সিনেমার সিমিলার অ্যাডজেকটটিভ হলো ওয়েব সিরিজ: আইরিন
আইরিন সুলতানা। দেশীয় শোবিজের পরিচিত মুখ তিনি। ২০০৮ সালের ‘প্যান্টেনা ইউ গট দ্য লুক’ প্রতিযোগিতায় ‘সেরা হাসি’ পুরস্কার পাবার পর শোবিজে যাত্রা শুরু করেন তিনি। এরপর বিজ্ঞাপন ও চলচ্চিত্র অভিনয় করে প্রশংসা কুড়িয়েছেন। ক্যারিয়ারে প্রথম চলচ্চিত্র ‘ভালোবাসা জিন্দাবাদ’র মাধ্যমেই বেশ আলোচনায় আসেন আইরিন। এরপর তার অভিনীত ‘ছেলেটি আবোল তাবোল মেয়েটি পাগল পাগল’, ‘এক পৃথিবী প্রেম’, ‘মায়াবিনী’ ছবিগুলো মুক্তি পেয়েছে। বর্তমানে এই নায়িকা চলচ্চিত্রে নিয়মিত অভিনয়ের পাশাপাশি ওয়েব সিরিজে কাজ করছেন। আসছে ঈদ-উল-ফিতরে আইরিন অভিনীত ‘ট্র্যাপড’ ওয়েব সিরিজটি দর্শক দেখতে পাবেন। থ্রিলার-রোমান্টিক ঘরনার ওয়েব সিরিজটি ‘সিনেস্পট’ অ্যাপসে দেখা যাবে। ঈদের আগের রাত থেকে ১২ পর্বে মুক্তি দেয়া হবে এটি। প্রতি পর্বের ব্যাপ্তি ১৫ মিনিট। ওয়েব সিরিজটি প্রযোজনা করেছে ইনোভেট সলিউশন লিমিটেড। ওয়েব সিরিজটিতে কাজের অভিজ্ঞতা ও চলচ্চিত্রের কাজ প্রসঙ্গে আইরিন সুলতানা মুখোমুখি আরটিভি অনলাইনের বিনোদন বিভাগের। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক এ এইচ মুরাদ।
‘ট্র্যাপড’ ওয়েব সিরিজে কাজের অভিজ্ঞতা কেমন?
এই ওয়েব সিরিজটির শুটিং হয়েছে বালিতে। আমরা অনেক সুন্দর সুন্দর লোকেশনে শুটিং করেছি। ন্যাচারাল যে বিউটিটা মানুষকে আকর্ষণ করে তেমনই জায়গায়। আর ওয়েব সিরিজটির টিজার প্রকাশের পর থেকেই পরিচিতজনদের কাছে থেকে দারুণ রেসপন্স পেয়েছি। পুরো টিম মিলে চেষ্টা করেছি ভালো একটি কাজ করতে। আমার মনে হয় সবার কষ্টটা সার্থক হয়েছে।
ওয়েব সিরিজটির পরিচালক সৈকত নাসিরও ফিল্মের মানুষ। তার সঙ্গে প্রথমবার কাজ করলেন?
প্রথমবার সৈকত ভাইয়ের পরিচালনায় কাজ করলাম। আমরা দুজনেই চলচ্চিত্রের মানুষ। শুটিংয়ের সময় সিঙ্কটা ভালো ছিল। অফ-স্ক্রিন বোঝাপড়াটা ভালো ছিল। সৈকত ভাই আমার কাছে যে ধরনের অভিনয় চাচ্ছিলেন তাৎক্ষণিক সেটা ধরতে পারছিলাম। কাজের সময় শেয়ারিংয়ের বিষয়টি খুব সহযোগিতা করেছে।
‘ট্র্যাপড’-র জন্য আপনারা কতদিন শুটিং করেছিলেন?
আমরা টানা দশদিন শুটিং করেছি। আর্লি মর্নিং কল টাইম থাকতো। আবার দেখা যাচ্ছে রাত অবধি কাজ করছি সবাই। সেখানে আমাদের পুরো সেটআপ ছিল। বিগ বাজেটের একটা ওয়েব সিরিজ এটি। আয়োজনের কোনও কমতি ছিল না।
আপনার চরিত্র নিয়ে বলুন...
গল্পে আমার চরিত্রের নাম সুমি। বাংলাদেশের নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়ে। যারা কিনা ছয়-সাত বোন। তার দু’চোখে অনেক স্বপ্ন। খুব চঞ্চল একটি মেয়ে। বেশি কথা বলাটা তার অভ্যাস।
গল্পটি কীভাবে এগিয়েছে?
