• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
logo

কলকাতার 'দোহার' ব্যান্ডের কালিকা প্রসাদ আর নেই

বিনোদন ডেস্ক, আরটিভি অনলাইন

  ০৭ মার্চ ২০১৭, ১৩:১৯

কলকাতার জনপ্রিয় সঙ্গীতশিল্পী ও সঙ্গীত পরিচালক কালিকা প্রসাদ ভট্টাচার্য আর নেই। মঙ্গলবার (৭ মার্চ) সকালে হুগলিতে সড়ক দুর্ঘটনা তার মৃত্যু হয়। এ সময় আহত হয়েছেন তার গানের দল 'দোহার'র অন্য সদস্যরাও।

জানা গেছে, বীরভূম থেকে অনুষ্ঠান শেষ করে ফিরছিলেন দোহার ব্যান্ডের সাত জন সদস্য। পুলিশ জানায়, দোহারের শিল্পীরা যে গাড়িতে করে যাচ্ছিলেন, তার টায়ার ফেটে যাওয়ায় এ দুর্ঘটনা ঘটেছে। প্রচন্ড গতিতে গাড়িটি হাইওয়ে ধরে যাচ্ছিল। কোনো মেকানিক্যাল ত্রুটির কারণেই এ দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাড়িটি একটি কালভার্টে ধাক্কা মারে। পরে গুরুতর আহত কালিকা প্রসাদসহ বাকি আরোহীদের উদ্ধার কাজ শুরু হয়। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাবার পরে কালিকা প্রসাদ ভট্টাচার্যকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক।দলের আরো তিন সদস্যের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

কালিকা দুই বাংলারই নন, সারা উপমহাদেশের লোকগানের শক্তিমান গবেষক। শাহ আব্দুল করিমের গানসহ বাংলাদেশের অসংখ্য লোকগানকে জিবাংলার সারেগামাপা এবং সেখানকার বিভিন্ন চ্যানেলের অনুষ্ঠানে তুলে ধরেছেন তিনি।

কালিকাপ্রসাদের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন কলকাতার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ৪৭ বছর বয়সী কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্যের মৃত্যুতে শোকতপ্ত শিল্পীমহলও।

কালিকাপ্রসাদ ভট্টাচার্য আসামের শিলচরের মানুষ। বড় হওয়া, সঙ্গীত শিক্ষা- সবই শিলচরে। কলকতায় ১৯৯৯ সালে আরও কয়েকজন বন্ধু গায়ক-যন্ত্রীর সঙ্গে তিনি তৈরি করেছিলেন 'দোহার' ব্যান্ড। শুধু গাওয়া নয়, লোকগানের গবেষণার দিকটিকেও সমানে চালিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন কালিকাপ্রসাদ। সেই সঙ্গে ছিল প্রয়োগের দিকটাও। প্রজন্ম পরম্পরায় লোকগানকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাটনটি যেন এই সময়ে তার হাতেই তুলে দিয়েছিল প্রবহমান সময়৷ বাংলা ব্যান্ড যখন বাংলা গানের ইতিহাসে নতুন পরিবর্তন আনছে, তখন লোকগানকে নতুন আঙ্গিকে তরুণ প্রজন্মের কাছে তুলে ধরে দোহার৷ যার প্রাণপুরুষ ছিলেন কালিকাপ্রসাদ। পরিবেশনা, আঙ্গিক নিয়ে সর্বদাই মেতে থাকতেন পরীক্ষা-নিরীক্ষায়৷ শুধু নাগরিক মঞ্চে তুলে ধরাই নয়, রিয়ালিটি শোয়ের মতো জায়গাতেও তিনি জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন লোকগানকে।

কালিকাপ্রসাদের মৃত্যুতে হতবাক সঙ্গীতশিল্পী হৈমন্তী শুক্লা। তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেছেন, 'লোকগানের বড় ক্ষতি হয়ে গেল।'

আনন্দবাজার পত্রিকাকে হৈমন্তী বলেন, হাসিখুশি ছেলেটা এ ভাবে চলে গেল? বিশ্বাস করতে পারছি না। এই তো মার্চের এক তারিখ দেখা হল ওর সঙ্গে। একই ফ্লাইটে ঢাকায় গেলাম আমরা। এত ভাল মানুষ ছিল। বড়দের শ্রদ্ধা ভক্তি করত। 'দোহার' দলটাকে নিয়ে লোকসঙ্গীতকে কোথায় নিয়ে গিয়েছিল!

হৈমন্তী বলেন, ওর যেটা আমার সবচেয়ে ভাল লাগত, তা হলো, ও গানে বিদেশী যন্ত্র ব্যবহার করত না। সব এখানকার যন্ত্র। নিজে ইম্প্রোভাইসও করেছিল। খুব ভালবাসতাম ওকে। ওর বউও খুব মিষ্টি মেয়ে। ভাল কাজ করার জন্য পারফেক্ট জেন্টলম্যান ছিল কালিকা।

হৈমন্তী শুক্লার মতে, আরও একটা বড় কাজ করে গেছেন কালিকা। নেপথ্যর অনেক শিল্পীকে তিনি তুলে এনেছেন।

'লোকগান নিয়ে অনেকের অনেক অভিযোগ ছিল। কিন্তু কালিকার পারফরম্যান্সে কোথাও অথেনটিসিটি নষ্ট হয়নি। লোকগানের বড় ক্ষতি হয়ে গেল' বলেন হৈমন্তী।

এপি/এইচএম/এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • বিনোদন এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh