• ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০
logo

রোহিঙ্গাদের পাশে দাঁড়ানোয় প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করে মার্কিন সিনেটরদের চিঠি

আরটিভি অনলাইন ডেস্ক

  ১৯ অক্টোবর ২০১৭, ০৯:৫৫

মিয়ানমারে সহিংসতার শিকার রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের কয়েকটি দলের ৯ জন প্রভাবশালী সিনেটর। শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব ও মানবিকতার প্রশংসা করে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর দফতরে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন তারা। মানবিক বিপর্যয় রোধে বাংলাদেশের সীমান্ত খুলে দিয়ে রোহিঙ্গাদের দেশে ঢুকতে দেওয়ায় শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করেছেন মার্কিন সিনেটররা।

‘প্রিয় প্রধানমন্ত্রী’ শেখ হাসিনা সম্বোধন করে তারা লিখেছেন, আপনার সরকার রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দান ও নিরাপত্তা দিয়েছে, যা চলমান সংকটে আশার আলো স্বরূপ। সিনেটররা লিখেছেন, ‘আপনার মানবিকতা, হৃদ্যতা ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বের জন্য আমরা আপনাকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। এ কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় বাংলাদেশ সরকারের পাশে থাকতে আমরা দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’

চিঠিতে সিনেটররা আরও লিখেছেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, বহুমুখী প্রতিবন্ধকতার পরও শুধু মানবিক দিক বিবেচনা করে সাহায্যের আশায় বিপদগ্রস্ত জনসাধারণের পাশে দাঁড়ানোর কারণে বিশ্বের সব রাষ্ট্রের মধ্যে বাংলাদেশ এখন রোল মডেলে পরিণত হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রীকে পাঠানো চিঠিতে মার্কিন সিনেটররা লিখেছেন, ‘আগে থেকে অবস্থান করা শরণার্থীদের নিয়ে সংকটে থাকার পরেও নতুন শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। দেশটির জন্য এ চ্যালেঞ্জ কতো গুরুত্বপূর্ণ তা আমরা বুঝি।’

সংকট নিরসনে জরুরি মানবিক কার্যক্রম চালানোর জন্য বেসরকারি সংস্থাগুলোকে সুযোগ দিতে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহ্বান জানান সিনেটররা। বেসরকারি সংস্থাগুলোকে কাজ শুরু করার অনুমতি দিতে এখন যে সময় লাগছে তা আরও বেগবান করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে চিঠিতে।

এ ব্যাপারে জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা (ইউএনএইচসিআর), আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বেসরকারি সংস্থাগুলোর প্রতি সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য আহ্বান জানিয়েছেন সিনেটররা। শরণার্থীদের থাকার জন্য মানসম্মত আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণ, তাদের জন্য পর্যাপ্ত খাদ্য সরবরাহ, সহিংসতার শিকার হয়ে পালিয়ে আসা মানুষদের মন থেকে ভয় দূর করতে মানসিক সমর্থন দেওয়া এবং আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে সাহায্য কার্যক্রমের সঠিক সমন্বয় নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ ও বেসরকারি সংস্থাগুলোকে পাশে রাখতে সরকারের আন্তরিক সমর্থন চাওয়া হয়েছে।

এদিকে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)-এর পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, শরণার্থীদের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কী ধরনের প্রভাব পড়বে তা এতো কম সময়ের মধ্যে বলা সম্ভব না।

আইএমএফ-এর প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের উপ-পরিচালক কেনেথ কাং বলেছেন, ‘অর্থনৈতিক প্রভাব নির্ণয়ের জন্য এটি খুবই অল্প সময়। আমরা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এ ব্যাপারে আলোচনা করছি এবং যদি কোনও সহযোগিতা প্রয়োজন হয় তাহলে তা দেওয়ার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি।’

এদিকে, জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ জানিয়েছে, অতিরিক্ত তহবিল না হলে এ মুহূর্তে কোনও ধরনের ত্রাণ কার্যক্রম চালানো সম্ভব নয়। ২৫ আগস্টের পর মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া পাঁচ লাখ ৮২ হাজার শরণার্থীর প্রায় ৬০ শতাংশই শিশু। এছাড়াও প্রতি সপ্তাহে হাজার হাজার শরণার্থী এখনও প্রবেশ করছে সেখানে।

শিশুদের জরুরি সহায়তা দেওয়ার জন্য ইউনিসেফ-এর মোট ৭৬ মিলিয়ন ডলারের চাহিদা থাকলেও গত ছয় মাসে মাত্র সাত শতাংশ অর্থ বরাদ্দ পেয়েছে বলেও জানিয়েছে সংস্থাটি। নিউ ইয়র্কে নিজেদের সদর দফতর থেকে এসব তথ্য জানিয়েছে জাতিসংঘের এ সংস্থা।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে পাঠানো ধন্যবাদ পত্রটির প্রথমেই স্বাক্ষর করেছেন সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্ক বিষয়ক কমিটির বিশেষ সদস্য সিনেটর বেন কারডিন ও সিনেটর কোরি গার্ডনার। এছাড়াও অন্যান্য সিনেটরদের মধ্যে ডিক ডারবিন, মার্কো রুবিও, জেন শাহিন, জেফ মার্কলি, টিম কাইনি, ক্রিস ক্রুনস এবং কোরি বুকারের স্বাক্ষর আছে চিঠিতে। এদের মধ্যে মার্কো রুবিও গতবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দল থেকে প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পাওয়ার জন্য বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে লড়েছিলেন এবং টিম কাইনি ডেমোক্রেটিক দল থেকে হিলারি ক্লিনটনের রানিংমেট হিসেবে ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ছিলেন।

গেলো ২৫ আগস্ট থেকে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রোহিঙ্গাদের উপর হামলা শুরুর পর পাঁচ লাখেরও বেশি মানুষ বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে।

এ/এমকে

মন্তব্য করুন

daraz
  • এডিটর'স চয়েস এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh