• ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
logo

‘আমার পেছনে কোনো গডফাদার ছিল না’

এ এইচ মুরাদ

  ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭, ২১:২৩

পুরো নাম ইয়ামিন হক ববি। এ গ্ল্যামারাস চিত্রনায়িকা ঢালিউডে ববি নামেই পরিচিত। তার অভিনীত ও প্রযোজিত ছবি 'বিজলি' এখন মুক্তির অপেক্ষায়। দেহরক্ষী খ্যাত এ নায়িকা চলচ্চিত্র ও ব্যক্তিগত জীবনের নানা কথা বলেছেন আরটিভি অনলাইনের সঙ্গে। চলচ্চিত্রের সংকট-সম্ভাবনা নিয়েও সোজাসাপ্টা কথা বলেছেন তিনি। জানিয়েছেন বিয়ে, সংসার, ব্যক্তিজীবন ও রূপালি পর্দায় উঠে আসার নেপথ্যের গল্প। ববির এ দীর্ঘ সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন এ এইচ মুরাদ। দুই পর্বের এই সাক্ষাৎকারটির প্রথম কিস্তি গতকাল প্রকাশের পর আজ মঙ্গলবার প্রকাশ হলো দ্বিতীয় ও শেষ কিস্তি।

জাজ মাল্টিমিডিয়া প্রযোজিত ছবির নায়িকা হলেন

‘বেপরোয়া’ ছবিটিতে অনেক আগেই চুক্তিবদ্ধ হয়েছিলাম। কিন্তু চলচ্চিত্র শিল্পে অস্থিরতা ও ‘বিজলি’ চলচ্চিত্রের কাজের জন্য দেরি হয়ে গেল। কারণ ওই ছবির প্রযোজক হওয়ার জন্য আমাকে এ সংক্রান্ত সবকিছুতেই অনেক সময় দিতে হয়েছে। বিজলি ‘ভিএফএক্স’ নির্ভর ছবি হওয়াতে ছবির এডিটিং বাংলাদেশ ও ভারত মিলিয়ে করতে হয়েছে। এ ছবির পরিচালক ইফতেখার চৌধুরী আমেরিকার নাগরিক। সেখানকার প্রোডাকশন হাউজ থেকেও কিছু অংশের সম্পাদনার কাজ করিয়ে এনেছেন তিনি। দর্শকের কাছে অনুরোধ, সবাই ‘বিজলি’ ছবিটি দেখবেন। এ ধরনের ছবি বেশি বেশি নির্মিত হলে বাংলাদেশের চলচ্চিত্র শিল্পের জন্যই সুফল বয়ে আনবে বলে মনে করি।

খোঁজ দ্য সার্চথেকেওয়ান ওয়েতৃপ্তি-অতৃপ্তি

‘খোঁজ-দ্য সার্চ’ ছবির মাধ্যমে চলচ্চিত্রে পথচলা শুরু হয়েছিল। এরপর প্রায় দেড় থেকে দু'বছর চলচ্চিত্রে কাজ করিনি। সবচেয়ে বড় স্ট্রাগল করতে হয়েছে ফ্যামিলির সঙ্গেই। কোনোভাবেই তারা চাইছিলেন না যে, আমি সিনেমায় কাজ করি। সে জায়গা থেকে বেরিয়ে আসতে ভীষণ কষ্ট করতে হয়েছে। তারপর ‘দেহরক্ষী’ থেকে আবারো বড় পর্দায় ফেরা। আমি ভাগ্যবতী, ওই ছবিটি সুপারহিট হয়। পরে 'ফুল অ্যান্ড ফাইনাল' ও 'রাজত্ব' ছবি দু'টিতে দর্শকরা আমাকে গ্রহণ করেছেন। আমার পেছনে কোনো গডফাদার ছিল না। স্ক্রিন টেস্ট দিয়েই চলচ্চিত্রে কাজের সুযোগ করে নিতে হয়েছে। দর্শকদের ভালোবাসায় আজ ববি হতে পেরেছি।

অভিনয় নিয়ে ভাবনা

টাকার জন্য চলচ্চিত্রে আসিনি। এসেছি দর্শকের ভালোবাসা অর্জনের জন্য। এমন কিছু ছবিতে কাজ করতে চাই যেন মৃত্যুর পরেও মানুষ মনে রাখেন।

সামাজিক কোনো কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ততা

আমি সবসময় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি। ইন্ডাস্ট্রিতে অনেকেই আছেন, যারা মানুষকে সাহায্য করে ফেসবুকে প্রচার করে থাকেন। আর এ জিনিসটা সবসময় এড়িয়ে যাই আমি। অনেক বন্ধুই বলে, তুমি মানুষের জন্য এত কিছু করো কিন্তু গোপনে কেন? তোমার দেখাদেখি আরো অনেকেই হয়তো দেখানোর জন্য হলেও মানুষের পাশে দাঁড়াবে। আগ্রহী হয়ে উঠবে। কিন্তু এই লোক দেখানোর বিষয়টি নিয়ে আমি সন্দিহান! আমি মনে করি, মানুষকে সাহায্য করলে সেটা আড়ালেই করা উচিত।

