কুয়াকাটা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ
উপকূলের বাতাসে দুলছে সোনালী ধানের শীষ

‘ধন ধান্য পুষ্প ভরা, আমাদের এই বসুন্ধরা’-কথাটির সার্থকতার খোঁজ মিলেছে উপকূলের মাঠে। দেশের দক্ষিণ সমুদ্র উপকূলে বাতাসে দুলছে সোনালী ধানের শীষ। দোল খাচ্ছে সোনালী-সবুজের আভায় বোরো ধান। পটুয়াখালীর উপকূলীয় এলাকার কৃষকরা চলতি মৌসুমে নানা প্রতিকূলতার মধ্যে বোরো পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। বোরো ক্ষেতে পানি দেয়া, সার-কীটনাশক প্রয়োগ এবং পানি নিষ্কাসনের ব্যবস্থাসহ বোরো পরিচর্যায় ব্যস্ততার শেষ নেই। হাড়ভাঙ্গা কঠোর পরিশ্রমের ফলে জমির ধান নিবির পরিচর্যায় ধানের বাইল খুবই ভাল ছাড়ছে। লক্ষ্য অর্জনের স্বপ্ন দেখছেন এ অঞ্চলের হাজারো কৃষক।
সরেজমিনে কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, স্বপ্ন পূরণের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়েও ন্যায্য মূল্য পাওয়া নিয়ে শঙ্কিত কৃষকরা এখন পোকার আক্রমণে দিশেহারা। পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার মাঠে পামড়ি, মাজরা, শিশ কাটা, কারেন্ট, সাদা পোকা, কালো পোকা বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি করেছে। কলাপাড়া উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, কলাপাড়া উপজেলার ৪৯ হাজার ২১০ হেক্টর জমির মধ্যে কৃষি জমি ৪০ হাজার ৯৪০ হেক্টর। এ বছর ৪ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো ধান আবাদ হয়েছে। চলতি বোরো মৌসুমে ধানের বাম্পার ফলন ও ভালো দাম পাওয়ার আশা চাষিদের।
দেখা গেছে, ধুসর বিলের ফাঁকে ফাঁকে সবুজের বিপ্লব ঘটেছে। রোপিত ধান গাছের বুক চিরে বেরিয়েছে কৃষকের স্বপ্ন। প্রত্যন্ত গ্রামের কৃষকরা ক্ষেতের ধান কাটার অপেক্ষায়। বাতাসে সোনালী ধানের শীষ দুলছে। ক্ষেতের মধ্যে পোতা বাঁশের কঞ্চি ও গাছের ডালের উপর ফিঙ্গে, শালিক, দোয়েলসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি বসে আছে। সুযোগ বুঝে ধানক্ষেতের ক্ষতিকারক পোকা পাখিরা খেয়ে ফেলছে।
কৃষি বিভাগ বলছে, বোরো আবাদে কৃষকদের আদর্শ চারা উৎপাদন ও জমিতে পারচিংসহ (ডাল পোতা) সবধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা দিচ্ছেন তারা। তবে সার ও কীটনাশকের দাম কমানোর দাবি চাষিদের। কোনো প্রকার প্রাকৃতিক বিপর্যয় না ঘটলে বোরো ধানের বাম্পার ফলনও আশা করছেন চাষিরা। কৃষকের দাবি যেসব খালগুলো ভরাট ও দখল হয়ে গেছে তা উদ্ধার করে খনন করলে পানির সমস্যার সমাধান হবে।
লতাচাপলী ইউনিয়নে আছালতপাড়া গ্রামের কৃষক আ. সালাম প্যাদা বলেন, আমন ধানের ভালো দাম পেয়েছি। সে জন্য বোরো ধান চাষ করছি। আশা করি বাজারে ধানের ভালো দাম পাওয়া যাবে। কিন্তু কৃষি অফিস থেকে কৃষকের সরকারী বরাদ্দকৃত সার, বীজ প্রত্যক্ষ কৃষকেরা পায় না। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় যারা আছে তাদের মাঝে বিতরণ করা হয়। জলকপাট নিয়ন্ত্রণ ব্যাপারে পানি নিয়ে রয়েছে বড় সমস্যা।
এ ব্যাপারে কলাপাড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল মান্নান বলেন, আমন ধানের ভালো দাম পেয়ে কৃষকরা এ বছর তুলনামূলক ব্যাপকভাবে বোরো চাষ করেছে। এখন যদি বৃষ্টি হতো তা হলে কৃষকের পানি নিয়ে যে সমস্যা তা দুর হতো। বোরো ধানের গাছের অবস্থা খুবই ভাল আছে। আমরা কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি।
এসআর/