• ঢাকা রোববার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৩১ ভাদ্র ১৪৩১
logo
যৌক্তিক সময়ে নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তরের আহ্বান জামায়াত নেতার
‘তোমাকে দাফন করলাম, তুমি কোথা থেকে এলে?’
দাফনের ৯ দিন পর বাড়ি ফিরলেন নিখোঁজ তরুণী রোকসানা আক্তার (৩০)। এ নিয়ে পুরো এলাকাজুড়ে চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসীর প্রশ্ন, রোকসান তোমাকে দাফন করলাম, তুমি এখন এলে কোথায় থেকে?  বুধবার (২৬ জুন) ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার গুণবতী ইউনিয়নের রাজবল্লবপুর গ্রামে। রোকসানা আক্তার ওই গ্রামের মৃত তাজুল ইসলামের মেয়ে। অপরদিকে ফিরে আসা তরুণীকে এক নজর দেখতে উৎসুক মানুষ তার বাড়িতে ভিড় জমায়। শনিবার (২৯ জুন) রাতে জানা গেছে, মে মাসের শেষে রোকসানা আক্তার বাড়ি থেকে ছোট ভাই সালাহ উদ্দিনের চট্টগ্রামের ষোলশহরের বাসায় বেড়াতে যান। ১ জুন ভোরে কাউকে না জানিয়ে রোকসানা বাসা থেকে বের হয়ে যায়। এরপর দীর্ঘদিন আত্মীয়স্বজনসহ সব স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। গত ১৭ জুন ঈদুল আজহার দিন বিকেলে ফেনী শহরে ভাড়া বাসায় অবস্থানরত খালাতো বোন হাজেরা আক্তার ও খালাতো ভাই শাহজাহান খবর পান, ফেনী শহরের জিয়া মহিলা কলেজের সামনে ড্রেনের মধ্যে একজন নারীর লাশ পড়ে আছে। তারা সেখানে গিয়ে লাশের চেহারা রোকসানা আক্তারের চেহারার সঙ্গে মিল দেখে ভাই এবায়দুল হককে খবর পাঠান। এরই মধ্যে ফেনী শহর পুলিশ ফাঁড়ির পুলিশ লাশটির সুরতহাল শেষে উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়। রাতে এবায়দুল হক জিয়া মহিলা কলেজের ড্রেন এলাকায় পৌঁছে আশপাশের মানুষকে বোনের ছবি দেখিয়ে লাশটি একই রকম কিনা জিজ্ঞেস করলে সবাই ছবির সঙ্গে মিল রয়েছে বলে জানান। পরে এবায়দুল হকসহ আত্মীয়-স্বজনসহ ফেনী শহর পুলিশ ফাঁড়িতে গিয়ে লাশ উদ্ধারকারী উপপরিদর্শক প্রতুল দাসের সঙ্গে দেখা করে বোন রোকসানার ছবি দেখান। উপস্থিত পারস্পরিক আলোচনায় উপপরিদর্শক প্রতুল দাসকে তারা রোকসানার লাশ শনাক্ত করে। পরদিন ময়নাতদন্ত শেষে পুলিশ এবায়দুল হকের হাতে বোন রোকসানা আক্তারের লাশ হস্তান্তর করে। ওইদিন বাদ আসর গুণবতী ইউনিয়নের রাজবল্লবপুর মধ্যমপাড়ায় সামিশকরা দীঘির দক্ষিণ পাড়ে তার লাশ দাফন করা হয়।  লাশ দাফনের ৯ দিন পর গত ২৬ জুন বুধবার বিকেলে ঘটে বিপত্তি। হঠাৎ ‘দাফন করা’ রোকসানা সশরীরে বাড়িতে হাজির হলে আৎকে উঠেন সবাই। তাৎক্ষণিক ঘটনাটি জানাজানি হলে বাড়ির উঠানে আশেপাশের উৎসুক মানুষ তাকে একনজর দেখতে ভিড় জমায়। এ সময় নারী-পুরুষ তাকে একবাক্যে জিজ্ঞেস করে, রোকসান তোমাকে দাফন করলাম, তুমি কোথায় থেকে আসলে? তখন সে বলতে থাকে, কে বলছে আমি মারা গেছি? আমি ঢাকায় ঘুরতে গেছিলাম। শরীর খারাপ থাকায় কারো সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি। উল্টো এখন রোকসানাই ভাই এবায়দুল হক ও সাধারণ মানুষকে প্রশ্ন করছে, আমাকে ভেবে তোমরা কোন নারীকে দাফন করেছ, কি তার পরিচয়?  ফিরে আসা রোকসানা আক্তার বলেন, আমি চট্টগ্রামে ভাইয়ের বাসা থেকে কাউকে কিছু না বলে ঢাকায় চলে যাই। সেখানে গিয়ে আমি একটি চাকরি পেয়েছি। যেহেতু আমি বাড়ি থেকে কোনো কাপড় নিয়ে যাইনি, তাই কাপড় নিয়ে যাওয়ার জন্য বাড়িতে ফিরে আসি। ২৬ জুন বুধবার বাড়িতে এসে দরজা নক করলে আত্মীয়-স্বজনরা আমাকে দেখে হতবাক হয়েছেন। তখন আমি জানতে পারি, আমি নাকি মারা গেছি এবং আমার লাশও দাফন করা হয়ে গেছে। আমিতো জীবিত ফিরে আসলাম।   ফেনী শহর পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক প্রতুল দাস শনিবার সন্ধ্যায় বলেন, উদ্ধার করা লাশটি বিকৃত ছিল। এবায়দুল হক ও তার স্বজনরা উদ্ধারকৃত লাশটি রোকসানার বলে শনাক্ত করে আমার কাছ থেকে নিয়ে যায়। এখন যেহেতু তাদের বোন সশরীরে বাড়িতে উপস্থিত হয়েছে, তাই আমরা বিষয়টি নতুন করে তদন্ত করব। চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ত্রিনাথ সাহা শনিবার সন্ধ্যায় বলেন, তরুণী নিখোঁজ, উদ্ধার, দাফন ও আবার ফিরে আসার বিষয়ে কেউ আমাকে অবগত করেনি। খবর নিয়ে দেখব-আসলে কি ঘটেছে।
কুমিল্লায় সম্পত্তির বিরোধে ভাইকে কুপিয়ে হত্যা
দাঁড়িয়ে থাকা গাড়ির পেছনে কাভার্ডভ্যানের ধাক্কা, নিহত ২
যুবলীগ নেতা হত্যা : ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত ২ আসামি গ্রেপ্তার
সাকিবকে এক নজর দেখতে গিয়ে ঝলসে গেল স্কুলছাত্র
