খসড়া কপিরাইট আইনে ‘স্বাধীনতার ঘোষণা’ কপিরাইট কার?
জাতীয় চলচ্চিত্র দিবসের (৩ এপ্রিল) ‘বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের বর্তমান অবস্থা ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক সেমিনারে চলচ্চিত্র প্রযোজক নেতা খোরশেদ আলম খসরুর বক্তৃতায় ক্ষোভ ঝড়ে পড়লো।
তিনি বলেন, ‘খসড়া কপিরাইট আইনের ১৫ (ঘ) ধারার প্রথম লাইন পড়লে মনে হয় ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ আমাদের স্বাধীনতার ঘোষণা হয়েছিল। সেই ঘোষণার কপিরাইট মূলত বঙ্গবন্ধুর পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকেও দেয়া হয়েছে। কিন্তু এই খসড়া আইনে যেভাবে লেখা হয়েছে সেটি দেখলে মনে হয় সেই কপিরাইট সত্ত্ব বঙ্গবন্ধুকেও দেয়া হয়েছে। আবার প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকেও দেয়া হয়েছে। ধারাটি পড়লে আপাত দৃষ্টিতে এমনই মনে হয়।’
কপিরাইট কমিটির সংশোধনী মিটিং-এ বার বার বলা হলেও ওই ধারাটি এখন অবধি ওই অবস্থাতে রয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন সংশ্লিষ্টরা।
খোরশেদ আলম খসরু আরও বলেন, কপিরাইট রেজিস্টার চলচ্চিত্রের কপিরাইট সমিতিরও নিবন্ধন দিয়েছেন। কিন্তু সেই সমিতিতে চলচ্চিত্রের কোনও মানুষ নেই। বিষয়টির দিকে সংশ্লিষ্টদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।
এদিকে কপিরাইট অফিসের ওয়েব সাইটে সংরক্ষিত খসড়া যে আইনটি রয়েছে, সেই আইনটিতেও এই ধারাটি এভাবেই লেখা আছে। যাতে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, যিনি বক্তৃতা দিয়েছেন এবং যার পক্ষে বিবৃতিটা দেয়া হয়েছে। তারা দুজনেই ওই কপি রাইটের মালিক হবেন।
এ ব্যাপারে কপিরাইট বিষয়ক আইনজীবী ব্যারিস্টার হামিদুল মিজবাহর সঙ্গে আরটিভি অনলাইনের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয়। তিনি বিষয়টির সহজ ব্যাখ্যা দিলেন।
তিনি বলেন, খসড়া কপিরাইট আইন ২০১৮ সালের ১৫ (ঘ) ধারার প্রথম লাইনটি এমনভাবে লেখা হয়েছে, এতে করে কোনও বক্তৃতাকারী অথবা কোনও বিবৃতি প্রদানকারী দুজনেই কপিরাইটের মালিক হবেন। এই খসড়া ধারাটি যদি আমরা আমাদের স্বাধীনতাযুদ্ধের ঘোষণার ক্ষেত্রে প্রয়োগ করি, তাহলে দেখা যাবে স্বাধীনতার ঘোষণা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দিয়েছিলেন। এর কপিরাইট বঙ্গবন্ধুর হবে। কিন্তু খসড়া আইন অনুযায়ী বঙ্গবন্ধুর পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের নামে কপিরাইট দেয়া হয়েছে। যা কখনই হতে পারে না। এতে করে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত হবে।
এম/এমকে
মন্তব্য করুন