• ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
logo

যেখানে জাত-পাত মিলেমিশে একাকার

শেখ হাসান বেলাল, কুষ্টিয়া

  ১২ মার্চ ২০১৭, ১৬:১৬

কী মুসলমান, কী হিন্দু, দেশি ও বিদেশি সব ধর্ম বর্ণের মানুষ এখন মিলেমিশে একাকার হয়েছে কুষ্টিয়ার লালন আখড়াবাড়িতে। এভাবেই বাউল সম্রাট ফকির লালন সব মানুষকে একই স্রোতধারায় আনতে আমাদের প্রেরণা জুগিয়েছেন। তার মতে, ‘মানুষ ভজলেই সোনার মানুষ হবি’ এ লক্ষ্যেই জাত পাত ভুলে লালন ভক্ত, অনুসারীরা ভীড় করেছেন লালন আখড়াবাড়ি কুষ্টিয়ার ছেউড়িয়ায়। 'আর কি হবে এমন জনম' লালনের আধ্যাত্মিক এ বাণীর শ্লোগানে দোলপূর্ণিমা উপলক্ষে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়ার লালন আখড়াবাড়ীতে চলছে তিন দিনব্যাপী লালন স্মরণোৎসব।

শিষ্য আর অনুসারীদের খাঁটি করে গড়ে তুলতে বাউল সম্রাট ফকির লালন জীবদ্দশায় ছেঁউড়িয়ার এ আখড়াবাড়িতে প্রতিবছর চৈত্রের দোলপূর্ণিমা রাতে বাউলদের নিয়ে সাধু সঙ্গ উৎসব করতেন। রাখাল, বাল্য, পূণ্য সেবাসহ নানা ধরনের আনুষ্ঠানিকতার মধ্যদিয়ে শিষ্যদের মধ্যে জ্ঞান দিতেন মহাগুরু লালন। ১২৯৭ বঙ্গাব্দের পহেলা কার্তিক তার মৃত্যুর পরও এ উৎসব চালিয়ে আসছেন তার অনুসারীরা। এবারো সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় লালন একাডেমির আয়োজনে দোলপূর্ণিমা উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠান চলছে।

শনিবার রাতে খুলনা বিভাগীয় কমিশনার (দায়িত্বপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ ফারুক হোসেন আনুষ্ঠানিকভাবে লালন স্বরণোৎসবের উদ্বোধন করেছেন। এরপরেই লাখ দর্শনার্থী আর লালন ভক্ত অনুসারীদের ভীড়ে প্রকম্মিত হয়ে উঠেছে ভবের হাট। এরই মধ্যে প্রধান গুরু ফকির লালনকে স্মরণ ও অবাধ্য মনকে শুদ্ধ করতে দেশ-বিদেশের হাজার হাজার লালন অনুসারী, ভক্ত অনুরাগী আর দর্শনার্থীরা এখন এ আখড়াবাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন। তারা বলছেন, লালনের মানব মুক্তির পথ অনুসরণ করলে জঙ্গীবাদ, সাম্প্রদায়িকতাসহ সব সমস্যা কমে আসবে। এজন্য লালনকেই এখন বেশি দরকার।

এদিকে, লালন স্মরণোৎসব উপলক্ষ্যে কালী নদীর তীরে মাঠে জমে উঠেছে বাউল মেলা। দর্শনার্থীরাও এখানে আত্মার টানে কোন এক সুখের সন্ধান করে থাকে।
বাংলাদেশের নাট্য অভিনেতা মিশু জানান, লালন মনের খোরাক, এজন্য সুযোগ পেলেই এখানে আসি। আর লালন হচ্ছে মানুষের মধ্যে থাকার কথা বলেছেন, মানুষে মানুষে মিলমিশের কথা বলেছেন, মানুষকে ভজন সাধন করতে বলেছেন, এখানে আসলেই মানুষকে সর্বোপরি নিজেকে চেনা যায়। এদিকে, আখড়াবাড়ির ভেতরে ও বাইরে লালন অনুসারী, ভক্তদের খন্ড খন্ড সাধু আস্তানায় এখন চলছে একের পর এক লালনরে আধ্যাত্মিক গান। তাতে মেতে উঠেছেন সবাই।

ঐতিহাসিক এ উৎসব শেষ হবে ১৩ মার্চ রাতে। কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এস এম মেহেদী হাসান আরটিভি অনলাইনকে বলেন, এখানে আসা দেশি বিদেশিদের নিরাপত্ত্বা ও অনুষ্ঠান নির্বিঘ্নে শেষ করতে সিসিটিভি, ওয়াচ টাওয়ার, চেকপোস্টসহ ইউনিফরমে ও সাদা পোশাকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা কয়েক স্তরে নিচ্ছিদ্র নিরাপত্তা বেষ্টনি তৈরী করেছে। সারা বিশ্বেই এখন চলছে লালন নিয়ে গবেষণা। বাড়ছে তার অনুসারী। তারা মনে করেন শান্তির জন্য একদিন সবাই লালনের দ্বারস্থ হবে।

এসজে

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিনোদন এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh