছে শিল্পী হওয়া খুবই সহজ। জানে আলমের দুইটা গান স্টেজে গেয়ে মনে করে শিল্পী হলাম। এটা শুধু বাংলাদেশেই হয়। পৃথিবীর আর কোথাও হয় না। বাংলাদেশ সরকারের কাছে আমি অনুরোধ করবো, সরকার যেন এই অন্যায়ের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়।করোনায় শিল্পীদের সংকট নিয়ে মতামত জানতে চাইলে জানে আলম বলেন, করোনাকালে সবচেয়ে অসুবিধায় আছেন দেশের শিল্পীরা। কারণ বিগত কয়েক মাস ধরে সব ধরনের অনুষ্ঠান বন্ধ। সবার আর্থিক অবস্থা একরকম নয়। আমিসহ অনেকেই হয়তো করোনার এই ধাক্কা সামাল দিতে পারছি। কিন্তু আমাদের অনেক শিল্পী ও কলাকুশলী ভাই-বোনরা কঠিন সময় কাটাচ্ছেন। একজন শিল্পী তো কষ্টে থাকলেই কারো কাছে গিয়ে হাত পাততে পারে না। তাইতো সরকার শিল্পীদের বিষয়টি ভাববেন বলে আশা করছি। প্রয়োজনে শিল্পীদের জন্য লোনের ব্যবস্থা করার দাবি রইলো। এই সংকট কবে কাটবে তার কোনো ঠিক নেই। তাইতো শিল্পীদের প্রতি নজর দেয়ার জন্য সরকারকে অনুরোধ করছি। স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের এই শিল্পী বলেন, দেশের সব সংকটে শিল্পীরাই সবার প্রথম এগিয়ে এসেছেন। মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি নিজেও স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে গান গেয়েছি। আমাদের গান শুনে মুক্তিযোদ্ধারা মনোবল নিয়ে যুদ্ধের ময়দানে লড়াই করতেন। আজো সেসব গান মানুষের মনকে নাড়া দেয়। সরকারের কাছে একটাই দাবি শিল্পীদের পাশে দাঁড়ান। তা না হলে শিল্পীরা যদি অন্য পেশায় চলে যায় তাহলে সংস্কৃতির ক্ষেত্রে বিরাট ক্ষতি হবে। যা আর কোনোদিন ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে না। আরও পড়ুন : এম/পি