এখনও ভিক্ষা করেই জীবন কাটান প্রধানমন্ত্রীর অনুদান পাওয়া মেকআপম্যান
যে মেকআপম্যানের হাতের শৈল্পিক ছোঁয়া নিয়ে এক সময় ঢালিউড আলোকিত করেছেন অভিনেত্রী শাবানা, ববিতা, অঞ্জু, মৌসুমীর মতো নন্দিত নায়িকারা, ভাগ্যের নির্মম পরিহাসে আজ তার জীবন কাটছে ভিক্ষা করেই।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই মেকআপম্যানের নাম কাজী হারুন। কিন্তু এখন তার পরিচয় ভিক্ষুক। বেদের মেয়ে জোছনা, অন্য জীবন, শঙ্খমালা, গোলাপী এখন ঢাকা, জীবন সংসার’সহ শতাধিক চলচ্চিত্রে কাজ করেছেন তিনি। দীর্ঘদিনের ক্যারিয়ারে পেয়েছেন নানা স্বীকৃতিও। ১৯৯৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘হৃদয় থেকে হৃদয়’ ছবিতে কাজের জন্য পেয়েছেন জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার।
দক্ষিণ যাত্রাবাড়ির ফরিদাবাদ বস্তিতে স্ত্রী মহুয়া আকতারকে নিয়ে থাকেন কাজী হারুন। ৩টি বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করে ঘর ভাড়া দেন স্ত্রী মহুয়া, অপরদিকে ভিক্ষা করে চিকিৎসাসহ অন্যান্য খরচ চালান কাজী হারুন।
শারীরিক অসুস্থতা। যার সুচিকিৎসা তিনি করাতে পারছেন না অর্থের অভাবে। সিনেমায় থাকতে পারেন না অনেকদিন। তাই ভিক্ষার টাকাতেই কোনোমতে চালিয়ে যাচ্ছেন তার চিকিৎসা।
কাজী হারুনের ভিক্ষা করা কিছুদিনের জন্য বন্ধ ছিল। গত বছর গণমাধ্যমে খবর প্রকাশ হয়েছিল জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত মেকাআপম্যান হারুনের সংসার চলে ভিক্ষে করে। খবরটি জানতে পেরে প্রধানমন্ত্রী ডেকে নিয়ে তাকে ৫ লাখ টাকা অনুদান দেন। সেইসঙ্গে সুপার শপ ‘স্বপ্ন’ এক বছরের জন্য প্রতি মাসে পাঁচ হাজার টাকা সমমানের গৃহস্থালি পণ্য দিয়ে তাকে সহযোগিতা করে। সম্প্রতি সেই সাহায্য বন্ধ হয়েছে এবং সরকারি অনুদানের টাকায় চিকিৎসা ও সাংসারিক ব্যয় করে শেষ হয়েছে। টিকে থাকতে আবারও থালা হাতে পথে পথে ঘুরছেন হারুন।
জানা গেছে, জীবন ও নিজের ওপর কিছুটা অভিমান করে কিছুদিন আগে বাড়ি ছাড়েন হারুন। একমাস পরিবারের লোকজনের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেননি। কমলাপুর রেল স্টেশনে ভিক্ষা করে, রাতে ইট মাথায় দিয়ে ঘুমিয়েছেন। পাঁচ হাজার টাকা জমিয়ে বাসায় ফিরে যান। এখনও ভিক্ষা করছেন।
কাজী হারুনের স্ত্রী মহুয়া আকতার গেল বছর গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, বিয়ের পর কোনোকিছুর অভাব ছিল না। হারুন যা আনতেন তা দিয়ে বেশ ভালোই চলে যেত। ২০০৯ সালে কাজী হারুনের ব্রেইন স্ট্রোক হবার পর থেকে সংসারে কষ্টের শুরু হয়। যা এখনও চলছে।
জিএ
মন্তব্য করুন