বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে বিশেষ শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা
সোয়াদ। ১৬ বছর বয়সী বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন এই শিশু এসেছে রাজধানীর শ্যামলী থেকে আরটিভি আয়োজিত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে। এঁকেছে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণে ধারণ করা হাতের ছবি। মায়ের মুখে জাতীর জনকের আত্মত্যাগের কথা শুনে উদ্বুদ্ধ হয়ে এই ছবি এঁকেছে সোয়াদ।
রাজধানীর মিরপুর থেকে এসেছে ওয়াসিক। এঁকেছে জাতীয় পতাকা। অয়ন ও অনন্ত এঁকেছে বঙ্গবন্ধুর ছবি। ফারহান সাঈদ তার তুলিতে তুলে এনেছে মুক্তিযুদ্ধের চিত্র।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন ও শিশু দিবস উপলক্ষে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের নিয়ে আয়োজিত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় এমনই চিত্র দেখা যায়।
গতকাল শনিবার বিকেলে রাজধানীর তেজগাঁও বেঙ্গল স্টুডিও কার্যালয়ে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করে আরটিভি। প্রতিযোগিতায় তুলির ছোঁয়ায় বঙ্গবন্ধু, বাংলা ও এদেশের সৌন্দর্যের নানান দিক ফুটিয়ে তোলে শিশুরা।
শ্যামলী, ধানমণ্ডি, কেরানীগঞ্জসহ রাজধানীর বিভিন্ন অঞ্চলের ২৫টির ও বেশি স্কুল থেকে দেড় শতাধিক বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু অংশ নেয় চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায়। বাবা-মা এবং শিক্ষকদের সহযোগিতায় হাজির হয় প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে। কেউবা আসে ঢাকার অদূরে নারায়ণগঞ্জ থেকে।
৩ থেকে ৯ বছরের শিশুদের ক গ্রুপ ও এবং ১০ বছরের বেশি বয়সীদের খ গ্রুপে বিভক্ত করে পুরস্কৃত করা হয়।
প্রতিটি গ্রুপে ৩জন করে মোট ছয় জনকে দেয়া হয় অ্যাওয়ার্ড। এছাড়া প্রত্যেক প্রতিযোগীকে দেয়া হয় অংশগ্রহণের সনদ।
ক গ্রুপে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকার করে আলিয়া তেহজীব আহমেদ, হিসাম নাজের আলী রহমান, আনাবি।
খ গ্রুপে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান অধিকার করে ফারহান সাইদ তানিশ, অসৃক ইকবাল মেঘ, শেখ আরাফাত হোসেন অয়ন।
মিরপুর থেকে আসা এক প্রতিযোগী পুরস্কৃত না পেয়ে মন খারাপ করে বসে ছিল। মন খারাপ কেন জিজ্ঞেস করলে বলে, পুরস্কার পেলাম না! শিশুটির মা তার উদ্দেশে বলে, বাবা আগামীবার নিশ্চয় পাবে। মন খারাপ করে না। আর তুমিই তো আমাদের জন্য বড় পুরস্কার।
পাশ থেকে অন্য একজন অভিভাবক বলেন, আমরা ওদের মন ভালো রাখতে এখানে নিয়ে এসেছি। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুদের নিয়ে যখন যেখানে অনুষ্ঠান হয় নিয়ে যাই।
চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায় বিচারক ও বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের শিক্ষক ও চিত্রশিল্পী রোকেয়া সুলতানা, শিশু সুরক্ষা ট্রাস্টের সভাপতি, অধ্যাপক মোঃ গোলাম রব্বানী, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরের পরিচালনা কমিটির সদস্য আশরাফুল আলম পাপলু, বাংলাদেশ টেলিভিশনের ডিজাইন ডিরেক্টর একেএম জাহিদুল মুস্তাফা, আরটিভির হাত বাড়িয়ে দিলাম অনুষ্ঠানের উপস্থাপক সৈয়দা মুনিরা ইসলাম ও আরটিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আশিক রহমান।
বিচারকরা অভিভাবক ও শিশুদের উদ্দেশে অনুপ্রেরনাদায়ক কথা বলেন। একই সঙ্গে সরকারকে চাকরিসহ সর্বক্ষেত্রে সহযোগিতার হাত বাড়ানোর আহ্বান জানান।
আরটিভির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ আশিক রহমান বলেন, আরটিভি, অটিজম শিশুদের সাথে আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই আয়োজন করছি। আমাদের সঙ্গে থাকবেন, সহযোগিতা করবেন। আমরা আমাদের দায়িত্বের জায়গা থেকে এরূপ আরও আয়োজন করতে চাই। পুরস্কার বড় কথা না সবাই ভালো করেছে, বিজয়ী হয়েছে। অভিভাবকদের উদ্দেশে বলবো সবসময় ওদের সঙ্গে আনবেন, ওরা আরও বিকশিত হতে পারবে।
জিএ/এস
মন্তব্য করুন