সোশ্যাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে আমার সঙ্গে একটি ছেলের পরিচয় হয়। সে বিদেশে থাকে। সেখানে ব্যবসা করে প্রচুর টাকার মালিক। আমার পরিবারকে বিয়ের ব্যাপারে প্রস্তাব দিলে তারাও রাজি হয়ে যান। এখানে আমার স্বামীর চরিত্রে অভিনয় করেছে রিও। বিয়ের পরপরই আমি স্বামীর কাছে অর্থাৎ বালিতে যাই। কিন্তু তার সঙ্গে সাক্ষাতের পর থেকেই একের পর এক ‘ট্র্যাপ’-এ পরতে থাকি। একটা সময় এ. কে. আজাদের সঙ্গে পরিচয় হয়। তিনি বালিতে ট্যাক্সি চালান এবং টুরিস্ট গাইড হিসেবে কাজ করেন। তিনি আমাকে বিপদ থেকে রক্ষায় এগিয়ে আসেন। নানা ঘটনায় এগিয়ে যায় গল্পও। আরও অভিনয় করেছেন নায়ক আমান রেজা। তাকে ওয়েব সিরিজে বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর একজন কর্মকর্তার ভূমিকায় দেখা যাবে। যিনি কিনা বালিতে বিশেষ একটি অভিযানে রয়েছেন।
কোন তিনটি কারণে দর্শককে ‘ট্র্যাপড’ দেখতে বলবেন?
প্রথমত আমি অভিনয় করেছি সে কারণে দর্শক ‘ট্র্যাপড’ দেখবেন। হাহাহা… (হাসি)। যারা আমাকে পছন্দ করেন অবশ্যই ওয়েব সিরিজটি দেখবেন। আর যারা পছন্দ করেন না তারাও ঈদে অবসর সময়ে ঢুঁ মেরে একবার দেখার চেষ্টা করবেন। আমার বিশ্বাস আপনাদের ভালো লাগবে এবং ১২টি পর্বই দেখার জন্য আগ্রহী হবেন। আমাদের পরিচালক, প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান চেষ্টা করেছে আন্তর্জাতিক মানের একটি প্রোডাকশন উপহার দিতে। কাজটি দেখে গঠনমূলক সমালোচনা করুন। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একটি গল্প দর্শকরা পাবেন। বর্তমানে আইফিক্স, নেটফিলক্স, হইচই বিভিন্ন প্লাটফর্মে দর্শকরা অনেক টাকার বিনিময়ে ওয়েব সিরিজ বা মুভি দেখে থাকেন। সেই জায়গা থেকে দেশীয় প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের খুব সামান্য খরচে এই ওয়েব সিরিজটি দেখার সুযোগ করে দিয়েছে। দর্শকদের একটা কথাই বলবো, আপনারা কাজটি দেখুন এবং পাশের বন্ধুটিকেও দেখতে বলুন। তাহলেই আমাদের দেশ থেকেও অনেক আন্তর্জাতিক মানের ওয়েব সিরিজ নির্মিত হবে। আর দর্শকরা এখানে ওয়েব সিরিজের ফ্লেভারই পাবেন।
আপনি নিয়মিত সিনেমা করছেন, পাশাপাশি ওয়েব সিরিজেও এখন ব্যস্ত। দুটোর মধ্যে কোনও পার্থক্য লক্ষ্য করেছেন কী?
আমি তেমন কোনও পার্থক্য লক্ষ্য করিনি। তবে আমাদের দেশ, ভারত কিংবা আশপাশের দেশের ছবিতে গান থাকে। ওয়েব সিরিজেও সেটা থাকে না। যদিও হলিউডের ছবিতে আমরা সেভাবে গান পাই না। আর আমার কাছে মনে হয় সিনেমার সিমিলার অ্যাডজেকটটিভ হলো ওয়েব সিরিজ।
সিনেমার ব্যস্ততা কেমন?
দুই ঈদের মাঝামাঝি ‘পদ্মার প্রেম’ ছবিটি মুক্তি পাবে। প্রস্তুত রয়েছে ‘আকাশমহল’, ‘গন্তব্য’, ‘রৌদ্রছায়া’। ‘সেভ লাইফ’ ছবির কিছু কাজ বাকি শিগগিরই শুটিং শেষ হবে বলে জেনেছি। এছাড়া সম্প্রতি কলকাতার প্রোডাকশনের ব্যানারে ‘শিবরাত্রি’ নামে একটি চলচ্চিত্রে কাজ করলাম। এটি পরিচালনা করছেন রাজাদিত্য বন্দোপাধ্যায়। আরও নতুন কিছু কাজের কথাবার্তা চলছে সবকিছু চূড়ান্ত হলে জানাতে পারবো।
এম/এ
মন্তব্য করুন