• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
logo

শাহীন আলমকে নিয়ে যা বললেন ছেলের গৃহশিক্ষক

বিনোদন ডেস্ক, আরটিভি নিউজ

  ১২ মার্চ ২০২১, ১১:৫৫
শাহীন আলমকে নিয়ে যা বললেন ছেলের গৃহশিক্ষক
ফাইল ছবি।

পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে না ফেরার দেশে পাড়ি জমিয়েছেন এক সময়ের জনপ্রিয় চলচ্চিত্র অভিনেতা শাহীন আলম। গেলো সোমবার (৮ মার্চ) রাত ১০টা ৫ মিনিটের দিকে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। মৃত্যুর পর তার অনেক অজানা তথ্য সামনে এসেছে। তারই ধারাবাহিকতায় এই অভিনেতার ছেলের গৃহশিক্ষকের বর্ণনায় উঠে এসেছে ব্যক্তি শাহীন আলমের মানবিকতার চিত্র।

আরও পড়ুন : ‘স্বপ্নে পাওয়া’ আম দেখতে জনতার ঢল

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন কাজী মুশফিকুর রহমান। ছাত্রাবস্থায় শাহীন আলমের ছেলেকে পড়াতেন তিনি। সে সময়ের স্মৃতিচারণ করে মুশফিকুর ফেসবুকে লিখেছেন, ‘সেই বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষ দিকের কথা, আমার পড়াশোনার খরচ জোগানো বাবার পক্ষে খুব কষ্ট হয়ে যাচ্ছিল… তখন শাহীন আলম সাহেবের ছেলেকে পড়িয়ে নিজের খরচ চালাতাম। মগবাজারে উনার বাসা ছিল। তারপর চলে গেলেন নিকেতনের ঝকমকে ফ্ল্যাটে, আমি পরলাম মহাফাঁপরে। সেই জাহাঙ্গীরনগর থেকে আসতাম দুপুরের বাসে, আসাদগেট নেমে গুলশান-১ ট্যাম্পুতে তারপর হেঁটে নিকেতন... এখনকার মতো নিকেতন নয়, সবে শুরু হয়েছে বাড়ি ওঠা। সে গল্প থাক আত্মজীবনীর জন্য।’

গল্পে তিনি আরও লিখেছেন, ‘যখন বাচ্চাটাকে পড়িয়েছি বেশিরভাগ দিনই দুপুরের ভাত খাওয়াটা হতো না। জাহাঙ্গীরনগর টু নিকেতন, কাঁচা রাস্তা। মহাখালী ফ্লাইওভারের কাজ চলে... সে এক তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ। পড়ানো শেষ করে ফিরতে হতো রাতে... যাক সে আলাপও থাক।

আরও পড়ুন : কাগজপত্রের ত্রুটি থাকায় সীমান্ত ছুঁয়ে ফিরে গেল ট্রেন

একদিন শাহীন আলম সাহেবের মা এসে দেখলেন, চায়ের সাথে দেয়া গোটা কয়েক বিস্কুট এক নিমিষেই খেয়ে ফেলেছি। চরম ক্লান্ত ও ক্ষুধার্ত আমার সেদিকে কোন খেয়াল ছিল না। পরদিন থেকে হঠাৎ রকমারি নাস্তা আসতো। রাক্ষুসে খিদেটা মিটতো। একদিন কালো স্যুট পরা শাহীন আলম সাহেব আমাকে রাতে নিকেতনের কাঁদাপানিতে ফিরতে দেখেন। আমি হন্তদন্ত হয়ে ৮টার বাস টার্গেট করে জোর কদমে হাঁটছি বলা ভুল হবে, দৌড়োচ্ছি...। পরেরদিন ছেলের পড়া দেখতে আসবার ছলে অবজার্ভ করেন, সমুচা-রোল যা দেয় আমি তা ঝাঁপিয়ে পরে খাই। পড়ানোর চেয়ে খাওয়ায় আমার আগ্রহ। কোনও কথা না বলে তিনি অন্য রুমে চলে যান।

তারপর থেকে মাস্টার্স দেয়া অবধি যতদিন পড়িয়েছি আমার জন্য বাহারি তরকারি দিয়ে ভাত আসতো নাস্তা হিসেবে। রাতে উনার চকচকে গাড়িটা বেশিরভাগ দিনই আসাদ গেট নামিয়ে দিয়ে যেত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮টার বাস ধরতে। বেতনও বাড়িয়ে দিলেন না চাইতেই! এমন অসীম মমতাবান একজন মানুষকে আপনারা চিনেন একজন অভিনেতা হিসেবে, অশ্লীল ছবিও করেছেন তিনি... আপনাদের হিসেবে। আর আমি চিনি একজন অভুক্ত মানুষকে পরম মমতার ছায়ায় আশ্রয়দাতা হিসেবে। আপনাদের হিসেবে কুলোবে না। শাহীন আলম, আল্লাহতালা আপনাকে অনেক অনেক শান্তিতে রাখুক। আমিন।’

আরও পড়ুন : পদোন্নতি পেলেন না আলোচিত ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম

প্রসঙ্গত, ১৯৮৬ সালে নতুন মুখের সন্ধানের মধ্যে দিয়ে চলচ্চিত্রে কাজের সুযোগ পান শাহীন আলম। তার অভিনীত প্রথম সিনেমা ‘মায়ের কান্না’। ১৯৯১ সালে ছবিটি মুক্তি পায়। এরপর আরো অনেক ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। পরবর্তীতে চলচ্চিত্রে অশ্লীলতার সময় অভিনয় থেকে দূরে সরে যান এই অভিনেতা। চলচ্চিত্র ছেড়ে ব্যবসা নিয়েই ব্যস্ত ছিলেন তিনি।

এনএস/পি

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিনোদন এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
যৌন হয়রানির অভিযোগে ঢাবি শিক্ষকের নিয়োগ স্থগিত
জাবিতে বেড়াতে যাওয়া চার কিশোরকে আটকে টাকা আদায়ের অভিযোগ 
জাবিতে নিপীড়নবিরোধী মঞ্চের মানববন্ধন
জাবিতে হলের তালা ভেঙে কক্ষ দখলের চেষ্টা, শিক্ষার্থীকে মারধর
X
Fresh