এবার আশুগঞ্জ থানার ওসি’র বিরুদ্ধে আ.লীগ নেতাদের অভিযোগ

এবার আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ মাহমুদের বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পুলিশ মহাপরিদর্শকের কাছে অভিযোগ দিয়েছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা। এর আগে ওসির অপসারণ চেয়ে উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানরা সংবাদ সম্মেলন করেন।

অভিযোগে বলা হয়, জাবেদ মাহমুদ কয়েক মাস আগে এই থানায় যোগদান করার পর থেকে এখানকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। ওসি দুষ্টের দমন এবং শিষ্টের লালনের পরিবর্তে দুষ্টের লালন ও শিষ্টের দমননীতিতে তার কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। বিরোধী দলের নেতাকর্মী এবং অপরাধ জগতের লোকজন তার সাথী।

বিভিন্ন মামলার আসামিরা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও তাদের গ্রেপ্তারে তার কোনো আগ্রহ নেই। আশুগঞ্জের বিভিন্নস্থানে জুয়া খেলা আশঙ্কাজনক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং বাজারের পুড়াগুদাম এলাকায় জুয়ার আসরে মারামারিতে খুনের ঘটনাও ঘটেছে।

আওয়ামী লীগ নেতারা অভিযোগে আরও বলেন, তার যোগদানের পর আশুগঞ্জ মাদক ব্যবসা ও সেবনের স্বর্গ রাজ্যে পরিণত হয়েছে। থানার তিনশো গজ দূরত্বের মধ্যে রেলগেইট, এলএসডি গোডাউনসহ বিওসি ঘাট, হাসপাতাল সড়কের পেছনে, পুড়াগুদাম, বাশঁগলি, ফেরিঘাট, খড়িয়ালা, আড়াইসিধা, লালপুর বাজারের অর্ধশতাধিক স্থানে মাদক বেচা-কেনা চলছে।

এ কারণে উপজেলায় চুরি, ডাকাতি ও ছিনতাই বৃদ্ধি পাওয়া পাশাপাশি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। এছাড়া সারা দেশে মাদক পাচারের ট্রানজিট হিসেবেও ব্যবহার করা হচ্ছে আশুগঞ্জ। জনপ্রতিনিধিসহ সবার সঙ্গে ওসি দুর্ব্যবহার করেন বলেও অভিযোগ করেন তারা।

ওসির বিরুদ্ধে দেয়া অভিযোগে স্বাক্ষর করেন জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য ফিরোজ মিয়া, উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক আবু নাছের আহমেদ, যুবলীগের যুগ্ম-আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মোশাররফ হোসেন, উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগ সভাপতি রেহেনা মকবুল, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি মো. শাহিন সিকদার, সাধারণ সম্পাদক মো. সালাহ উদ্দিন, উপজেলা কৃষক লীগ সভাপতি মো. নজরুল ইসলাম বকুল, সাধারণ সম্পাদক মো. শাহআলম, শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু মুসা, ছাত্রলীগের আহ্বায়ক রিফাত সিকদার, যুগ্ম-আহ্বায়ক মো. সিরাজুস সালেকিন মিম, রফিকুল ইসলাম ও হান্নান সিকদার।

এছাড়াও জনপ্রতিনিধিদের মধ্যে জেলা পরিষদ সদস্য মোসাম্মৎ স্বপ্না বেগম, চরচারতলা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জিয়াউদ্দিন খন্দকার, দুর্গাপুর ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউল করিম খান সাজু, তালশহর ইউপি চেয়ারম্যান আবু শ্যামা, আড়াইসিধা ইউপি চেয়ারম্যান মো. সেলিম মিয়া, তারুয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. ইদ্রিস হাসান ও শরীফপুরের চেয়ারম্যান সাইফউদ্দিন চৌধুরী, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আমির হোসেন।

এর আগে ৪ জুলাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবে ওসি’র অপসারণ চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন সাতটি ইউপি চেয়ারম্যান। শনিবার আশুগঞ্জ প্রেসক্লাবে ওসি’র বিরুদ্ধে আরেকটি সংবাদ সম্মেলন করেন আশুগঞ্জ সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. সালাহ উদ্দিন। ফেসবুকে মানহানিকর লেখালেখি ও সরাসরি তাকে হুমকি দেয়ার ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে তিনি থানায় একাধিকবার অভিযোগ করলেও ওসি কোনো ব্যবস্থা নেননি বলে সালাহ উদ্দিন অভিযোগ করেন।

এজে