সুভাষদা আমার গুরু : কবরী
অভিনয় করতে আসার আগে ‘হসপিটাল’ নামে সুচিত্ররা সেনের একটি মাত্র ছবি দেখেছিলাম। আর কোনো সিনেমা দেখিনি। তাই সিনেমা সম্পর্কে খুব একটা ধারণা ছিল না। সুভাষ দত্ত বাবা হবেন নাকি নায়ক হবেন এটা আমার মাথায় ছিল না।
এটুকু মনে আছে ‘সুতরাং’ সিনেমায় অভিনয় করেছি জেনে বাবা খুব খুশী হয়েছিলেন। তবে মা রাগ করেছিলেন। তখন আমার বয়স ১৩ কী ১৪ হবে। এজন্য সিনেমার কোনো কথা মাথায় ঢোকেনি। যন্ত্রের মতো কাজ করে গেছি। সিনেমা যে করছি বুঝতেই পারিনি। `সুতরাং' ছবিতে যতটুকু ভালো কাজ করেছি তার সব কৃতিত্ব দত্তদার (সুভাষ দত্ত)। তবে সিনেমা হলে গিয়ে যখন ছবিটি দেখলাম তখন মনে হলো খুব সুন্দর একটা ছবি দেখছি।
আমি বলবো ১৯৬৪ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ‘সুতরাং’কে পুঁজি করেই ৭ কোটি মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। পরবর্তী সময়ে কতোই না কাজ করেছি। তবুও মানুষ এখনো আমাকে ‘সুতরাং’র কবরী বলেই সম্বোধন করেন।
আজও ভেবে পাইনা ১৩-১৪ বছরের একটি মেয়ে হয়ে আমি সন্তান সম্ভাবার অভিনয় করেছি কিভাবে। আজও ‘সুতরাং’ ছবি নিয়ে আলোচনা, সমালোচনা এবং উদাহরণ হিসেবে নাম উচ্চারিত হয়। সুভাষ দত্তের আবিষ্কার দেশীয় ছবির মিষ্টি মেয়ে খ্যাত কবরী এভাবেই ‘সুতরাং’ সিনেমা নিয়ে বললেন।
মঙ্গলবার বিএফডিসির জহির রায়হান অডিটোরিয়ামে সুভাষ দত্ত স্মৃতি পরিষদ ও বাংলাদেশ আর্কাইভের যৌথ উদ্যোগে 'সুভাষ দত্ত এবং সুতরাং স্মারকগ্রন্থ' মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে সুভাষ দত্তকে নিয়ে আলোচনা করেন ছবির অভিনেত্রী কবরী, চলচ্চিত্র গবেষক ও শিক্ষক অনুপম হায়াত, চিত্রপরিচালক মুশফিকুর রহমান গুলজার, চিত্রপরিচালক শিল্পী চক্রবর্তী, ফকরুল আলম (বাংলাদেশ আর্কাইভ), শচীন্দ্রনাথ হালদার মহাপরিচালক বাংলাদেশ আর্কাইভ, প্রযোজক জাহাঙ্গীর খান।
আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে সুতরাং সিনেমার প্রদর্শন করা হয়। ১৯৬৪ সালের ২৪ এপ্রিল ছবিটি মুক্তি পায়। চিরসবুজ প্রেমের ছবি, বাঙালি জীবন ও সমাজের ছবি ‘সুতরাং’ ছিল বক্স অফিসে সুপার হিট।
১ লাখ ১০ হাজার টাকা বাজেটের ছবিটি আয় করেছিল ১০ লাখ টাকা।
এইচএম/আরকে
মন্তব্য করুন