• ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

‘জিপিএ-৫ মানে জেলখানার ৫ নম্বর সেল’

বিনোদন ডেস্ক, আরটিভি নিউজ

  ৩০ ডিসেম্বর ২০২১, ১৪:৩২
'জিপিএ-৫ মানে জেলখানার ৫ নম্বর সেল'
ছবি তুলেছেন- ইয়ামিন মজুমদার

গুণী চিত্রশিল্পী মুস্তাফা মনোয়ার। ছোটবেলা থেকেই ছবি আঁকার প্রতি তার বিশেষ আকর্ষণ। ছবি আঁকার অপরাধে জেলেও গিয়েছেন। বাংলাদেশের শিল্পজগতে তিনি মেলে ধরেন পাপেটের এক নতুন রূপ। ২০০৪ সালে দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মান ‘একুশে পদক’ পেয়েছেন গুণী এই ব্যক্তিত্ব।

বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হয়েছে। মোট ২২ লাখ ৪০ হাজার ৩৯৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছে ২০ লাখ ৯৬ হাজার ৫৪৬ জন। মোট জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ লাখ ৮৩ হাজার ৩৪০ জন শিক্ষার্থী।

বর্তমান সময়ে পরিবারের চাপে অনেকে জিপিএ-৫ পেতে পড়াশোনা করে। ফলে সৃজনশীল বিষয়ে তারা আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। এক সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে চিত্রশিল্পী মুস্তাফা মনোয়ারের মতামত জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, 'আসলে পুরো পড়াটা যদি সৃজনশীল হতো, তাহলে আটকে রাখা যেত না। রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, এ ধরনের পড়া হলো একটা ফ্যাক্টরির বস্তার ওপর মার্কা মারা ছাপ। এই কোম্পানির এই জিনিস। এ প্লাস দরকার কী তোমার? অন্য কিছু পেলেই তো হয়। পরিবারের চাপ, এ প্লাস- পুরো সোসাইটি মার্কা-মারার দিকে চলে যাচ্ছে। পৃথিবীর সব বড় মানুষকে দেখো, এ প্লাস কে পেয়েছে খুঁজে বের করো। কিংবা একেবারে ফার্স্ট হয়েছে। খুবই কম। পৃথিবীতে এ+ পাওয়া বড় মানুষ নেই। ওরা চাকরি করে, গোলামি করে। ব্যস! বড় মানুষ না। তবে চাকরি পাবে। তোমার জীবন যদি অন্যের গোলামি করা চাকরির মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে, তুমি সৃজনশীল কিছুই করবে না। তোমার ছবি আঁকতে ভালো লাগে, এটা তো তোমার নিজের জন্য নয়, ছবিটা কি তুমি বাক্সে তুলে রাখবে? না। তুমি নিশ্চয়ই দেখবে। দেখাবে, আর ভালো লাগবে। তোমাদের প্রকৃতিকে ভালো লেগেছে। সেটা কি তোমরা প্রকাশ করবে না?'

মুস্তাফা মনোয়ার আরও বলেন, ''আগে তো খেলাধুলা নিয়ে ‘এই যে খালি খেলেই বেড়ায়’ বলে দিত মার। আর এখন তো যারা ক্রিকেট খেলছে, তাদের নিয়ে নাচানাচি করে। অনেক পয়সা করছে তো, তাই ক্রিকেটে এখন আর কোনো অসুবিধা নেই। এখন বলে, ‘সবাই জিপিএ-৫ পাবি, যা পড়’। এই জিপিএ মানে জেলখানা। জিপিএ-৫ মানে জেলখানার ৫ নম্বর সেল! ওখানে থাকো। আমাদের পয়সার দরকারটা কী? আমি বেশি পাইনি। অল্প পেয়েছি। চলে যাচ্ছে তো। এখনও নেশার মধ্যে আছি। এখনও বাচ্চাদের জন্য কাজ করছি, বড়দের জন্য করছি। এটা বিশাল নেশা।''

গুণী এই শিল্পীর ভাষ্যমতে, 'গরুর পেছনে লোহা পুড়িয়ে যেমন ছাপ দেওয়া হয় না, সে রকম তোমাদেরও ছাপ দেওয়া হয় জিপিএ-৫ এর মাধ্যমে।'

প্রসঙ্গত, দেশের অন্যতম খ্যাতিমান সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব মুস্তাফা মনোয়ার দীর্ঘদিন ধরে দেশের শিল্প-সংস্কৃতির বিভিন্ন শাখায় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন তার সৃজনশীল কর্মকাণ্ডে। প্রশংসিত হয়েছেন সর্বত্র। বাংলাদেশ টেলিভিশনে শিশুদের জন্য প্রতিযোগিতামূলক প্রতিভা বিকাশের ‘নতুন কুঁড়ি’র মতো সৃজনশীল অনুষ্ঠানেরও রূপকার তিনি। ৮৬ পার করেও সৃজনশীল কাজেই অবসরের আনন্দ খুঁজে পান মুস্তাফা মনোয়ার।

এনএস/পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিনোদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
সিনেমার পোস্টার আঁকা চিত্রশিল্পী শোয়েব আর নেই
শরীরটা পুরুষের, হাত দুটো শুধু নারীর
শহীদ মিনারের স্থপতিকে কেউ স্মরণ করেনি
একুশে পদক পাচ্ছেন চিত্রশিল্পী শাহজাহান আহমেদ বিকাশ
X
Fresh