নাচের ছন্দে মাটির স্বপ্ন
ছোট্ট মাটি সিদ্দিকী মায়ের সাথে নাচের স্কুলে যেত। মা ছিলেন শিক্ষক। টেবিলে বসিয়ে রেখে মা যখন শিশুদের অনুশীলন করাতেন তখন মাটি তাকিয়ে থাকতো। অনুকরণ করতো। এভাবেই নাচের সঙ্গে মাটির সখ্যতা।
তিন বছর বয়স থেকেই নাচের সঙ্গে সম্পর্ক। প্রথম দিকে সৃজনশীল এবং লোকনৃত্য করলেও এখন সাম্প্রতিক, ময়ূরভঞ্জ, ছৌ নাচের চর্চা করছেন তিনি। এছাড়া বেলি ড্যান্স, আফ্রিকান, সৃজনশীল, লোক, মার্শাল আর্ট মিলিয়ে নাচেও প্রশংসা কুড়িয়েছেন।
জুটি হয়ে দেশে প্রথম নাচের এক্সপেরিমেন্টাল ফটোশুট করেছেন মাটি। ভারতের বর্ধমান ও পুনেতে দ্বৈত নাচের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। টেলিভিশন শো এবং স্টেজ শোর পাশাপাশি আবৃত্তিতেও প্রশংসা কুড়িয়েছেন।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে স্নাতকোত্তরে অধ্যয়নরত মাটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃত্য সংগঠন কালবৈশাখীর সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেও তার সক্রিয় অংশগ্রহণ।
পড়াশুনার পাশাপাশি একইসঙ্গে নাচ কিভাবে চালিয়ে যান-এমন প্রশ্নে মাটির পরামর্শ হচ্ছে, ‘অনেকে অনেক কথা বলবে। কারণ আমরা সামাজিকভাবে এখনও নাচের জন্য তৈরি হইনি। তাই নিজের সাথে বোঝাপড়াটা ঠিক রাখতে হবে। বোঝাপড়া থাকলে কেউ আটকাতে পারবে না।’
মাটি বলেন, বাংলাদেশে নাচ এখনও বিকাশমান একটি পেশা। ফলে আমাদের অনেক ঝামেলাই পোহাতে হচ্ছে। পরবর্তী প্রজন্ম যাতে সেই বাধাগুলো না বোধ করে, সেজন্য ভালো পরিবেশ তৈরি করাটাই আমার লক্ষ্য।
অন্যের সাথে প্রতিযোগিতায় বিশ্বাস না করা এ তরুণ নৃত্যশিল্পী জানান, ‘আমার লড়াই আমার নাচের উন্নতি নিয়ে, কোনও ব্যক্তিবিশেষের সঙ্গে নয়।'
নাচ নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শুধু নাচ নিয়ে ক্যারিয়ার গড়ার মতো বাস্তবতা এদেশে এখনও কল্পনা। তবু এটাকেই চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছি। দায়িত্ববোধের জায়গা থেকে এবং নাচের প্রতি ভালোবাসা থেকেই নাচকে পেশা হিসেবে নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই।'
দেশের নাচকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করতে সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা জরুরি বলেও জানালেন এ নৃত্যশিল্পী।
এসজে/পি
মন্তব্য করুন