• ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১
logo

কুড়িগ্রামে বন্যায় দুই লাখ মানুষ পানিবন্দি

কুড়িগ্রাম (উত্তর) প্রতিনিধি, আরটিভি নিউজ

  ১৩ জুলাই ২০২০, ১৫:২৮
Kurigram people flooded
ছবি সংগৃহীত

কুড়িগ্রামের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। হু হু করে বাড়ছে ধরলা, ব্রহ্মপুত্র,দুধকুমার, গংগাধরসহ সবকটি নদ- নদীর পানি। বন্যার পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। ইতিমধ্যে পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ৯ উপজেলার প্রায় দুই লাখ মানুষ। ফলে দ্বিতীয় দফা বন্যার কবলে পরেছে এই জনপদের মানুষ।

পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, ১৩ জুন সকালে ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার ৮২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এদিকে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৫ সেন্টিমিটার এবং নুনখাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ৪৭ সেন্টমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এছাড়া অন্যান্য নদনদীর পানি সমান তালে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

ব্রহ্মপুত্র, দুধকুমার, গংগাধরের পানি বৃদ্ধি পেয়ে নাগেশ্বরী উপজেলার অধিকাংশ ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। চরাঞ্চলের বাড়ি-ঘরে পানি উঠেছে। এসব মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে গবাদি পশু নিয়ে উচু স্থানে আশ্রয় নিচ্ছে। কেদার ইউনিয়নের চর বিষ্ণুপুর এলাকার শাহিন মিয়া জানায়, তিনদিন থেকে তার বাড়িতে পানি উঠেছে, তারা এখন উচু রাস্তায় আশ্রয় নিয়েছে। কচাকাটা ইউনিয়নের তরিরহাট এলাকার সাবেক ইউপি সদস্য মমিন মিয়া জানান, চরাঞ্চলের অনেক বাড়ি থেকে প্রথম দফার বন্যার পানি নামতে না নামতে দ্বিতীয় দফার বন্যার পানি আবা ঘরবাড়ি ডুবিয়ে দিয়েছে। মানুষের কষ্ট দ্বিগুণ হয়েছে। বল্লভের খাষ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আকমাল হোসেন জানান, তার ইউনিয়নের বেশিরভাগ এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। মানুষ তারে শেষসম্বল নিয়ে স্কুল এবং উঁচু স্থানে আশ্রয় নিচ্ছে।

সদরের যাত্রাপুর ইউনিয়নের নিচু চরগুলো আবারো তলিয়ে যাচ্ছে। চর পারবতীপুরের ছকমল ও তহিজল জানান, দুই দিন হয় বাড়ি ফিরেছি। বাড়িঘর ঠিকঠাক করে একটু স্বস্থি নেব তারও উপায় নেই। আবারো পানি বাড়ন্ত। পরিবার নিয়ে অন্যত্র চলে যেতে হচ্ছে। সদরের পৌর এলাকার চর ভেলাকোপার মহিতুল, আর্জিনা ও মিয়াজন বিবি জানান, কেবল মাত্র ঘরদুয়ার ঠিকঠাক করবাইছি তাতে রাত থাকি আঙিনার মধ্যে পানি আসি গেইছে। এমন দুর্ভোগ ছড়িয়ে পরছে ধরলা, তিস্তা ও ব্রহ্মপূত্র নদনদী তীরবর্তী ও চরাঞ্চল এলাকায়। টানা ১২দিনের প্রথম দফা বন্যার রেশ কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই দ্বিতীয় দফা বন্যায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে নিম্নআয়ের মানুষ।

যে সকল কৃষক জেগে ওঠা পাট কাটার প্রস্ততি নিচ্ছিলেন তারাও পরেছে বিপাকে। সবজি ক্ষেতেই ধ্বংস হয়ে গেছে। পানি নেমে গেলে যারা দ্বিতীয় বার আমন বীজতলা করার পরিকল্পনা করছিলেন তারাও হতাশায় ভুগছেন।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আরও দুটি ভারি বৃষ্টিপাত বয়ে যাবে এ অঞ্চলের ওপর দিয়ে। আরও কয়েকদিন পানি বিপদসীমা অতিক্রম করবে। এতে করে দ্বিতীয় দফা বন্যা ২৫ জুলাই পর্যন্ত স্থায়ী হবার আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ রেজাউল করিম জানান,জেলার বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলা নিয়ে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় বন, পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব জিয়াউল হাসান উপস্থিত ছিলেন। ইতিমধ্যে আমরা বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছি। সভায় জেলা ও সকল উপজেলার কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়ে প্রস্তুত করে রেখেছি। বন্যায় মোকাবেলা যখন যা প্রয়োজন দেখা দিবে তাই করা হবে।

জেবি

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
আরও পড়ুন
ভারতের রাষ্ট্রপতির কাছ থেকে পদ্মশ্রী নিলেন রেজওয়ানা চৌধুরী বন্যা  
তীব্র তাপদাহে খেটে খাওয়া মানুষের পাশে ডিএমপি
‘আমাকে একটা ভোট কে দিলো সেই মানুষটাকেই খুঁজছি’
‘মানুষ এখন ডাল-ভাত নয়, মাছ-মাংস নিয়ে চিন্তা করে’
X
Fresh