• ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
logo

স্ক্রিন টেস্টে বাদ পড়েছিলেন সৌমিত্র

বিনোদন ডেস্ক, আরটিভি অনলাইন

  ১৯ জানুয়ারি ২০২০, ১৪:৪৬
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়
সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়

কলকাতার কিংবদন্তি অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের জন্মদিন আজ ১৯ জানুয়ারি। ৮৬ বছরে পা দিলেন এই লিভিং লেজেন্ড। সৌমিত্রের জীবনের কিছু কথা যা হয়তো অনেকের অজানা। ঠিক এমন কিছু তথ্য তুলে ধরেছে ভারতীয় গণমাধ্যম আনন্দবাজার পত্রিকা।

১৯৩৫ সালের ১৯ জানুয়ারি নদিয়ায় জন্ম সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়ের। বাবা ছিলেন কলকাতা হাইকোর্টের ব্যারিস্টার। বাবার বদলির চাকরি। তাই ছোটবেলাটা তার কেটেছে কখনও কৃষ্ণনগর আবার কখনও বা কলকাতায়। বাড়িতে নাট্যচর্চার পরিবেশ ছিলই। ছোট বয়স থেকেই নাটকে অভিনয় করতে শুরু করেন তিনি। কলকাতার সিটি কলেজ থেকে বাংলা সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা শেষ করে সৌমিত্র ভর্তি হন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখান থেকে বাংলা সাহিত্য নিয়েই স্নাতকোত্তর করেন সৌমিত্র। কলেজের ফাইনাল ইয়ারে হঠাৎই একদিন মঞ্চে শিশির ভাদুরির নাটক দেখার সুযোগ হয়। জীবনের মোড় ঘুরে যায় সেদিনই।

পুরোদস্তুর নাটকে মনোনিবেশ করেন তিনি। তার থিয়েটার ক্যারিয়ারে চিরকাল শিশির ভাদুরিকে গুরুর মান্যতা দিয়ে এসেছেন সৌমিত্র। নিজেও বলেছেন, অদ্ভুত এক বন্ধুত্ব ছিল তাদের মধ্যে। সব রকম আলোচনা হতো দু’জনের মধ্যে।

তার প্রথম ছবি হতে পারতো ‘নীলাচলে মহাপ্রভু’। সব কথাও হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু শেষ মুহূর্তে স্ক্রিন টেস্টে বাদ পড়ে যান সৌমিত্র। তার জায়গায় নেয়া হয় অসীম কুমারকে। সালটা ১৯৫৮। সৌমিত্র গিয়েছেন সত্যজিতের ‘জলসাঘর’ ছবির শুটিং দেখতে। সেট ছেড়ে বেরোবেন, এমন সময়েই ডাক পড়ে তার। ডাকেন স্বয়ং ‘রে’। এরপর যা হয় তার জন্য বোধ হয় প্রস্তুত ছিলেন না সৌমিত্র নিজেও। বাংলা সিনেমা জগতের আর এক কিংবদন্তি ছবি বিশ্বাসের কাছে সৌমিত্রকে সত্যজিৎ পরিচয় করান অনেকটা এই ভাবে, “এই হলো সৌমিত্র। আমার পরবর্তী ছবি অপুর সংসারে ও অপু করছে।”

তারপরের অধ্যায়টা ইতিহাস। সিনেমার জগতে হাতেখড়ি হয় সৌমিত্রর। ‘অপুর সংসার’-এর হাত ধরে। প্রথম ছবিতেই বাজিমাত। ফার্স্ট শটেই সিন ওকে। ছবিতে ‘খাওয়ার পর একটা করে, কথা দিয়েছ’, তার আর শর্মিলা ঠাকুরের সেই সংলাপ, কেমিস্ট্রি এখনও বাঙালি মননে অমলীন। এসেই যেন লাইমলাইট কেড়ে নিয়েছিলেন এই দীর্ঘাকৃতি, সুদর্শন পুরুষ। মহিলা মহলে তুমুল হিল্লোল তোলা ব্যক্তিটিকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। এর পর একে একে ‘ক্ষুধিত পাষাণ’, ‘দেবী’, ‘ঝিন্দের বন্দি’, ‘চারুলতা’, ‘কিনু গোয়ালার গলি’... তালিকাটা গুনে শেষ করা যাবে না। সত্যজিতের প্রায় ১৪টি সিনেমায় অভিনয় করেছিলেন তিনি।

সত্যজিতের সৃষ্টি ফেলুদাকে বড় পর্দায় জীবন্ত করেছিলেন তিনিই। ফেলুদা পরেও বহুবার হয়েছে বড় পর্দায়, ছোট পর্দায়। কিন্তু এমন কোনও বাঙালি নেই যিনি একবাক্যে স্বীকার করে নেবেন, সৌমিত্রের মতো কারও পক্ষে ওই চরিত্র ফুটিয়ে তোলা সম্ভব হয়নি। ১৯৬০ সালে তিনি বিয়ে করেন দীপা চট্টোপাধ্যায়কে। তাদের এক ছেলে ও এক মেয়ে। তার মেয়ে পৌলমী চট্টোপাধ্যায়ও বিখ্যাত নাট্যব্যক্তিত্ব। জীবনে পেয়েছেন হাজারও পুরস্কার। ২০০৪ সালে তাকে পদ্মভূষণে সম্মানিত করা হয়। এছাড়াও তার ঝুলিতে রয়েছে জাতীয় পুরস্কার, দাদাসাহেব ফালকে পুরস্কার আরও অনেক কিছু।

এম

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিনোদন এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh