• ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
logo

এখনকার সিনেমা প্রদর্শনের উপযোগী না: নওশাদ

আরটিভি অনলাইন রিপোর্ট

  ১৫ জানুয়ারি ২০১৮, ১৩:০৪

ঢাকায় চলছে আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব যেখানে ৬০টিরও বেশি দেশের সিনেমা দেখানো হচ্ছে। এই উৎসব যখন চলছে, ঠিক সে সময় বাংলাদেশের চলচ্চিত্ররা প্রদর্শকরা আবারো অভিযোগ করেছেন, দেশে তৈরি চলচ্চিত্রের প্রতি দর্শকদের অনাগ্রহ তাদের ব্যবসাকে চরম অস্তিত্বের সংকটে ফেলেছে।

তারা বলছেন ২০১৭ সালেই বাংলাদেশে মুক্তি পেয়েছে ৬২টি চলচ্চিত্র, কিন্তু দর্শক টানতে পেরেছে হাতে গোনা মাত্র কয়েকটি। বাংলাদেশ চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি বলছে, দর্শকের অভাবে অব্যাহত লোকসানের জেরে দেশে গত দেড়-বছরে ৩০টির মতো সিনেমা হল বন্ধ হয়ে গেছে। খবর বিবিসি বাংলা।

মধুমিতা সিনেমা হলের মালিক ইফতেখারউদ্দিন নওশাদ বলেন, যেভাবে ভর্তুকি দিয়ে হল চালাতে হচ্ছে, ভবিষ্যতে আর কতদিন টিকিয়ে রাখা যাবে সেটি নিয়ে এখন সন্দিহান।

তিনি আরো বলেন, ৪০ বছরে এমন অবস্থা হয়নি। গত দশ বছরে যা হচ্ছে। এখন যে সিনেমাগুলো হচ্ছে তা প্রদর্শনের উপযোগী না। গত বছর মাত্র তিনটি সিনেমা ব্যবসা করেছে। ৫২ সপ্তাহের মধ্যে মাত্র তিনটি সিনেমা বাণিজ্যিক সাফল্য পেয়েছে। এভাবে তো আমাদের চলবে না।

নওশাদ বলেন, শিল্পীরা যারা মারা গেছেন বা যারা অবসরে গেছেন সেই শূন্যতা পূরণ হয়নি। আমরা এখন ‘আইসিইউ’তে আটকে আছি। ঢাকার ফিল্ম জগতের লোকজনকে এখন মেনে নিতে হবে যে তারা ব্যবসাসফল ছবি দিতে পারছেন না।

মধুমিতা হলের মালিক আরো বলেন, আমরা চাচ্ছি ভারতীয় সিনেমা যেন সরকার এখন ছেড়ে দেয়। এই যে কিছুদিন আগে চালের স্বল্পতা দেখা গিয়েছিল। স্বল্পতা দেখা দিলেই কিন্তু বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়। তেমনিভাবে আমরাও চাচ্ছি যে, বছরে অন্তত ২০/২৫টা সিনেমা যেন সরকার আনতে দেয়। সিনেমাগুলো যদি একসাথে ভারতের সঙ্গে মুক্তি দেয়া হয় তাহলে ছবিগুলো ব্যবসা করবে এবং হলগুলো বাঁচবে। তা না হলে, হল ভেঙে ফেলার কথাই চিন্তা করতে হবে। হল ভেঙে ওখানে যদি সুপার মার্কেট করি তাহলে আরো পয়সা পাবো।

তিনি জানান, গত ছয় মাস ধরে তারা হলের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঠিকমত বেতন দিতে পারছেন না। ঢাকার বাইরের পরিস্থিতি আরো খারাপ।

প্রযোজক সমিতির তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে ২০১৭ সালে ৬২ টি সিনেমা মুক্তি পেয়েছে। তারপরও হলগুলোর মালিকদের বক্তব্য এতটাই হতাশাজনক। কিন্তু এসব সিনেমা কেন দর্শকদের হলে যেতে আগ্রহী করতে পারছে না?

এ প্রসঙ্গে উঠে আসে সিনেমার নির্মাণ দুর্বলতা, কাহিনির বৈচিত্রহীনতা, হলের মানসম্পন্ন পরিবেশের অভাবসহ নানা বিষয়। পরিচালক ও প্রযোজক সোহানুর রহমান সোহান বলেন, সিনেমা দেখানোর জন্য সিনেমা হল নেই। আর সিনেমা বানানোর জন্য প্রযোজক নেই। কারণ সিনেমা পাইরেসি হয়ে যায়। এসব চিন্তা থেকেই মেইনলি যারা ছবি বানাতো, সিনেমা যারা ভালোবাসতো, ছবির প্রতি যাদের প্রেম ছিল সেখান থেকে তারা সরে গেছে।

দেশের সিনেমার জন্যে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে পরিচালক প্রযোজকরা মনে করছেন স্যাটেলাইট চ্যানেলে প্রচারিত ভারতীয় সিনেমাকে। আর সমালোচকরা বড় করে দেখছেন মানসম্পন্ন সিনেমার সংকট এবং বর্তমান প্রেক্ষাপটে হলে গিয়ে সিনেমা দেখার মানসিকতার অভাবকে।

চলচ্চিত্র সমালোচক অধ্যাপক জাকির হোসেন রাজু বলেন, বিশ্বমানের সিনেমা নির্মাণের অভাব রয়েছে, অন্যদিকে সিনেমা দেখার বিকল্প অনেকগুলো এভিনিউ হয়েছে। শুধুমাত্র স্যাটেলাইটে চ্যানেলগুলো, গ্রামের দিকে এবং ঢাকার আশে-পাশে অনেকেই মোবাইলেও সিনেমা দেখছেন।

তিনি বলেন, নতুন অনেক নির্মাতা আসছেন তবে তাদের মধ্যে অনেকেই একটি বা দুটি সিনেমার পরই হতাশ হয়ে মনোযোগী হচ্ছেন বিজ্ঞাপন নির্মাণের দিকে, কারণ সেটি লাভজনক।

বর্তমানে সিনেমায় কারিগরি প্রযুক্তির প্রয়োগ বাড়ছে, বাড়ছে বাজেটের আকারও। কিন্তু তারপরও আশি বা নব্বইর দশকের ছবিকে এখনো এগিয়ে রাখছেন মধ্যবয়সী দর্শকেরা অনেকেই। আর এই প্রজন্মের দর্শকেরা তাদের মান সম্পন্ন সিনেমা দেখার তৃষ্ণা মেটাচ্ছেন বিভিন্ন ফিল্ম ফেস্টিভ্যালের আঙিনায় এসে।

পিআর/এম

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিনোদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
ফের বাংলাদেশের সিনেমায় পাওলি
জয়ের স্ত্রীর দাবি, সালমান শাহর মতোই তার স্বামীকে টার্গেট করা হলো
নতুন তিনটি চলচ্চিত্রে মিম
২৩ এপ্রিলকে চলচ্চিত্রের কালো দিবস ঘোষণা
X
Fresh