• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
logo

‘গান শুনে পথশিশুটি জড়িয়ে ধরে বলল, তুমি আমার ভাই হবে?’

সিয়াম সারোয়ার জামিল, আরটিভি অনলাইন

  ১৩ মে ২০১৮, ২০:১৮

তরুণ শিল্পী রাজীব আল রুদ্র'র পরিচিত শুধু রুদ্র নামেই। তিনি ‘ব্যাকস্টেজ’ ব্যান্ডের ভোকালিস্ট, একই সাথে একজন গীতিকার ও সুরকার। অর্ধযুগ আগে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে লাইভ গেয়ে শুরু হয় ‘ব্যাকস্টেজের’এর যাত্রা। অল্পসময়েই দারুণ প্রশংসা কুড়িয়েছে এই দলটি। আরটিভি অনলাইনের সঙ্গে গান, রাজনীতি, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা নিয়ে খোলামেলা কথা বলেছেন রুদ্র। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন স্টাফ রিপোর্টার সিয়াম সারোয়ার জামিল।

সিয়াম: গান নিয়ে আগ্রহটা কবে থেকে?

রুদ্রুঃ গান নিয়ে আগ্রহটা আসে শৈশবেই। আমি যখন ক্লাস নাইনে পড়ি, সে সময়েই। তারপর গুণগুণ করে গান গাওয়া। গিটার শেখা। বন্ধুদের সঙ্গে গেয়ে ওঠা। এভাবেই গানের সঙ্গে একটা সম্পর্ক দাঁড়িয়ে যায়।

সিয়াম: আপনি কেন গান করেন?

রুদ্র: মূলত নিজের মনের খোরাক থেকেই গানটা গাইতাম। পরে মানুষের ভালোবাসাটা সেই গানের নেশাকে অন্যমাত্রায় নিয়ে গেছে। এখন মানুষের জন্যেই গান গাই। মানুষের ভাবনা, মানুষের চিন্তা, মানুষের জীবানাচার আমার গান গাওয়াকে প্রভাবিত করে। আমি চেষ্টা করি, আমার গানে মানুষের মনের কথাটাই বলতে।

সিয়াম: শৈশবে সঙ্গীতের বাইরে আর কী নিয়ে আগ্রহ ছিল।

রুদ্র: আমি হতে চেয়েছিলাম পাইলট বা ক্রিকেটার। যদিও প্রথমটি সম্পূর্ণরূপে ভেস্তে গেছে। তবে দ্বিতীয়টি প্রায় ঘটিয়েই ফেলেছিলাম। ঠিক সে মুহুর্তেই একটি দুর্ঘটনা সময়, স্থান, জীবন প্রায় সব উলট পালট করে দেয়। এরপরপরই গানকে মনে হলো যেন নিজের বিশ্বটাকে ফিরে পেলাম আবার। আবার শুরু হলো পথচলা। দেখি এবার কোথায় গিয়ে কখন থামে জীবন।

সিয়াম: গানের এ্যালবাম আসছে কখন?

রুদ্র: এখনই না। আমরা আসলে সবাই এখনো শিখছি। যদিও কোন শেখারই শেষ নেই। তবুও একটা লেভেল রয়েছে। আমরা সবাই ওই লেভেলটা প্রথমে ছুঁতে চাই। তারপর যদি এ্যালবাম নিয়ে চিন্তা আসে তো করবো।

সিয়াম: আপনি গান শোনেন বেশি নাকি গান নিয়ে চিন্তা বেশি করেন?

রুদ্র: আসলে যেহেতু শিখছি তাই দুটোই জরুরি ভেবে দুটোই করি। দুটোই আসলে সমান গতিতেই করি।

সিয়াম: গান গাইতে গিয়ে কখনো মনে দাগ কেটে যাওয়ার মত কিছু ঘটেছে?

রুদ্র: দাগ কাটার মত অনেক অভিজ্ঞতাই আছে। কমলাপুর রেলস্টেশনের ঘটনাটাই বলি। আমি, বিশ্বজিৎ এবং শুভ ছিলাম। আমরা গিয়েছিলাম মুলত পথশিশুদের গান শোনাতে। ওই জায়গায় হাসান নামের একটা ছেলে, তার দুটো পা নেই, একটা হাত নেই। আমার গান শুনে পঙ্গু পথশিশুটি জড়িয়ে ধরে বলল, 'তুমি আমার ভাই হবে?' পরে সে আমাকে একটা উপহার দিয়েছিল। একটা রিচ ব্যান্ড। ওই ঘটনাটা কখনই ভুলতে পারিনা।

সিয়াম: আপনি তো বামপন্থী রাজনীতির সঙ্গেও জড়িত। রাজনীতির মাঠে, গানের স্টেজে দুটোতেই সমান পদচারণা। কীভাবে মেলান?

রুদ্র: দেখুন রাজনীতিটা করি মানুষকে ভালোবেসে। মানুষের অধিকার আদায়ে গানও যেমন করি, মাঠেও তেমন সক্রিয় থাকাটা জরুরি। দরিদ্র মানুষের শিক্ষার অধিকার আদায় এবং শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য লড়তে পারাটা আমার জন্য আনন্দের। সেটা মাঠেও হতে পারে, স্টেজেও হতে পারে। আসল কথাটা হচ্ছে মন থেকে চাইলে আসলে সবই করা সম্ভব। মনের ইচ্ছেটাই গুরুত্বপূর্ণ এখানে।

সিয়াম: গান নিয়ে কাজ করার পেছনে উৎসাহ কে দেয়?

রুদ্র: গান গাওয়ার উৎসাহটা বাবা-মা দেন। সবচেয়ে বেশি বড় ভাইয়াই দেন। ব্যাকস্টেজ পরিবারের সবাই সবসময় আলাদা ইন্সপিরেশনের একটা জায়গা তৈরি করে দিয়েছে। ব্যাকস্টেজ আমাদের কাছে এখন একটা পরিবারের মত। হাসি-ঠাট্টা আছে, খুঁনসুটি আছে, ভালোবাসা আছে।

সিয়াম: ভবিষ্যৎ এ রাজনীতিতে আসার কোন চিন্তাভাবনা আছে কি?

রুদ্র: হাহাহা, না। রাজনীতির মাঠে আমি পেছনের সারির লোক। গানের দিকেই বেশি ধ্যান-জ্ঞান। গান দিয়েই মানুষের কথা বলতে চাই। পাশে দাঁড়াতে চাই।

সিয়াম: অন্য কোনো পরিকল্পনা?

রুদ্র: হ্যাঁ। নতুন প্রজন্মের অধিকার বঞ্চিত শিশুদের জন্য ৬৪ জেলায় ৬৪টি মিউজিক স্কুল করতে চাই। যাতে করে সুবিধাবঞ্চিত শিশুরাও গানের সঙ্গে থাকতে পারে।

এসজে

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিনোদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
আরটিভিতে আজ যা দেখবেন
৮৩৭ আফগান শরণার্থীকে ফেরত পাঠাল পাকিস্তান
আরটিভিতে আজ যা দেখবেন
ইন্টারনেটে ধীরগতি, এক মাস চলতে পারে ভোগান্তি
X
Fresh