• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
logo

গান লেখা আমার নেশা ও পেশা: সুহৃদ সুফিয়ান

এ এইচ মুরাদ, আরটিভি অনলাইন

  ২৫ মে ২০১৯, ২০:১৯

জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী আসিফ আকবরের কণ্ঠে ‘আগুন’, ‘ওরে পাখি’, ‘দাবাড়ুর চাল’ আর হাবিব ওয়াহিদের কণ্ঠে ‘ঘুম’, ‘ঝড়’, ‘অবুঝপনা’, ‘তোমাকে চাই’ এসব জনপ্রিয় গানের পেছনে যে মানুষটির নাম লুকিয়ে আছে তিনি সুহৃদ সুফিয়ান। মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে তিনি ‘জেন্টেলম্যান’ বলেই পরিচিত। সুহৃদ সুফিয়ান আরটিভি অনলাইনের মুখোমুখি হয়ে জানালেন গীতিকার হওয়ার পেছনের গল্প, বর্তমান ব্যস্ততা ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথা। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক এ এইচ মুরাদ।

গান লেখার শুরুটা কবে?

এটা নির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল। তবে যদ্দুর মনে পড়ে তা হলো, ক্লাস সেভেন-এইট (১৯৯৯-২০০০) থেকে কিছু লেখা এখানে-সেখানে টুকে রাখা আরম্ভ করি। বছর দুয়েক পর দেখা গেল, অংক খাতার শেষের পৃষ্ঠাগুলো এলোমেলো ছড়া-কবিতা-গানে ভরে যাচ্ছে। ছেলে মানুষী তখন তুঙ্গে। নিজের থেকেই স্কুল বন্ধুদের একটু দেখিয়ে আবার লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করতাম। টিফিন টাইমে আমাকে ফাঁকি দিয়ে ওরা পড়া শুরু করতো।

গীতিকার হওয়ার পেছনে অনুপ্রেরণায় কে ছিলেন?

ছেলেবেলা থেকেই আমি গান পছন্দ করতাম। প্রচুর গান শুনতাম। গান শুনবার সেই অভ্যেসটাই হয়তো মূল অনুঘটক। তবে স্কুল পেরিয়ে কলেজে ওঠার পর আমার কিছু গান আমি আমার মামা হাসনাত মহসীনকে দেখাই। তিনি তখন পেশা্য় সাংবাদিক ছিলেন। নিজেও দারুণ গান লিখতেন। তিনি আমার প্রথম লিরিকটা পড়ে আমার দিকে তাকিয়ে ছিলেন অনেকক্ষণ। আমি মনে মনে ধরে নিলাম লেখা ভালো হয়েছে (হা-হা)। এরপর একে একে মামা আমার প্রথম দিকের অনেকগুলো গানের ভালো-মন্দ বিশ্লেষণ করলেন। অনেক নির্দেশনা দিলেন। আমার একটি লেখাকে রবার্ট হেরিকের ‘টু-ড্যাফোডিলস্’ কবিতার সঙ্গে তুলনা করলেন। আমি বিশ্বাস করলাম না, তবে মামার কথায় ইন্সপায়ার্ড হয়েছি খুব।

গান লেখাই কী আপনার একমাত্র পেশা?

আমি কিছুটা অলস ও উদাসী প্রকৃতির লোক। সব কাজ আমার ভালো লাগে না। তবে যে কাজটা ভালো লাগে সেটা খেয়ে-না খেয়ে, ঘুমিয়ে-না ঘুমিয়ে সারাদিন করতে পারি। লেখালেখিটা তেমনই একটা কাজ। আলহামদুলিল্লাহ্, আমি ভালো আছি।

আসিফ আকবরের সঙ্গে আপনার নিয়মিত কাজ হচ্ছে এটা কতটা উপভোগ করেন? তার জন্য এ পর্যন্ত কতগুলো গান লিখেছেন?

আমার মতে আসিফ আকবর হলেন, বাংলাদেশের মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির সবচেয়ে বিস্তৃত বটবৃক্ষ। একজন লিভিং লিজেন্ড। তার সঙ্গে নিয়মিত কাজ করতে পারা আমার জন্যে ভীষণ সৌভাগ্যের বিষয়। বলতে পারেন আমার ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট। এ পর্যন্ত তার জন্যে প্রায় অর্ধশত গান লিখেছি। কিছু গান রিলিজ হয়েছে, কিছু গান রিলিজের অপেক্ষায়, কিছু লিরিক সুরকারদের হাতে আছে।

উল্লেখ, করার মতো কিছু গান হলো- জুয়েল মোর্শেদের সুরে ‘আগুন’, ‘ওরে পাখি’। আহমেদ হুমায়ূনের সুরে ‘মেয়ে তুমি কই’, ‘মিথ্যে কথার গান’। কিশোরের সুরে ‘দাবাড়ুর চাল’, ‘কী করি’।

আসিফ আকবরের জনপ্রিয় গান ‘আগুন’ লেখার পেছনের গল্প কি?