দর্শকের অভিযোগ আছে আপনি সিনেমা কম করেন

এই অভিযোগটা প্রায়ই আমাকে শুনতে হয়। একই ধরনের ছবিতে বারবার কাজ করতে ভালো লাগে না। সেজন্য আমি ভালো প্রোডাকশনের ব্যানারে কাজ করার দিকে গুরুত্ব দেই। আমাকে বলা হত, 'তুমি এত সিনেমার কাজ ছেড়ে দিচ্ছ পরে তোমাকে আর কেউ কাজই দেবে না।' সত্যি বলতে, আমি ভালো কাজের কাঙাল। সামনে যে সিনেমার অফার আসবে তাই করতে হবে, এমন নীতিতে আমি বিশ্বাসী না।

এক্ষেত্রে দর্শক তো বঞ্চিত হচ্ছে

ইন্ডাস্ট্রিতে একটা শিল্পী দাঁড়ানোর পর থেকেই সে সারা জীবনের জন্য শিল্পী। অথচ আমাদের ইন্ডাস্ট্রিতে এক দুই বছরের একটা গ্যাপ মানেই ধরে নেওয়া হয় সে হারিয়ে যাচ্ছে। হলিউড কিংবা বলিউডের দিকে তাকালে দেখবেন দুই বা পাঁচ বছরের ব্যবধানে কোনো ছবি আসলে সবাই ধরে নেন ভালো কিছু আসছে। আপনারা এই বিষয়গুলো নিয়ে লিখছেন না কেন? আপনারা এই ম্যাসেজটা দর্শকদের দিন। আমরা আজ এত দূর এসেও যেন ২০০ বছর পিছিয়ে আছি। আমি নিজে বিজলি করতে গিয়ে দেখেছি, ২০ দিনের মধ্যে সিনেমা হয়ে যায় না। ভালো কাজের জন্য অনেক সময় দিতে হয়। এখন দর্শকের টেস্ট পরিবর্তন হয়েছে। আগের সেই দিন আর নেই। একটা সময় ছিল যখন শুধু বাংলাদেশ টেলিভিশন আর সিনেমা হল ছিল। বর্তমানে বিনোদনের অনেক মাধ্যম হয়েছে। এখন আর ভালো কাজ ছাড়া দর্শকদের হলমুখি করা সম্ভব না। মানুষ মোবাইলে বসেই সিনেমা দেখতে পারছেন। ভালো সিনেমা না হলে তারা কেন প্রেক্ষাগৃহে গরমের মধ্যে সিনেমা দেখতে যাবেন।

ঢালিউডের সঙ্গে তো হলিউড, বলিউডের পার্থক্য রয়েছে সংস্কৃতিও আলাদা

হ্যাঁ, তা ঠিক আছে। কিন্তু সিনেমা মুক্তির পর ওদের সঙ্গেই তুলনা করা হয়। ওখানকার শিল্পীদের সঙ্গে আমাদের তুলনা করা হয়। আমি নিজেও হলে গিয়ে সিনেমা দেখি। বোরখা পড়ে হলে যাই। দর্শকের সঙ্গে লুকিয়ে সিনেমা দেখার আনন্দ অন্যরকম। লুকিয়ে তাদের প্রতিক্রিয়া দেখতে খুব ভালো লাগে। তখন অনেক কাজ করতে ইচ্ছে করে।

বিয়ে নিয়ে গুঞ্জন শোনা যায়

হাহাহা (হাসি)। বিয়ে করলে তো জানতেন। না, এখনো সেরকম কিছু হয়নি। কোনো কিছু লুকিয়ে করি না। আমি ‘স্ট্রেট ফরওয়ার্ড’ মানুষ। বিয়ে করলে সবাইকে জানিয়েই করবো। কোন মানুষটাকে নিজের জন্য ঠিক মনে হবে তা সময়ই বলে দিবে। যদিও বাবা-মা সবসময় বিয়ের কথা বলতে থাকেন। বাবা ২০০৬ সাল থেকে খুব অসুস্থ। নিয়মিত তার চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে যেতে হয়। বাবাকে অনেক বেশি সময় দেই। তবুও স্বার্থপরের মতো বলবো, সিনেমা হলে যখন নিজের সিনেমা দেখি দর্শকের প্রশংসা ও আপনাদের (সাংবাদিক) সঙ্গে কাটানো সময়গুলো আমার জীবনের সেরা মুহূর্ত।

এম/পিআর

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিনোদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
তানিয়া বৃষ্টি-আরশের বিয়ের গুঞ্জন
গোপন বিয়ের গুঞ্জনে চটেছেন কাঞ্চন-শ্রীময়ী
ভোট না দিতে পারায় আফসোস ববির
X
Fresh