রেড জোনে ১২ আর্থিক প্রতিষ্ঠান
দেশের ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানের (এনবিএফআই) বেশিরভাগের পরিস্থিতি খুবই নাজুক। এ তালিকার ৩৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২৯টিই সমস্যাগ্রস্ত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। এর মধ্যে রেড জোনে ঢুকেছে ১২টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ ‘ত্রৈমাসিক আর্থিক ঝুঁকি মূল্যায়ন’ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। প্রতি তিন মাস পর এ রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়।
আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে তদারকি করতে তিনটি শ্রেণিতে বিভক্ত করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এর মধ্যে যারা ভালো করছে তাদের গ্রিন জোনে, যারা মাঝারি মানের তাদের ইয়েলো জোনে এবং যাদের অবস্থা খারাপ তাদের রেড জোনে রাখা হয়।
৩০ জুন ২০১৭ শেষে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা যায়, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর চাপ সামলানোর সক্ষমতা পরীক্ষা বা স্ট্রেস টেস্টিং রেটিংয়ে ১৭টি প্রতিষ্ঠান ইয়োলো জোনে অবস্থান করছে। অর্থাৎ এসব প্রতিষ্ঠানের আর্থিক অবস্থা মাঝামাঝি অবস্থানে। মাত্র চারটি প্রতিষ্ঠানের অবস্থা ভালো।আর ১২টি প্রতিষ্ঠানের অবস্থা একেবারেই নাজুক।
এর আগে বাংলাদেশ ব্যাংকের মার্চের প্রতিবেদনে রেড জোনে ছিল ১১টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান। আর ইয়োলো জোনে ছিল ১৮ প্রতিষ্ঠান। এছাড়া গ্রিন জোনে ছিল চারটি প্রতিষ্ঠান।
অর্থাৎ নতুন প্রতিবেদনে রেড জোনে থাকা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা একটি বেড়েছে। তবে এই প্রতিবেদন থেকে রেড জোন, ইয়োলো জোন ও গ্রিন জোনে থাকা প্রতিষ্ঠানগুলোর নাম জানা যায়নি।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রেড জোনে থাকার অর্থ হলো, এসব প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় বড় ধরনের ঝুঁকি নিচ্ছে। যা যেকোনো মুহূর্তে বড় ধরনের সংকট তৈরি করতে পারে। এসব কারণে এসব প্রতিষ্ঠানকে বিশেষ তদারক করার প্রয়োজন পড়েছে।
এ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর সালেহ উদ্দিন আহমেদ আরটিভি অনলাইনকে বলেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অধিকাংশই এখন খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলছে। এর পেছনে অন্যতম কারণ হচ্ছে, তাদের কাঠামোগত দুর্বলতা।বাজারে কাঠামোগতভাবে শক্তিশালী কিছু প্রতিষ্ঠানকে তাদের অবস্থান ধরে রাখতে দেখা যাচ্ছে। বাকিগুলো তাদের অবস্থান ধরে রাখতে পারছে না। কাঠামোগতভাবে শক্তিশালী না হওয়ায় তারা ঘুরে দাঁড়াতে পারছে না।
তিনি বলেন, এজন্য ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর পরিসর বাড়াতে হবে। লোকবল নিয়োগ দিতে হবে। পাশাপাশি বাংলাদেশ ব্যাংকেরও মনিটরিং বাড়াতে হবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক আবু আহমেদ বলেন, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে যদি ভালো ক্যাপিটাল দেয়া যায়, তবে সেগুলোর অবস্থা আবার ফিরতে পারে। তবে সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে- তাদেরকে ঋণ খেলাপির হাত থেকে রক্ষা করা।
এজন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের তদারকি বাড়ানোর পরামর্শ দেন তিনি।
এ অর্থনীতিবিদ বলেন, তারা কোন কোন খাতে ঋণ দিচ্ছে সে বিষয়টি নজরদারিতে রাখতে হবে। আরো একটা ব্যাপার হচ্ছে তাদের বাঁচিয়ে রাখতে পারে মার্জ হওয়া বা একীভূতকরণ।
এসআর/এমসি
মন্তব্য করুন