• ঢাকা মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪৩০
logo

খুনের ভয় দেখিয়ে কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ

স্টাফ রিপোর্টার, ঢাকা দক্ষিণ

  ০৫ জুলাই ২০২০, ২১:৩৩
Alleged rape a teenager fear murder
কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় গ্রামের মানুষজন জড়ো করে বিচার বসানো হয়। ছবি: আরটিভি নিউজ

ঢাকার দোহার উপজেলায় হত্যার ভয় দেখিয়ে ১৩ বছর বয়সী এক কিশোরীকে একাধিকবার ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় কয়েকজনের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ধর্ষণে সহযোগিতা করার অভিযোগে এক নারীকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

দোহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সাজ্জাদ হোসেন জানান, শনিবার (৪ জুলাই) রাতে ভুক্তভোগী ওই কিশোরীর বাবা বাদী হয়ে থানায় পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করেছেন। প্রথম মামলায় একজন, দ্বিতীয় মামলায় দুইজন ও তৃতীয় মামলায় একজনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার পরপরই উপজেলার বিলাসপুর ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামে অভিযান চালিয়ে ধর্ষণে সহযোগিতা করার অপরাধে বাড়িওয়ালা সোমা আক্তার (৩০) নামে এক নারীকে গ্রেপ্তার করে রোববার আদালতে পাঠানো হয়েছে বলে জানান ওসি সাজ্জাদ হোসেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী ওই কিশোরীর বাবা একজন রিকশা চালক। তাদের গ্রামের বাড়ি পটুয়াখালী জেলায়। প্রায় চার মাস আগে স্ত্রী ও ১৩ বছর বয়সী কিশোরী মেয়েকে নিয়ে বিলাসপুর গ্রামের সোমাদের বাড়িতে ভাড়া আসেন তারা। এরপর একই গ্রামের সেলিম চোকদারের মেয়ের সঙ্গে ওই কিশোরীর সখ্যতা গড়ে উঠে। সেই সুবাদে মাঝে মধ্যেই রাতে তার সঙ্গে রাতে ঘুমাতে যেতেন ওই কিশোরী।

ভুক্তভোগী কিশোরী সাংবাদিকদের জানান, প্রায় আড়াই মাস আগে এক রাতে সেলিম চোকদারের মেয়ের সঙ্গে ঘুমিয়ে ছিলো সে। ঘুমন্ত অবস্থায় হঠাৎ করে সেলিম চোকদার এসে আমার মুখ চেপে ধরে আমাকে বাড়ির পার্শ্ববর্তী একটি পরিত্যক্ত জায়গায় নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের এ ঘটনা কাউকে বললে মেরে ফেলার হুমকিসহ বিভিন্ন ভয়ভীতি দেখান সেলিম চোকদার। এতেই ক্ষান্ত না হয়ে পরবর্তীতে সেলিম তার প্রতিবেশী বন্ধু কিয়ামউদ্দিন হাওলাদার ও ইদ্রিস মোল্লাকে নিয়ে আমাকে ভয় দেখিয়ে আরও কয়েকবার ধর্ষণ করেন। আর এ কাজে সহযোগিতা করেন বাড়িওয়ালা সোমা।

ওই কিশোরী আরও জানান, ধর্ষণের সময় ধর্ষকরা এ ঘটনা কাউকে না জানাতে ধারালো অস্ত্র দেখিয়ে আমাকে হত্যার ভয় দেখাতো। এছাড়াও স্থানীয় মুদি দোকানী তারা মিয়া আমার বাবার কাছে টাকা পাবে এ কথা বলে সুযোগ বুঝে আমাকে দোকানে ডেকে নিয়ে আমার শরীরের লজ্জা স্থানে হাত দিতেন।

সম্প্রতি এ ঘটনা নাটকীয়ভাবে এলাকায় জানাজানি হয় একটি গ্রাম্য শালিসের মাধ্যমে। গত শুক্রবার বিলাসপুর ইউনিয়নের আলম বাজার এলাকায় রাধানগর গ্রামসহ আশপাশের অন্তত তিনটি গ্রামের কয়েকশ লোকের সমাবেশ ঘটিয়ে ওই কিশোরীর উপস্থিতিতে ধর্ষণের ঘটনা বিচারের মাধ্যমে সমঝোতার চেষ্টা করা হয়। তবে এ ঘটনায় অভিযুক্তরা শালিসে উপস্থিত না হওয়ায় এবং ঘটনাটি আনুমানিক আড়াই মাস আগে হওয়ায় সমঝোতা হয়নি। এ সময় বিচারের দায়িত্বে থাকা সমাজপতিরা দোহার থানা পুলিশকে বিষয়টি অবগত করেন।

পরে এ খবর চারদিকে ছড়িয়ে পড়লে অভিযুক্তরা গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যায়। পরে সাংবাদিক ও নারী সমাজকর্মীদের হস্তক্ষেপে বিষয়টি আমলে নিয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে পৃথক তিনটি মামলা নেন দোহার থানা পুলিশ।

মামলার বাদি ওই কিশোরীর বাবা মো. সুমন সাংবাদিকদের জানান, অভিযুক্তরা তাকে প্রথমে টাকা দিয়ে ঘটনাটি মীমাংসার চেষ্টা করে। এতে ব্যর্থ হয়ে তাকে মেরে ফেলাসহ বিভিন্ন মাধ্যমে হুমকি দিয়ে আসছেন। তিনি অপরাধীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের মাধ্যমে সুষ্ঠু বিচার দাবি করেন।

এ বিষয়ে দোহার থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সাজ্জাদ হোসেন বলেন, এ ঘটনায় ধর্ষণের কাজে সহযোগিতা করার দায়ে বাড়িওয়ালা এক নারীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর থেকেই ধর্ষকরা পলাতক রয়েছেন। তাদের গ্রেপ্তারে পুলিশের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

এজে

মন্তব্য করুন

daraz
  • দেশজুড়ে এর পাঠক প্রিয়
X
Fresh