চৌদ্দগ্রামে কাভার্ডভ্যানের পেছনে বাসের ধাক্কা, নারী নিহত
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে কাভার্ডভ্যানের পেছনে একটি যাত্রীবাহী বাস ধাক্কা দিলে এক নারী নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। আহতদের জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) রাতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চৌদ্দগ্রামে বঙ্গবন্ধু স্কয়ারের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন চৌদ্দগ্রাম হাইওয়ে থানার ওসি এসএম লোকমান হোসাইন। তিনি বলেন, খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। এখন পর্যন্ত একজন নারী নিহত হয়েছেন। ১৫ জনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে আহতদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি। পরবর্তীতে বিস্তারিত জানানো হবে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকামুখী মায়ের দোয়া পরিবহনের যাত্রীবাহী একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি কাভার্ডভ্যানের পেছনে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলে এক নারী মারা যান। আহত হন অন্তত ১৫ জন। চৌদ্দগ্রাম ফায়ার সার্ভিস ও হাইওয়ে পুলিশ আহতদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেছে। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ১০ জনকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের সহকারী মেডিকেল অফিসার নুর উদ্দিন জানান, ১৫ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাদেরকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শিশুকে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ গুম, যুবকের মৃত্যুদণ্ড
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে তৃতীয় শ্রেণির এক ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ ডাকাতিয়া নদীতে ফেলার দায়ে মোহাম্মদ আলী ওরফে বাপ্পী (২৬) নামের এক যুবককে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) কুমিল্লার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১–এর বিচারক (জেলা ও দায়রা জজ) মোহাম্মদ আবদুল্লাহ আল মামুন এ রায় দেন। রায় ঘোষণার সময় আদালতের কাঠগড়ায় ছিলেন আসামি মোহাম্মদ আলী। মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৯ সালের ১৫ মার্চ বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ওই শিশুকে তেঁতুল খাওয়ানোর কথা বলে মোহাম্মদ আলী টিনের ঘরে নিয়ে যান। এরপর তিনি শিশুটিকে ধর্ষণ করে হত্যার পর লাশ কাঁথা দিয়ে মুড়িয়ে ডাকাতিয়া নদীতে ফেলে দেন। ঘটনার পর নিজেই অটোরিকশা ভাড়া করে শিশুটির নিখোঁজের সংবাদ মাইকিং করেন। একপর্যায়ে তার আচরণে এলাকাবাসীর সন্দেহ হয়। পরে তাকে পিটুনি দিলে শিশুটিকে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ গুমের কথা স্বীকার করেন। পরে শিশুটির বাবা পরদিন চৌদ্দগ্রাম থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করেন। মামলায় মোহাম্মদ আলীকে একমাত্র আসামি করা হয়। ২০১৯ সালের ২ জুন মোহাম্মদ আলী ও একই গ্রামের মো. মিজানের (২২) নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চৌদ্দগ্রাম থানার উপপরিদর্শক ইকবাল মনির। ২০২০ সালের ৮ মার্চ এই মামলায় অভিযোগ গঠন করা হয়। এরপর মামলায় ১০ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) আদালত মোহাম্মদ আলীকে মৃত্যুদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেন। অপর আসামি মো. মিজানকে বেকসুর খালাস দেন বিচারক। শিশুটির বাবা বলেন, এ রায়ে আমি খুশি। দ্রুত ফাঁসির আদেশ কার্যকর দেখতে চাই। আমার অবুঝ শিশুর মুখে ও গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ধর্ষণ করা হয়। এরপর মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য ঘাড় মটকিয়ে দেওয়া হয়। পরে কাঁথা মুড়িয়ে লাশ বাড়ির পাশের ডাকাতিয়া নদীতে ভাসিয়ে দেয় মোহাম্মদ আলী। একসঙ্গে এতগুলো অপরাধ করা ব্যক্তির ফাঁসি দ্রুত হলে আমি শান্তি পাব। কুমিল্লা আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের বিশেষ কৌঁসুলি প্রদীপ কুমার দত্ত গণমাধ্যমকে বলেন, রায়ের দ্রুত কার্যকর চান তারা। অবুঝ শিশুর ওপর নির্মম নির্যাতন করেছেন মোহাম্মদ আলী। এই রায় ন্যায়বিচারের দৃষ্টান্ত। অন্যদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, রায়ে বিবাদী পক্ষ খুবই অসন্তুষ্ট। রায়ের কপি পাওয়ার পর তারা আপিল করবেন।