একদিন হঠাৎ ফেসবুকে দু’লাইনের একটি স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম, ‘লোকে বলে তুমি আগুন, ছাই বানাতে জুড়ি নাই/ ভয়ে ভয়ে হাত ধরেছি, আমি কিন্তু পুড়ি নাই’। একটু পর জনপ্রিয় সুরকার-সঙ্গীতশিল্পী জুয়েল মোর্শেদ ইনবক্সে বললেন এ দু’টিলাইনকে পূর্ণাঙ্গ লিরিক বানাতে। এর আগেও তিনি আমার লেখা কয়েকটি গান সুর করেন। আমি ১৫ থেকে ২০ মিনিটের মধ্যে লিরিকটা লিখে পাঠাই তাকে। ‘আগুন’ লেখার পেছনের গল্পে জুয়েল ভাই ছাড়া অন্য কোনও চরিত্র নেই।

হাবিব ওয়াহিদের সঙ্গেও কাজ করছেন তার জন্য এ পর্যন্ত কতগুলো গান লিখেছেন?

হাবিব ওয়াহিদের সঙ্গে কাজ করাটা ছিল আমার স্বপ্ন। স্বপ্নপূরণের পথে প্রথম গানটি ছিল ‘ঘুম’। সে সময় গানটি খুব সাড়া ফেলে। এরপর একে একে লিখেছি ‘ঝড়’, ‘অবুঝপনা’, ‘তোমাকে চাই’, ‘গোলাপের দিন’, ‘তোরই জানালায়’। রিলিজের অপেক্ষায় আছে আরো কিছু গান। তাছাড়া তার সঙ্গে কিছু জিঙ্গেলস্-এর কাজ করেছি।

এবারের ঈদে আপনার লেখা কতগুলো গান প্রকাশ হচ্ছে?

এরই মাঝে আসিফ আকবরের একটি গান প্রকাশ পেল। গানটির নাম ‘কী করি’। গানটি সুর করেছেন এ প্রজন্মের নামকরা সুরকার কিশোর। ক’দিন পরেই আসিফ আকবরের আরেকটি গান রিলিজ হবে। অন্যদিকে আমার লিরিকে চলছে হাবিব ওয়াহিদ-এর নতুন একটি মিউজিক ভিডিওর কাজ। বরাবরের মতোই গানটির সুর ও সঙ্গীতায়োজন করেছেন হাবিব ওয়াহিদ নিজেই। তাছাড়া এবারই প্রথমবারের মতো লিখলাম তাহসান ও তিশা অভিনীত একটি নাটকের গান। জনপ্রিয় নির্মাতা মাবরুর রশীদ বান্নাহ’র রচনা ও পরিচালনায় ধ্রুব টিভি’র ইউটিউব চ্যানেলের জন্য নির্মিত নাটকে ‘কথা দিলাম’ শিরোনামের গানটি গেয়েছেন ইমরান ও কনা। সুর ও সঙ্গীতায়োজনে ছিলেন সঙ্গীত পরিচালক আহমদে হুমায়ূন।

শুনলাম কলকাতার ছবিতে গান লিখেছেন?

ঠিকই শুনেছেন। গানটির নাম ‘তুই আমার লাভ স্টোরি’। ‘তুই আমার লাভ স্টোরি’ মুভির টাইটেল গান এটি। কলকাতার তরুণ সুরকার অরিন’র সুর ও সঙ্গীতায়োজনে গানটি গেয়েছেন ‘ও ললনা আজ বলো না বাসবে ভালো কি’ গানের কণ্ঠশিল্পী শত্রুজিৎ দাশগুপ্ত। খুব শিগগিরই মুভিটির শুটিং শুরু হবার কথা রয়েছে।

ঢাকাই ছবির জন্য এখনও গান লিখেননি, কারণ কি?

এটা আমার ব্যাডলাক। আসলে আমার লেখা আসিফ আকবরের ‘আগুন’ গানটি বাংলাদেশের সীমানা পেরিয়ে কলকাতায়ও বেশ জনপ্রিয়তা পায়। সেই গানের লিরিকের ভালোলাগা থেকেই সঙ্গীত পরিচালক অরিন আমার সঙ্গে যোগাযোগ করে। তাই আমাদের চলচ্চিত্রে গান লেখার আগেই কলকাতায় লিখতে হলো। আমার সঙ্গে ইতোমধ্যে আমাদের চলচ্চিত্রের নামকরা কয়েকজন সুরকারের কাজ শুরু হয়েছে। আশা করি, কোনো একদিন হয়তো আমাদের সিনেমার গানও লিখতে পারবো।

দেশের মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে আপনার মূল্যায়ন জানতে চাই

আমার মনে হয় দেশের মিউজিক ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে মূল্যায়ন করার মতো কোনও অবদান আমি রাখতে পারিনি এখনও। সেটা সিনিয়ররাই ভালো বলতে পারবেন। আমি শুধু আমার কাজটা করে যেতে চাই।

গান নিয়ে আপনার ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?

পরিকল্পনা একটাই। ভালো গান লিখতে চাই। জীবনের শেষ দিন, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত গান লিখতে চাই।

এম/পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিনোদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞার সিদ্ধান্ত নিল ইইউ
চাকরি দেবে পপুলার ফার্মা, বছরে ৩ বোনাস
যত টাকা বেতন পান আনুশকা-বিরাটের দেহরক্ষী
যেসব অঞ্চলে শিলাবৃষ্টির শঙ্কা
X
Fresh